সুদীপ্তর চিঠি ধরেই তদন্তে এগোতে চায় সিবিআিই, কী ছিল সেই চিঠিতে?
সারদাকাণ্ডের তদন্তের শুরুতেই সিবিআইএকে দেওয়া সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠিকে হাতিয়ার করেই এগোতে চাইছে সিবিআই। সারদাকাণ্ডের তদন্তে সারদায় আমানত করা অর্থের হদিস করা ছাড়াও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রেরও তদন্ত করবে সিবিআই। সেই ষড়ন্ত্রের পিছনে কারা রয়েছে সেই রহস্যের মূল সূত্র সুদীপ্ত সেনের সিবিআইকে লেখা চিঠিতেই লুকিয়ে আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
সারদাকাণ্ডের তদন্তের শুরুতেই সিবিআইএকে দেওয়া সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠিকে হাতিয়ার করেই এগোতে চাইছে সিবিআই। সারদাকাণ্ডের তদন্তে সারদায় আমানত করা অর্থের হদিস করা ছাড়াও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রেরও তদন্ত করবে সিবিআই। সেই ষড়ন্ত্রের পিছনে কারা রয়েছে সেই রহস্যের মূল সূত্র সুদীপ্ত সেনের সিবিআইকে লেখা চিঠিতেই লুকিয়ে আছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
গতবছর ২৩ এপ্রিল কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে গ্রেফতার হওয়ার আগেই কলকাতায় সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখায় সুদীপ্ত সেনের সই করা একটি চিঠি জমা পড়েছিল। আঠারো পাতার ওই চিঠিতে সুদীপ্ত সেন জানিয়েছিলেন কীভাবে এবং কাদের জন্য তার সারদা সাম্রাজ্য ডুবতে বসেছে এবং অভিযোগ করেছিলেন, একশ্রেণির মানুষ জনগনের আমানত করা টাকা নয়ছয় করেছে। সেই চিঠিতেই তিনি জানিয়েছিলেন, কীভাবে কার হাত ধরে তাঁর মানি মার্কেটিংয়ের ব্যবসায় আসা এবং কীভাবে তিনি সংবাদ মাধ্যমের ব্যবসায় আসেন।
এই চিঠিতে শাসকদল তৃণমূলের দুই সাংসদ সৃঞ্জয় বসু এবং কুণাল ঘোষ ছাড়াও অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী মাতঙ্গ সিং এবং তাঁর স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিং এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম তিনি করে গিয়েছিলেন। চিঠির শেষে একটি সংযোজনীতে বেশ কিছু ব্যক্তির নামের একটি তালিকা তিনি দিয়েছিলেন। অভিযোগ, এই ব্যক্তিরাই সারদা সাম্রাজ্যের পতন এবং জনগনের অর্থ নয়ছয় করার পিছনে রয়েছে। এই তালিকাভুক্ত মানুষরাই সারদার টাকায় লাভবান হয়েছে। এই সংযোজনী তালিকা নিয়েই দানা বেধেছে রহস্য। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে,কেউ বা কারা বিশেষ উদ্দেশে সংযোজিত নামের তালিকাটি পরিবর্তন করে দেয় মূল চিঠি থেকে। কারণ পরবর্তীকালে এনফোর্সমেন্ট ড়িরেক্টরেটের তদন্তে এই তালিকাভুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও আরও কিছু ব্যক্তির নাম সারদার অর্থে লাভবানদের তালিকায় উঠে এসেছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে সুদীপ্ত সেনের এই চিঠিকে ভিত্তি করে তারাও তদন্ত করেছেন। কিন্তু এই তালিকার পিছনে যে রহস্য রয়েছে তার কোনও কিনারা এখনও হয়নি। সিবিআইয়ের সন্দেহ, তালিকার পিছনে থাকা রহস্যের কিনারা করলেই বেরিয়ে আসবে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের আসল রূপ। জানা যাবে সেই ষড়যন্ত্রের পিছনে মূল চক্রী কারা। তদন্তকারীদের সন্দেহ,
সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে উল্লিখিত সারদাগোষ্ঠীর কর্মী এবং এজেন্ট ছাড়াও বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ছিল যা সংযোজনীর তালিকা থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। সোমবার, সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের প্রধান রাজীব সিং বিধাননগর পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের আলোচনাতেও এই চিঠি প্রসঙ্গ উঠে আসে। তাই এখন সারদার তদন্তে নেমে সুদীপ্ত সেনের এই চিঠিকেই মূল সূত্র করে এগোতে চাইছেন সিবিআইএয়ের তদন্তকারীরা।