আক্রান্ত কর্মীদের পাশে না দাঁড়িয়ে কলকাতায় সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতায় 'বিপ্লবী' সিপিএম
কলকাতায় পুলিসের নিরাপত্তার বেষ্টনীতে শনিবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতায় মিছিল করলেন নেতারা।
মৌমিতা চক্রবর্তী
সংগঠনের একেই হাড়ির হাল! জেলায় জেলায় বাম ছেড়ে রামে যোগদানের হিড়িক বাড়ছে। এমন ভাঙা সংগঠনেও আমডাঙায় শাসক দল তৃণমূলকে জোর লড়াই ছুড়ে দিয়েছেন নিচুতলার সিপিএম কর্মীরা। যে লড়াই আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে রাজ্যের অন্যান্য জেলার বাম কর্মীদেরও। অথচ সাহসী সহযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়ানোর 'সাহস' কুলোচ্ছে না আলিমুদ্দিনের হেভিওয়েট নেতাদের।
কলকাতায় পুলিসের নিরাপত্তার বেষ্টনীতে শনিবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতায় মিছিল করলেন নেতারা। অনেকেরই প্রশ্ন, মুক্ত হাওয়ার যুগে আইফোন প্রজন্মের কাছে নয়ের দশকের 'সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক' কতটা প্রভাব ফেলবে? মুঠোফোনের ফোর জি জমানাতেও সেই তিমিরেই কি পড়ে সিপিএমের 'পক্ককেশী' নেতারা? কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে কেন এত ঢিলেমি? অপার বিস্ময় সিপিএম কর্মীদেরই।
আমডাঙায় মৃত্যু হয়েছে সিপিএম কর্মীর। শুরু হয়েছে ধরপাকড় শুরু। অথচ দেখা নেই সিপিএমের কোনও শীর্ষ নেতার। সিপিএম সূত্রে খবর, বাম পরিষদীয় নেতারা আমডাঙায় যাচ্ছেন সোমবার। সিপিএম নেতারা বলছেন, আমডাডাঙায় রীতিমতো শক্ত জায়গায় ছিলেন তাঁরা। জেলা নেতৃত্বের দাবি, মরিচা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধীরা এক জোট হয়ে বোর্ড গঠন করতে পারতেন। আর তারাবেড়িয়া ও বোদাইয়ে অনায়াসেই বোর্ড গঠন 'বাঁয়ে হাত কা খেল' ছিল। সেখানে শাসক দলের বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াই দিয়েছে সিপিএম। দুপক্ষের সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তৃণমুলের দুজন এবং সিপিএমের একজন কর্মীর।
এই প্রেক্ষাপটে সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা যখন প্রায় অনিশ্চয়তা, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, তখন আমডাঙায় দেখা যায়নি সিপিএমের তাবড় নেতাদের। একমাত্র ঢুঁ মেরে এসেছেন সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য পলাশ দাস। তাও আবার কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে। কিন্তু সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা কোথায় গেলেন? প্রশ্ন তুলছেন নিচুতলার নেতা-কর্মীরা।
কে যাবেন? কারা যাবেন? সে বিষয় সম্পর্কে এখনও যথাযথ তথ্য নেই সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের কাছে। আর কবে সিদ্ধান্ত নেবেন? আর কবেই বা কর্মীদের পাশে দাঁড়াবেন? প্রশ্ন তুলছেন কর্মীরাই। প্রশ্ন উঠছে, এখনও ঢোক গিলতে হচ্ছে? এখনও কথাবার্তার স্তরে আছে?
কর্মীরাই বলছেন, যুগ বদলালেও সিপিএমের বদল হল না। নয়ের দশকে লাইসেন্স রাজে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা তাও মানা যেত। এখন নেটফ্লিক্সের যুগে সাম্রাজ্যবাদ খায় না মাথায় দেয়, তাই তো কেউ জানে না। তার উপরে মরা বাজারে কর্মীরা যখন ঝুঁকি নিয়ে সংগঠন করছেন, তখন এসবের কোনও মানে আছে। সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করলে কি ঘরছাড়ারা ঘরে ফিরতে পারবেন? বরং তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে একটা বার্তা দেওয়া যেত। এক নেতা তো বলেই ফেললেন, এভাবে চললে অচিরেই বঙ্গ সিপিএমকে গুগল সার্চেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন- বিহারে এনডিএ-র আসন সমঝোতার 'ডিল' অধরাই