Dilip Ghosh: `যতই দৌড়াদৌড়ি করুন, সবাইকে জেলে যেতে হবে’, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ দিলীপের
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যে নতুন কোনও শিল্প নেই। বোমা বন্দুকই এখানকার শিল্প। যেকোনও নেতার বাড়িতে বোমা ও মশলা পেয়ে যাবেন। এই লোকগুলো সব সমাজবিরোধী। পার্টির টিকিটে নেতা হয়েছে। অভ্যাস যায়নি। এরাই তৃণমূল কংগ্রেসকে টিকিয়ে রেখেছে। মানুষ যোগ্য জবাব দেবে’।
অয়ন ঘোষাল: মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে আসেন প্রাতঃভ্রমণে। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যেরবিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আজ কেজরি মমতা বৈঠক
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গতবার একই ঘটনা ঘটেছিল। মোদীর সামনে কে যাবেন? কেউ যেতে সাহস পাচ্ছেন না। তাই একটা মুরগি খোঁজা হচ্ছে। গতবার মমতা লাফালাফি করেছিলেন। সবাইকে মাছ ভাত খাইয়েছিলেন। তারপর তো ওনার ১২টা সিট কমে গিয়েছিল। তাই উনি এবার রাজি হচ্ছেন না। একটু হাওয়া দিলেই উনি অনেক সময় রাজি হয়ে যান। তাই একেক জন এসে হাওয়া দিচ্ছে। বলছে, দিদি আপনি রাজি হয়ে যান। ওনাকে আসরে নামানোর চেষ্টা চলছে। কেবল ওনাকে রাজি করাতে একেক সময়ে একেক জন কলকাতায় আসছে। কিন্তু উনি জেনে গিয়েছেন, মোদীর সামনে গেলে হাওয়া খারাপ হয়ে যাবে’।
এগরায় শুভেন্দু দিলীপ পোস্টার। শেষ মুহুর্তে পোস্টার বদল। দিলীপের নাম বাদ
তিনি বলেন, ‘আমাকে আহ্বান করা হয়েছিল। কারণ আমার লোকসভা এলাকা। তাই হয়তো সাংসদ হিসেবে আমার ছবি ছেপেছে। কারা ছেপেছে, তাও জানিনা। ওটা সাংগঠনিক ভাবে কাঁথি জেলা। কিন্তু এগরা বিধানসভা আমার সাংসদ এলাকার মধ্যে পড়ে। আমি ওই গ্রামে একবার ঘুরে এসেছি। যারা পোস্টার লাগিয়েছে, তারাই বাকিটা বলতে পারবে। আমার আজ দুই জেলায় দলীয় বৈঠক আছে’।
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ অভিষেক
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এদিকে বলছে আমাকে ফাঁসি দিয়ে দিন। এদিকে রক্ষাকবচ চাইতে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। এই বেঞ্চ থেকে ওই বেঞ্চ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আদালতের সময় নষ্ট করছেন। সরকারি পয়সা অপচয় করছেন। তাকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চাট্টিখানি কথা নয়। এই চালাকি সবাই বোঝে। একাধিক নেতা আগে এই চেষ্টা করেছেন। এই কোর্ট সেই কোর্ট ঘুরে তারা ভিতরে গিয়েছেন। অপেক্ষা করুন। কাজ চলছে’।
আরও পড়ুন: Same Sex Marriage: 'হাতটা ধরে থাকব সারাজীবন', কলকাতায় ফের বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ সমপ্রেমী যুগল
আমি ৩৬, মোদী ৭২: অভিষেক
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘৩৬ বছরেই যদি কেউ এত দুর্নীতি করে, ৭২ এ গিয়ে কি করবে? মোদী ৫০ বছর ধরে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে আছেন। তাকে যারা কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল, তারাই আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। উনি যেন ভুলে না যান, মোদী-শাহকে ফাঁসাতে কেস গুজরাট থেকে তুলে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা সেখানেও গিয়েছেন। কেউ রাস্তা অবরোধ করেনি। কেউ কোর্টের বিরুদ্ধে যায়নি। কেউ সরকারকে গালাগাল দেয়নি। আমরা আগুনের থেকে সোনা চকচকে হয়ে বেরিয়ে আসার মতো কোর্টে নির্দোষ প্রমাণ হয়ে বেরিয়ে এসেছি’।
পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত বহাল
এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি গোড়া থেকেই বলছি, প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। সব তদন্ত হওয়া উচিৎ। সব জায়গায় দুর্নীতি পাওয়া যাবে। কোনও মামলায় ছাড় পাবেন না। যতই দৌড়াদৌড়ি করুন, সবাইকে জেলে যেতে হবে’।
যে খাল কেটে কুমির এনেছিলাম, সেই খাল কেটেই বিজেপিকে বিদায় দেব : অভিষেক
তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘উনি কি জানেন? জঙ্গলমহলের মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। বিভিন্ন আন্দোলনের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। এখন কুড়মি আন্দোলনের নামে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তারা একসঙ্গে লড়বেন। কোনও নেতা যদি এদের হাতে বিক্রি হয়ে যায়, তারা এর বিরুদ্ধেও লড়বেন। বিজেপির হাতেই জঙ্গলমহলের মুক্তি ঘটবে’।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: 'সারদা-নারদায় অভিযুক্ত ছিলেন শুভেন্দু, গ্রেফতারি এড়াতেই দলবদল'!
এগরা, বজবজ, বীরভূম, পরপর বিস্ফোরণ
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যে নতুন কোনও শিল্প নেই। বোমা বন্দুকই এখানকার শিল্প। যেকোনও নেতার বাড়িতে বোমা ও মশলা পেয়ে যাবেন। এই লোকগুলো সব সমাজবিরোধী। পার্টির টিকিটে নেতা হয়েছে। অভ্যাস যায়নি। এরাই তৃণমূল কংগ্রেসকে টিকিয়ে রেখেছে। মানুষ যোগ্য জবাব দেবে’।
মদনের পর শতাব্দী, ফের রোগি ভর্তি না করাতে পেরে অভিমান
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বিরোধিদের কথা হাসপাতাল শোনে না। আমাদের কর্মীরা আহত হলে ভর্তি নেয়না। বাইরে ফেলে রাখে। তাদের পার্টির লোকও এখন আর ভর্তি করাতে পারছে না। বুঝতেই পারছেন, স্বাস্থ্য বিভাগ কীরকম চলছে। সামলাতে পারছে না। মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। জানিনা এখন কে দেখেন। পার্টির লোকের যদি এতো অভিযোগ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা ভেবে দেখুন’।
পঞ্চায়েত ভোট শান্তিতে হবে?
এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘যাতে না হয়, তার চেষ্টা চলছে। ভয়ের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূল কে এখন কোর্ট, বিরোধি, সিবিআই, সবাই চেপে ধরেছে। ফলে বাঁচার আর উপায় কি?’
দোকানের লাইসেন্স নিয়ে বাজির কারবার চালাতেন ভানু বাগ
দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘উনি মারা গিয়েছেন? না মেরে দেওয়া হয়েছে জানিনা। এগরা থেকে বাইকে গাড়িতে কটক চলে গেল। তারপর মারা যান। বিষয়টা সন্দেহের উর্ধে নয়। বাজি কারখানায় বাজি তৈরি ও জমা থাকেই। এটাই কুটিরশিল্প। যারা অবৈধ ব্যবসা করছেন, তাদের আটকানো দরকার ছিল। হয়নি। তারপর গরিবের সারা বছরের পুঁজি, সমস্ত বাজি পুলিস উঠিয়ে নিয়ে চলে আসছে। এই ব্যবসায় সরকারি অনুমতি আছে। তাহলে তো শিবকাশিতেও ব্যবসা তুলে দেওয়া উচিৎ। পুলিস টাকা নেয়। তাই মারা যায় সাধারণ মানুষ’।