Dilip Ghosh: `পুলিসের ওপর পলিটিক্যাল প্রেসার আছে, তাই পুলিস আক্রমণের শিকার`, শাসকদলকে আক্রমণ দিলীপের
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলছে পুকুরে বডি ফেলে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছিল যুদ্ধের সময় যেমন বোমা পড়ে, ওখানে যেন তেমন কিছু একটা হয়েছে। কারা করছে? কেন করছে? কি করে চলছে? যে লোক কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়েছিল, তাকে পুলিস ছেড়ে দিয়েছে। সে আবার একই কারবার করছে!’
অয়ন ঘোষাল: বুধবার সকালে দিল্লি উড়ে গেলে বিজেপি-র সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিল্লি যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখানে রাজ্য সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘একাধিক জায়গায় বিস্ফোরণ আগেও হয়েছে। আমি এর মধ্যে কয়েকটা জায়গায় গেছি। সাত আট বছর আগে পিংলায় একই ঘটনা ঘটেছিল। সেবার গিয়ে দেখেছিলাম, বাড়ির ছাদ উড়ে গেছিল। বডিগুলো ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এবারও তাই হয়েছে। প্রায় ২২ জন ওখানে কাজ করছিল। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। কজনকে পাওয়া গিয়েছে, কজনকে পাওয়া যায়নি, নিশ্চিত নয়’।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলছে পুকুরে বডি ফেলে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছিল যুদ্ধের সময় যেমন বোমা পড়ে, ওখানে যেন তেমন কিছু একটা হয়েছে। কারা করছে? কেন করছে? কি করে চলছে? যে লোক কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়েছিল, তাকে পুলিস ছেড়ে দিয়েছে। সে আবার একই কারবার করছে!’
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি বলছেন, সেখানে বিজেপির পঞ্চায়েত। আগে বিজেপির পঞ্চায়েত ছিল না। ওনাদের পঞ্চায়েত ছিল। মানুষ ক্ষেপে গিয়ে সেই পঞ্চায়েত ভেঙে দিয়েছে। এখন সেখানে নির্দল পঞ্চায়েত প্রধান। এই সমাজবিরোধী ও দেশ বিরোধি কাজ, এখানে পুলিস কোথাও না কোথাও যুক্ত। নাহলে কমপ্লেন করার পরেও পুলিস কিছু করে না কেন? তার মানে পুলিসের ওপর পলিটিক্যাল প্রেসার আছে। তাই আজ পুলিস আক্রমণের শিকার’।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘এই ধরনের বিস্ফোরক যেখানে আছে, সেটা অন্য কোনও কাজে লাগতে পারে। সবাই বলছে, গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ওখান থেকেই বোমা সাপ্লাই হত। তাই গোটা বিষয়টা নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত প্রয়োজন। ছোট ব্যাপার বলে এড়িয়ে গেলে চলবে না। এর পিছনে বড় চক্রান্ত বা বিদেশি মদত থাকতে পারে’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এনআইএ তদন্তও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঠেলায় পড়লে বিড়ালও গাছে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী জানেন, এটা নিয়ে কেউ না কেউ কোর্টে যাবে। কোর্ট সঙ্গে সঙ্গে NIA তদন্তের আদেশ দেবেই। তাই কানমোলা খাওয়ার আগে উনি নিজেই স্বীকার করেছেন, NIA হলে আপত্তি নেই। যদি উনি সত্যিই চান, তাহলে নিজে থেকে NIA তদন্ত চাইছেন না কেন? ওনার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে চিঠি লেখা উচিৎ, যে এর তদন্ত হওয়া উচিৎ’।
আরও পড়ুন: Vande Bharat Express: বাংলায় দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, কবে থেকে শুরু যাত্রী পরিষেবা?
দিলীপ ঘোষের আরও দাবি, ‘এই ধরনের ঘটনা ঘটলে পুলিসকে ধমক দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চুপ করে যান। কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডেও তাই ঘটেছে। সেখানে পুলিস মানুষের সঙ্গে যা ব্যবহার করেছিল, তারপর মানুষ যেভাবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল, সেই ক্ষোভ একাধিকবার দেখা যাচ্ছে। পুলিস কি এতোটাই অকম্মা? একসময় এখানকার পুলিসের সুনাম ছিল। এখনও অনেক ভালো অফিসার আছেন। বাকি পুলিসকর্মীরাও পরীক্ষা দিয়ে যোগ্য হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। আমার মনে হয় তৃণমূল কংগ্রেস পুলিসকে কাজ করতে দিচ্ছে না। সমাজবিরোধীদের শেল্টার দিচ্ছে। তাই পুলিসকে চুপ করে দেখতে হচ্ছে। আর শেষে পুলিসকেই আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে’।
বারবার আক্রান্ত পুলিস। বীরভূম ও এগরা সাম্প্রতিক সংযোজন
এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিসের প্রতি মানুষের এই ক্ষোভের যৌক্তিকতা আছে। আপনি হয়তো বলবেন, আমি এটাকে সমর্থন করছি। সমর্থনের প্রশ্ন না। কেন বারবার পুলিসের এই গাফিলতি? এত এত অভিযোগ। কটা কমপ্লেন? কটা এফআইআর? কটা গ্রেফতার? কটা শাস্তি? প্রতি সপ্তাহে বোমা ফাটছে, বন্দুক বেরোচ্ছে। আপনারা খবর করছেন। লোকে দেখছে। পুলিস কি করছে? তাই দুষ্কৃতিদের সাহস বেড়ে যাচ্ছে। নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে’।