বিছানায় গলা কাটা শিশু, ফ্যানে ঝুলছেন স্ত্রী!

সোমবার রাতে শুভজিতের সঙ্গে অশান্তি হয়েছিল সোমার। মঙ্গলবার অফিস যাওয়ার আগে সোমাকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছিলেন শুভজিত। সেসময় ব্যাপারটা মিটমাট হয়ে যায়, শুভজিত অফিস চলে যান।

Updated By: Aug 29, 2018, 12:27 PM IST
বিছানায় গলা কাটা শিশু, ফ্যানে ঝুলছেন স্ত্রী!

নিজস্ব প্রতিবেদন:  সকালের জলখাবার খেয়ে অফিস বেরিয়ে গিয়েছিলেন। ঘরে রেখে গিয়েছিলেন স্ত্রী আর দেড় বছরের শিশুকন্যাকে। সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে ফ্ল্যাটের কলিং বেল বাজান, রোজকার নিয়ম মতোই। কিন্তু দরজা খোলেননি কেউ। মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী পাশেই শাশুড়ির কাছে গিয়েছেন ভেবে নিজেই বিকল্প চাবি দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ঢোকেন বরানগরের আর এন চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা শুভজিত্ ভৌমিক। কিন্তু শোওয়ার ঘরে দৃশ্য দেখে গোটা পৃথিবীটাই যেন এক নিমেশে অন্ধকার হয়ে যায় তাঁর কাছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বরানগরে।

শুভজিত ভৌমিক নির্মাণকারী সংস্থার কর্মী। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেন আলমবাজারের বাসিন্দা সোমাকে। বিয়ের প্রথম বছর ভালোই ছিল, কিন্তু তারপর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে দাম্পত্য কলহ লেগে থাকত দুজনের মধ্যে। আরএন চ্যাটার্জির একটি দোতলা বাড়িতে স্ত্রী নিয়ে থাকতেন শুভজিত। তাঁর মা তেঘরিয়ার একটি ফ্ল্যাটে আলাদা থাকেন। দেড় বছর আগে শুভজিত-সোমবার এক কন্যাসন্তান হয়। কিন্তু সন্তান জন্মানোর পর অশান্তি আরও বেড়ে যায়। বিভিন্ন টুকিটাকি বিষয়ে অশান্তি লেগেই থাকত। শুভজিতের প্রতিবেশীরাও সেকথা জানতেন। কিন্তু তার পরিণতি যে এতট মর্মান্তিক হতে পারে, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কেউ।

 আরও পড়ুন: সারা রাতা মোবাইল ঘাটাঘাটি করেছিল ছেলে, সকালে উঠে মা ঘরে গিয়ে দেখলেন...

সোমবার রাতে শুভজিতের সঙ্গে অশান্তি হয়েছিল সোমার। মঙ্গলবার অফিস যাওয়ার আগে সোমাকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছিলেন শুভজিত। সেসময় ব্যাপারটা মিটমাট হয়ে যায়, শুভজিত অফিস চলে যান। সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখেন, শোওয়ার ঘরে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাদের দেড় বছরের শিশুকন্যা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা। সিলিং ফ্যানে ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন তাঁর স্ত্রী সোমা। কান্না আর চিত্কারে ততক্ষণে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। বিভত্স সেই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন সকলেই। খবর দেওয়া হয় বরানগর থানায়। পুলিস গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে।

বাসিন্দাদের দাবি, পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত দম্পতির। বেশকয়েকবছর ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সোমা। তাঁর চিকিত্সা চলছিল বলেও দাবি করেছে পরিবার। পুলিস সোমার স্বামী শুভজিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিস। তবে বেশ কয়েকটি বিষয় ভাবাচ্ছে পুলিসকেও। এটা কি নিছকই ডিপ্রেশন থেকে আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

.