নিজস্ব প্রতিবেদন: আজ কলকাতা পুরসভার ভোট। তৃতীয়বারের জন্য কি আবারও 'ছোট লালবাড়ি'র দখল নিতে চলেছে ঘাসফুল শিবির? রবিতেই তার ফয়সলা হয়ে যাবে। কোভিড পরিস্থিতিতে একবছরের জন্য স্থগিত হয়ে গিয়েছিল কলকাতা পুরসভার ভোট। অবশেষে রবিবার ভোটগ্রহণ। কলকাতা পুরসভার ভোট ঘিরে এখন টান টান উত্তেজনা। রাজনৈতিক মহলের মতে, 'লালবাড়ি' অর্থাৎ মহাকরণে যে পালাবদল হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত প্রথম মিলেছিল এই 'ছোট লালবাড়ি' থেকেই। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১১ নয়, রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের শুরুটা হয়ে গিয়েছিল ২০১০-এই। ২০১০-এই কলকাতা পুরসভায় বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে সূচনা হয়েছিল তৃণমূল জমানার। ১৪৪ ওয়ার্ডের কলকাতা পুরসভায় ৯৫টিতে জিতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। একলাফে ৫৩টি আসন বাড়ে ঘাসফুল শিবিরের। অন্যদিকে বামেদের আসনসংখ্যা ৪২টি কমে দাঁড়ায় ৩৩-এ। মাত্র ৩৩টি ওয়ার্ডে জয় পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যায় বামেরা। তৃতীয় স্থানে কংগ্রেসের ঝুলিতে আসে ১০টি আসন। আর বিজেপি ও অন্যান্যরা পায় ৩টি করে আসন। মেয়র হন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। 


এরপর ২০১৫-র কলকাতা পুরভোটেও তৃণমূল শিবিরের জয়ের ধারা অব্যাহত থাকে। সেঞ্চুরি পার করে ১১৪টি ওয়ার্ড জিতে নেয় ঘাসফুল শিবির। ফের দ্বিতীয়বারের জন্য মেয়র হন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। কিন্তু 'ছোট লালবাড়ি'তে এবার অবশ্য আর নিজের মেয়াদ সম্পূর্ণ করেননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। ব্যক্তিগত জীবনে টানাপোড়েনের জেরে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় শোভনবাবুর। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব কোনওটাই তিনি ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না বলে বিধানসভায় রীতিমতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ধমকের মুখে পড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এরপরই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন দিদির স্নেহের 'কানন'।


সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করার পরই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মেয়র পদ থেকেও পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন। দলনেত্রীর সেই নির্দেশের পরই ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর হাত দিয়ে কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। ২০১৮-র ২২ নভেম্বর কলকাতা পুরসভার মেয়র পদ থেকেও পদত্যাগ করেন শোভনবাবু। আর তারপরই কলকাতা পুরসভার মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভার প্রথম মুসলিম মেয়র হন ফিরহাদ হাকিম। পুর আইন সংশোধন করে মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমকে বসানো হয়। 



এখন সংশোধিত সেই আইন অনুসারে ৬ মাসের মধ্যে ফিরহাদ হাকিমকে একজন কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তাঁর মেয়র পদ রক্ষা করা বাধ্যবাধকতা ছিল। মেয়র পদের জন্য সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম ও বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিতের মধ্যে। কারণ নির্বাচনকে 'অবৈধ' বলে ভোট বয়কট করে বাম ও কংগ্রেস। সেই নির্বাচনে ১২১টি ভোট পেয়ে জয় হাসিল করে নেন ফিরহাদ। এরপর ২০২০-তে মেয়াদ শেষের পর ফের নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও, কোভিডের কারণে স্থগিত হয়ে যায় পুরভোট। তারপরই প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। যার মাথায় থাকেন ফিরহাদ হাকিম-ই। মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে মাথায় রেখেই ১৪ জনের প্রশাসক বোর্ড গঠন করে রাজ্য সরকার।


আরও পড়ুন, KMC Election 2021: ভারী বুটে ছয়লাপ শহর, ২৩ হাজার বাহিনীর ঘেরাটোপে কাল ভোট


বালি নিখোঁজকাণ্ডে 'মিসিং লিঙ্ক'? বাড়ির ছোট বউকে একই নম্বর থেকে বার বার ফোন!


কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার প্রশাসক বসে। কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী প্রশাসক বসানো যায় না। কিন্তু করোনার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুরভোট স্থগিত হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দেয় কলকাতা পুরসভার ভবিষ্যৎ নিয়ে। সেই পরিস্থিতিতে রিমুভ্যাল অফ ডিফিকাল্টিস অ্যাক্ট-এ ফিরহাদ হাকিমকেই প্রশাসক করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। কোভিড পরিস্থিতি খানিকটা আয়ত্তে আসার পর অবশেষে রবিবার কলকাতা পুরসভার ভোট। 'ছোট লালবাড়ি'র লড়াইয়ে এবার শেষ হাসি হাসবে কে? উত্তর মিলবে মঙ্গলবার।   


Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App