নিজস্ব প্রতিবেদন : সারমেয় নিধন কাণ্ডে তত্পর কলকাতা পুর নিগম। রাজ্যের সব হাসপাতাল চত্বরেই করা হবে নির্বীজকরণ ক্যাম্প। এই  মর্মে আজই চিঠি দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালগুলিকে। এমনটাই জানালেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে কুকুর নিধনকাণ্ডে তোলপাড় সব মহল। মঙ্গলবারই ২ অভিযুক্ত নার্সিং পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। সূত্রে খবর, বহিষ্কার করা হতে পারে সোমা বর্মণ ও মৌসুমী মণ্ডল নামে এই দুই ছাত্রীকে। কুকুর নিধন কাণ্ডে আজই রিপোর্ট দেবে কমিটি। তারপরই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে এনআরএস কর্তৃপক্ষ। রিপোর্টে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ৫ ছাত্রীকে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, ২ যুবতী নির্বিচারে লাঠিপেটা করে কুকুরছানাগুলিকে হত্যা করছে। জেরার মুখে নিজেদের দোষ কবুল করে নেয় ধৃত ২ নার্সিং পড়ুয়া মৌসুমী মণ্ডল ও সোমা বর্মণ।


জেরায় প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ধৃত ২ পড়ুয়া জানিয়েছেন, কুকুরের উত্পাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। এনআরএস চত্বর কুকুরদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এরমধ্যে ৩৫ জন পড়ুয়াকে কামড়েছিল কুকুর। গত ২০ ডিসেম্বর এই নিয়ে মেডিক্যাল সুপারকে ডেপুটেশনেও দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি। আর তাতেই 'বাধ্য হয়ে' কুকুর নিধন করেছেন তাঁরা।


এদিকে, একদিকে যখন দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে পশুপ্রেমীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, অন্যদিকে তখন পাল্টা আন্দোলনে নেমেছেন নার্সিং পড়ুয়ারা। ১ দিনের মধ্যে এনআরএস চত্বর কুকুরমুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নার্স সংগঠন। নইলে লাগাতার আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল চত্বর কুকুরমুক্ত করতে আসরে নেমেছে কলকাতা পুরনিগমও।


এদিন জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, হাসপাতাল চত্বরকে কুকুরমুক্ত করা সম্ভব নয়। কুকুরদের নির্বীজকরণ করা হবে। নির্বীজনকরণের পর আবার হাসপাতাল চত্বরেই রাখা হবে কুকুরদের। তিনি বলেন, রাজ্যের সব হাসপাতালে নির্বীজকরণ ক্যাম্প করবে পুরসভা। হাসপাতাল চত্বরে ক্যাম্প করার জন্য জায়গা চেয়ে আজই চিঠি দেওয়া হবে হাসপাতালগুলিকে। অনুমতি মিললেই ক্যাম্পাসে ক্যাম্প করে নির্বীজকরণ করা হবে কুকুরদের।


হাসপাতালের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য অফিসগুলিতেও ক্যাম্প করার অনুমতি চেয়ে পুরসভা চিঠি দিচ্ছে বলে জানান তিনি। আরও বলেন, ক্যাম্পাসে জায়গা না হলে কুকুরদের ধরে নিয়ে আসা হবে পুরসভার ক্য়াম্পে। পুরসভার ক্যাম্পে নিয়ে এসে অস্ত্রোপচার করা হবে কুকুরের। ভবিষ্যতে যাতে এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে কুকুরের জন্য খাঁচা রাখারও আবেদন করেছেন ডেপুটি মেয়র।


আরও পড়ুন, ঘর থেকে ৩ বছরের শিশুকে টেনে নিয়ে গেল চিতাবাঘ, রাতভর তল্লাশিতে উদ্ধার খণ্ডবিখণ্ড দেহ


রবিবার সন্ধ্যায় এনআরএস হাসপাতালে সুপারের অফিস সংলগ্ন চত্বর থেকে উদ্ধার হয় বস্তাবন্দি ১৬টি কুকুরছানার দেহ। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় মা কুকুরটিরও। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ফাঁস হয় কুকুরছানাদের মৃত্যুর আসল কারণ। দেখা যায়, একাধিক আঘাত ও রক্তক্ষরণের জেরেই মৃত্যু হয়েছে কুকুরছানাগুলির। ২ টি কুকুরছানার লিভার ফেটে গিয়েছে। বেদম মারে মাথার মাথার খুলি ফেটে গিয়েছে আরও ২টি কুকুরছানার।  বড় কুকুরটিরও মাথার খুলি ফেটে গিয়েছে।