চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা নিয়ে আবেদন খারিজ, হাইকোর্টে অস্বস্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের
বিচারপতি লপিতা ব্যানার্জির নির্দেশ, 'এত দ্রত শুনানির কী আছে? এত দিন ধরে আন্দোলন চলছে, আর এক দিন চললে এমন কী অসুবিধা হবে?' মামলা করে আদালতে আসার নির্দেশ দেন তিনি।
অর্ণবাংশু নিয়োগী: হাইকোর্টে অস্বস্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। করুণাময়ী মোড়ে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বদলেছে আমরণ অনশনে। নিয়োগপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সেই ধরনার বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক বোর্ড। পর্ষদের বক্তব্য ছিল, আন্দোলনের জেরে কোনও কর্মী ঢুকতে পারছেন না। ফলে কোনও কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সেইসঙ্গে কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদনও জানায় পর্ষদ। পাশাপাশি, আজই শুনানির আর্জিও জানায়। কিন্তু আদালত সাফ খারিজ করে দিয়েছে দ্রুত শুনানির আর্জি। দ্রুত শুনানির আর্জি বাতিল করে বিচারপতি লপিতা ব্যানার্জির নির্দেশ, 'এত দ্রত শুনানির কী আছে? এত দিন ধরে আন্দোলন চলছে, আর এক দিন চললে এমন কী অসুবিধা হবে?' মামলা করে আদালতে আসার নির্দেশ দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই প্রাথমিক মামলা নাটকীয় মোড় নেয়। একদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট জানান যে, ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের দাবি আইনসম্মত নয়। অন্যায্য দাবি করছেন তাঁরা। ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করেন তিনি। পর্ষদ সভাপতি সাফ বলেন,'নীতিগতভাবে নিয়োগ দেওয়া যায় না। কারণ, ২০১৬ সালের নিয়োগ নীতি আইন মেনেই নিয়োগ করতে হবে। আজকে যারা নন-ইনক্লুডেড ক্যানডিডেট, তাঁরা পর পর দুবার ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁরা এমপ্যানেলড হননি। এখন আইন মেনেই নিয়োগ করতে হবে। তাই নন-ইনক্লুডদের নিয়োগ দেওয়া যায় না।' গৌতম পাল আরও বলেন, 'প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাও চাকরির দাবিদার। ১৬,১০১ জনের প্রশিক্ষণ রয়েছে।' এমনকি তিনি এও বলেন যে, ২০১২ সাল থেকে টেট পাস সকল প্রার্থী যদি বয়স থেকে থাকে, তবে সবাই-ই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আর ৪০ বছর বয়স হয়ে গিয়ে থাকলে, সেক্ষেত্রে বয়সসীমায় ছাড় দিলে তাঁরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। তবে সেই ছাড় দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
আরও পড়ুন, 'ওঁর সরকারের সব পরীক্ষাই আদালতে যায়', TET ইস্যুতে মমতাকে নিশানা দিলীপের
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা আবার বড় ধাক্কা খায় সুপ্রিম কোর্টে। প্রাথমিকে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের হাইকোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, 'কারও চাকরি বাতিল করা যাবে না। চাকরি থেকে কাউকে বরখাস্ত নয়। ২৬৯ জনেরই চাকরি বহাল রাখতে হবে। ৪ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে। সুযোগ না দিয়েই একতরফাভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' এর পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যের অপসারণের হাইকোর্টের নির্দেশের উপরও স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)