কালিবিহীন কলম! কাজের সুযোগ না পেয়ে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা Laxmi-র
তাহলে কি এবার বিজেপিতে?
মৌপিয়া নন্দী
এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত! কোনওরকম আগাম ইঙ্গিত ছাড়াই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা, তৃণমূলের (TMC) সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla)। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, দলে কাজের স্বাধীনতা পাচ্ছিলেন না তিনি। মন্ত্রী ছিলেন কাগজ-কলমেই। পাঁচ মাস আগে জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেলেও, কমিটি গঠন না হওয়ার কারণেও ক্ষোভ ছিল লক্ষ্মীর (Laxmi Ratan Shukla)। আর তাই শেষপর্যন্ত দল ও মন্ত্রিত্ব দুটোই ছাড়লেন বাংলার রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। তাহলে কি এবার বিজেপিতে (BJP)? গেরুয়াশিবিরের তরফে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও, লক্ষ্মী নিজে এখনও পর্যন্ত দলবদল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর তেমনই।
আরও পড়ুন: মিছিলকে কেন্দ্র করে TMC-BJP সংঘর্ষে উত্তপ্ত খানাকুল, থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ
সূ্ত্রের খবর, হাওড়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। দলের ভাবমূর্তি ফেরাতে মাস পাঁচেক আগে জেলার সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় তরুণ বিধায়ক, প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে (Laxmi Ratan Shukla)। রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। ভোটের মুখে সেই লক্ষ্মীই মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে সদ্য প্রাক্তন মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি, 'লক্ষ্মী ভালো ছেলে। কেউ পদত্যাগ করতেই পারে, কী যায় আসে। লক্ষ্মী যে চিঠি লিখেছে, তাতে লেখেনি যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করছে। লিখেছে যে রাজনীতি থেকে সরে যেতে চায়। ও খেলায় আরও সময় দিতে চায়। তাই মন্ত্রিত্ব থেকে সরতে চায়। তবে এই টার্মের শেষ পর্যন্ত ও বিধায়ক থাকবে। ঠিক আছে। ও ভালো করে খেলাধুলো করুক।' কিন্তু তাতেও জল্পনা থামছে না! বরং বলা ভালো, লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে তৃণমূলের (TMC) অন্দরে বিভাজন কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় TET উত্তীর্ণদের জন্য নয়া নির্দেশ হাইকোর্টের
লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla) ইস্তফার দেওয়ার পর তৃণমূলের (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) কটাক্ষ, 'যত তাড়াতাড়ি মুখোশ খোলে ততই ভাল'। আর হাওড়া জেলার বিধায়ক তথা সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের (Arup Roy) প্রতিক্রিয়া, 'ভোটের আগে দলের সেনাপতির দায়িত্বে থাকা কেউ যদি চলে যায়, তাহলে সেটা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যাওয়ার মতই ঘটনা'। তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনের আগে একাজটা ঠিক হয়নি। তবে কেউ চলে গেলেও কিছু যায় আসে না'। তবে হাওড়া দলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে রাখঢাক করেননি বৈশালি ডালমিয়া (Baishali Dalmiya)। Zee ২৪ ঘণ্টাকে বালির তৃণমূল বিধায়ক বলেন,'লক্ষ্মীরতন শুক্লা (laxmi ratan shukla) মিটিং-মিছিল ডাকলে দলের একাংশ সাড়া দিত না। তারা আলাদা মিটিং করত।' তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, 'তৃণমূলস্তরের একাংশ দলটাকে উইপোকার মতো কুরে কুরে খাচ্ছে। পুরনো কর্মীদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নতুন কর্মীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে না। হাওড়ায় বিধায়ককে অপমান করা হয়। সাংসদকে মানে না। এই কয়েকজন মানুষ দলটাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।' উল্লেখ্য, লক্ষ্মীরতন শুক্লার জায়গায় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে (Arup Biswas)। আর তৃণমূলের হাওড়া জেলার নয়া সভাপতি হয়েছেন ভাস্কর ভট্টাচার্য।