নিজস্ব প্রতিবেদন:  লটারি প্রতারণাকাণ্ডে ফের নয়া তথ্য। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মাস্কিং কনসেপ্ট ও  কল স্পুফিংয়ের মাধ্যমে চলত সাইবার কারসাজি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এবার প্রশ্ন ‘মাস্কিং কনসেপ্ট’ বা ‘কল স্পুফিং’ বিষয়টি কী?


পদ্ধতি ১.  মাস্কিং কনসেপ্ট


সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিতেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাইবার কারসাজি হয়ে থাকে। প্রত্যেক সার্ভার ব্যবহার করার জন্য একটি পিন নম্বর লাগে। (যেমন আমরা অনেক সময়ই অন্য ইউজারের ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময়ে তার পিন নম্বর দিয়ে থাকি)  প্রতারকরা ‘অপারেশন’এর সময়ে বিভিন্ন সার্ভারের পিন হ্যাক করে থাকে। লটারি প্রতারণাকাণ্ডে প্রতারকরা নাইজেরিয়ার চারটি প্রক্সি  সার্ভারের পিন হ্যাক করেছিল। এবং সেই পিন ব্যবহার করে দিল্লি, বাংলা, অরুণাচলপ্রদেশ, মেঘালয়ে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল।


পদ্ধতি ২. কল স্পুফিং


কল স্পুফিং-এই প্রযুক্তি আপনার মোবাইলে বা ফোনে ব্যবহার করা থাকলে, আপনার ফোনের টাওয়ার লোকেশন অপরজনের কাছে সঠিক দেখাবে না। ( ধরুন আপনি কলকাতায় বসে ফোন করলে, আপনার টাওয়ার লোকেশন দেখাতে পারে দুবাই)। এক্ষেত্রেও প্রতারকরা এই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছিল। ০০৯২ বা ৯২ দিয়ে শুরু নম্বরগুলো থেকে  প্রতারিতদের কাছে যে ফোনগুলি  গিয়েছিল,  সেগুলির টাওয়ার লোকেশন লোকেট করে প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করেছিলেন,  দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রতারণা চলত। কিন্তু শিকড় খুঁজতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, আসলে ওই ফোনগুলি আসত পাকিস্তান ও দুবাই থেকে। অর্থাত্ প্রতারকা সেখানে বসে ফোন করলেও, টাওয়ার লোকেশন দেখাত দক্ষিণ আফ্রিকা।


১৯৯০ সালে নাইজেরিয়াতে এই রকম কায়দায় সাইবার ক্রাইম হত বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।   


আরও পড়ুন: লটারি প্রতারণার টাকা কলকাতা থেকে সোজা যাচ্ছিল দাউদের কাছে? বিস্ফোরক তথ্য


প্রসঙ্গত, লটারি প্রতারণাকাণ্ডে ফারহান খান নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। এই নিয়ে লটারিকাণ্ডে তিন জন গ্রেফতার হল। আগেই রাজেশ ঘোষ ও বিধান কীর্তনিয়া নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।


শেষ ৩ বছরে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।


কীভাবে চলত অপারেশন?


হঠাতই ফোন বা হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ আসত। +৯২ দিয়ে শুরু নম্বর থেকে আসত মেসেজ। মেসেজে লেখা থাকত, আপনি  পঁচিশ লক্ষ টাকা জিতেছেন। জেতা টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে  শুধু প্রসেসিং ফি দিতে হবে। কোন অ্যাকাউন্টে সেই  প্রসেসিং ফি দিতে হবে, নির্দিষ্ট সেই  অ্যাকাউন্ট নাম্বারও দেওয়া থাকত।


ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকাটা পড়ার অপেক্ষা মাত্র। তারপরই ফাঁদ একদম আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলত।  হ্যাক হয়ে যেত অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট একদম সাফ হয়ে যেত মুহূর্তে।  হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা চলে যেত পাকিস্তান আর দুবাইয়ে।  এধরনের প্রতারণার প্রথম অভিযোগ জমা পড়েছিল হাওড়া গোলাবাড়ি থানায়। সূত্র ধরে এগোতেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের।