লটারি প্রতারণার টাকা কলকাতা থেকে সোজা যাচ্ছিল দাউদের কাছে? বিস্ফোরক তথ্য
পাকিস্তানি এজেন্ট মারফত এই প্রতারণার ব্যবসায় তাদের হাতেখড়ি। দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গই টার্গেট। নভেম্বর মাসেই এই ব্যাপারে প্রথম সূত্র পায় সিআইডি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কলকাতায় আন্তর্জাতিক প্রচারণা চক্রের হদিশ। লটারি প্রতারণায় ধৃতদের জেরা করে উঠে আসছে বিস্ফোরক তথ্য। শেষ ৩ বছরে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অপারেশন চলত পাকিস্তান থেকেই। লটারি প্রতারণাকাণ্ডে চিনারপার্ক থেকে ধৃত রাজেশ ঘোষ ও বিধান কীর্তনিয়াকে জেরা করে রীতিমতো স্তম্ভিত তদন্তকারীরা।
ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, পাকিস্তানি এজেন্ট মারফত এই প্রতারণার ব্যবসায় তাদের হাতেখড়ি। দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গই টার্গেট। নভেম্বর মাসেই এই ব্যাপারে প্রথম সূত্র পায় সিআইডি। গোলাবাড়ি থানা এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এটিএম প্রতারণা মামলায় দিল্লি থেকে ওমর নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিস। তার থেকে নগদ ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। যার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছিল, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই লটারি প্রতারণার খোঁজ পায় পুলিস। ওমরকে জেরা করেই লটারি প্রতারণার কথা জানতে পারে গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: আপনার টাকা পাচার হয়ে যাবে পাকিস্তানে! এই নাম্বার থেকে মেসেজ পেলে সাবধান
লটারি চক্রে উঠে আসছে আইএস, দাউদ লিঙ্কও। দুবাই যোগে তদন্তকারীদের সন্দেহ জোরালো হচ্ছে। সিআইডি-জেরায় ফাঁস হয়েছে ‘মোডাস অপারেন্ডি’ও। এজেন্টদের ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দুবাইয়ে অর্থপাচার হত, পরে তা পাকিস্তান হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে আত্মসাত্ হয়ে যেত। লটারি প্রতারণার শিকর অত্যন্ত গভীরে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই তদন্তকারীদের। শিকড়ের খোঁজে রয়েছে ইডিও।
লটারি চক্রে IS, দাউদ লিঙ্ক। দুবাই যোগে জোরাল সন্দেহ । এজেন্টদের ভুয়ো অ্যাকাউন্টে দুবাইয়ে অর্থপাচার। পরে পাকিস্তান হয়ে হাওয়ালার মাধ্যমে আত্মসাত্। শিকড়ের খোঁজে ইডিও।
প্রসঙ্গত, রবিবার চিনারপার্ক থেকে লটারি প্রতারণাকাণ্ডে দুই যুবক গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, পাকিস্তানে প্রতারণাচক্রের জাল ছড়িয়েছে এরাজ্যে। লটারিতে টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। এভাবে গত কয়েক বছরে এরাজ্যে বহু মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
কীভাবে চলত অপারেশন?
হঠাতই ফোন বা হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ আসত। +৯২ দিয়ে শুরু নম্বর থেকে আসত মেসেজ। মেসেজে লেখা থাকত, আপনি পঁচিশ লক্ষ টাকা জিতেছেন। জেতা টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে শুধু প্রসেসিং ফি দিতে হবে। কোন অ্যাকাউন্টে সেই প্রসেসিং ফি দিতে হবে, নির্দিষ্ট সেই অ্যাকাউন্ট নাম্বারও দেওয়া থাকত।
ওই ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকাটা পড়ার অপেক্ষা মাত্র। তারপরই ফাঁদ একদম আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলত। হ্যাক হয়ে যেত অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট একদম সাফ হয়ে যেত মুহূর্তে। হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা চলে যেত পাকিস্তান আর দুবাইয়ে। এধরনের প্রতারণার প্রথম অভিযোগ জমা পড়েছিল হাওড়া গোলাবাড়ি থানায়। সূত্র ধরে এগোতেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের।