রাজ্য বঞ্চনার শিকার, বিচার চাইতে দিল্লি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী

আর্থিক দাবি নিয়ে দিল্লিতে দরবার করতে দিল্লি গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শহর ছাড়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে সাংবাদিকদের জানান, ``বিচার চাইতে যাচ্ছি``। জঙ্গলমহলে চালের বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য ভাল কাজ করা সত্ত্বেও বঞ্চনার শিকার বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। তিনি বলেন `সাহায্য কেন বন্ধ করা হল তা জানতে চাইব``।

Updated By: Apr 8, 2013, 03:31 PM IST

কেন্দ্রের কাছে আর্থিক দাবি তোলার আগে ফের সুর চড়ালেন  মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করলেন, কাজের নিরিখে রাজ্য এক নম্বরে হওয়া সত্ত্বেও রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্থিক অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্র। এবার দিল্লিতে গিয়ে যোজনা কমিশনের চেয়ারম্যান, অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের সাফল্যের সেই তথ্যই তুলে দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কেন্দ্রের কাছে সুদ মকুবের দাবি জানিয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। দাবি আদায়ে কখনও কখনও শালীনতার সীমাও ছাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্র অবশ্য প্রতিবারই স্পষ্ট করে দিয়েছে, সাংবিধানিক নিয়মেই তাদের পক্ষে আলাদাভাবে পশ্চিমবঙ্গকে কোনও আর্থিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও ফের একবার দিল্লির দরবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই একই দাবি নিয়ে।
এবারের দিল্লি সফরে যোজনা কমিশনের চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যোগ্য রাজ্য হিসেবেই কেন্দ্রের কাছে দরবার করতে চলেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজস্ব আদায় করে যেটুকু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাঁরা করছেন, তাতেও বাধ সাধছে কেন্দ্র।
যদিও কোন রাজ্য কত টাকা পাবে এবিষয়ে ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। রাজ্যগুলি থেকে সংগৃহীত কেন্দ্রীয় করের তেত্রিশ শতাংশ বন্টিত হয় রাজ্যগুলির মধ্যে। বাকিটা কেন্দ্রের ঘরে যায়। পশ্চিমবঙ্গের পাওনা এই মোট সংগৃহীত করের দুই দশমিক সাত শতাংশ। তাই মুখ্যমন্ত্রীর দাবিমতো কেন্দ্রীয় কর বন্টনের প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করা হচ্ছে এমন দাবি ভিত্তিহীন। এবং অসাংবিধানিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের ওপর যে করের বোঝা রয়েছে তার খুব সামান্যই কেন্দ্র সরকারের থেকে নেওয়া ঋণ। বেশিরভাগ টাকাই নেওয়া হয়েছে স্বল্প সঞ্চয়, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে। এই উত্সগুলি থেকে নেওয়া ঋণের সুদ মকুবের ক্ষমতা কেন্দ্রের নেই। কেন্দ্র শুধু ছাড় দিতে পারে নিজের দেওয়া ঋণের সুদে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন উঠবে অন্য ঋণগ্রস্ত রাজ্যগুলি সেই সুবিধা পাবে না কেন? তাই আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এবারের সফর কতটা ফলপ্রসূ হবে সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

.