'টাকা দিয়ে কথা বলাচ্ছে মিডিয়ার একাংশ', মুখ্যমন্ত্রী
`টাকা দিয়ে কথা বলাচ্ছে মিডিয়ার একাংশ।` ফের মুখ্যমন্ত্রী রোষের মুখে পড়ল সংবাদমাধ্যম। আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের যুব সংগঠনের শাখা, যুবার প্রথম রাজ্য সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "এখনকার মিডিয়া বিজনেস হাউস তৈরি করে।" মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সেই বিজনেস হাউসের শিখিয়ে দেওয়া কথাই বলতে হয় সেই সংবাদমাধ্যমকে।
ফের মুখ্যমন্ত্রী রোষের মুখে পড়ল সংবাদমাধ্যম। আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের যুব সংগঠনের শাখা, যুবার প্রথম রাজ্য সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "এখনকার মিডিয়া বিজনেস হাউস তৈরি করে।" মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সেই বিজনেস হাউসের শিখিয়ে দেওয়া কথাই বলতে হয় সেই সংবাদমাধ্যমকে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে সরকার বিরোধী কুৎসা রটানোর জন্য টাকা দিয়ে লোক কেনে। তিনি বলেন, "মিডিয়া যেটা বলছে সেটা তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে বলছে, মানুষের স্বার্থে নয়।"
এমন কী মিডিয়া আত্মহত্যা ও ধর্ষণকে প্ররোচনা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, "সত্যি ঘটনা তুলুন কিন্তু মানুষের মনে ক্রিমিনাল অফেন্স তৈরি করার চেষ্টা করবেন না" তাঁর দাবি একটা সময় সংবাদমাধ্যম যে কোনও আত্মহত্যাকেই ঋণের দায়ে কৃষক আত্মহত্যা বলে প্রচার করার চেষ্টা করেছে। এখনও ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রেও একই কাজ করছে সংবাদমাধ্যম।
মিডিয়াকে তাঁর এই আক্রমণে স্বভাবতই বিতর্কের ঝড় উঠেছে সাংবাদিকমহলসহ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। সাংবাদিকদের একাংশও মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিতা জানিয়েছেন। সাংবাদিক অজিতা মেনন বলেন মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে তিনি অপমানিত।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এধরণের প্রতিক্রিয়া নতুন নয়। এ সরকারের আমলেই মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে এর আগেও একাধিকবার পড়তে হয়েছে রাজ্যের সংবাদমাধ্যমকে। চলতি বছরের মার্চ মাসেই সরকারের কাজের সমালোচনা করার অপরাধে সরকারি পাঠাগারে ব্রাত্য করা হয় সরকারের অপছন্দের খবরের কাগজ। সেই সুদীর্ঘ 'ব্রাত্য তালিকা' থেকে বাদ পড়েনি একাধিক জনপ্রিয় এবং বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র। এমন কী রাজ্যে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী বারবারই তা সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জন বা 'সাজানো ঘটনা' বলে চিহ্নিত করেছেন।
সংবাদমাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রীর এই উপর্যুপরি আক্রমণে প্রশ্ন উঠেছে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নিয়ে। সবে মাত্র দেড় বছরে পা দিল বর্তমান সরকার। কিন্তু তার মধ্যেই সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে হাজতবাস করতে হয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে ক্রমেই। বিরোধী পক্ষে থাকার সময় যারা সরকারের বিরোধিতা করতেন মুক্তকণ্ঠে, আজ তারা সামান্য সমালোচনাও সহ্য করতে পারছেন না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে প্রদেশ কংগ্রেস শিবির। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "সংবাদিকদের অপদস্থ করাটা গণতন্ত্রের রীতি নয়"। তিনি আরও বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে মেয়েরা নির্যাতিত হচ্ছে। এই ঘটনাকে ভয় দেখিয়ে চেপে দেওয়া ঠিক নয়"। সেইসঙ্গে, শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেন প্রদীপ বাবু। সংবাদমাধ্যমের ওরপ পুলিসের শ্যেণদৃষ্টিকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করেন আরেক কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাশমুন্সি। সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের হুমকিরও নিন্দা করেন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য ও কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি।