Mobile App Fraud: দুবাইয়ে বসেই নিয়ন্ত্রণ! মিলল মোবাইল অ্যাপ প্রতারণাকাণ্ডের কিং পিনের হদিস

গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়ি থেকে নগদ ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে সোনার গয়না ও নথিপত্র। কোথায় থেকে এল এত টাকা? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছিলেন ব্যবসায়ী নিসার খানের ছেলে আমির।  

Updated By: Sep 29, 2022, 03:35 PM IST
Mobile App Fraud: দুবাইয়ে বসেই নিয়ন্ত্রণ! মিলল মোবাইল অ্যাপ প্রতারণাকাণ্ডের কিং পিনের হদিস
বাঁদিক থেকে ধৃত প্রতীক, সমিত ও সুমা

পিয়ালি মিত্র: গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধারের পর বেরিয়ে এসেছিল তারা ছেলে আমির খানের কাণ্ড। তদন্তে বেরিয়ে আসে নিসারপুত্র একটি মোবাইল অ্য়াপের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছিল। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে কলকাতা পুলিস। এবার সেই প্রতারণাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এল গোটা একটি চক্র। ওই চক্রের মাথা শুভজিত্ শ্রীমণি। বর্তমানে দুবাইয়ে বসে রয়েছে শুভজিত্। বিদেশে বসেই রিমোট কন্ট্রোলে ওই কাণ্ড করতে শুভজিত্, এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তার সঙ্গে গার্ডেনরিজের আমির খানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

পড়ুন- বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা

তদন্তে জানা যাচ্ছে, শুভজিত্ শ্রীমণি, আমির-সহ বেশ কয়েকজন মিলে ই-নাগেটস অ্যাপ চালু করে। কলকাতার বি কে পাল অ্যাভিউতে শ্রীমণির বাড়ি। সেই বাড়িতে বুধবার হানা দেন ইডি-র তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে গত ৩ বছর ধরে সে কলকাতা ছাড়া। বর্তমানে রয়েছে দুবাইয়ে। গতকাল সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে হানা দেয় কলকাতা পুলিস। সল্টলেকের অফিসে পাওয়া যায় একটি সিম বক্স ও সার্ভার। তল্লাশিতে পাওয়া যায় ২ হাজার সিম কার্ড। প্রায় ২ হাজার ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে। মেলে বিপুল ডেবিট কার্ড। তদন্তকারীদের বক্তব্য মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাদের প্রতারণা করা হতো তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফারের কাজ সল্টলেকের অফিস থেকে করা হতো। শুভজিত্, আমির ছাড়াও ওই প্রতারণার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত। 

মোবাইল অ্যাপ প্রতারণার তদন্তে নেমে বুধবার ৪ জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিস। আমির ও শ্রীমণির অধীনে কাজ করতো এরা। এদের মধ্যে সুমা নস্করের বেহালার বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৩০ কোটি টাকা। তদন্তে উঠে আসছে অ্যাপ প্রতারণাকাণ্ডে ধৃতদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা কাজ ছিল। যাদের প্রতারণা করা হতো তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খেলার ব্যবস্থা করতো আমির খান। গোটা প্রতারণা চক্রের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার কাজ করতো শুভজিত্ শ্রীমণি। বিদেশে বসে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ট্রান্সফারের কাজটা করতো। 

আমিরের বাড়ি থেকে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধারের পর দেখা যায় প্রতারণার বিপুল টাকা ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়। তদন্তকারীদের অনুমার খুব বেশিদিন ওই প্রতারণা চলেনি। ব্যাঙ্কের কাছ থেকে পুলিসে অভিযোগ হওয়ার পরই প্রতারণা বন্ধ হয়ে যায়।

অ্য়াপ প্রতারণাকাণ্ডে সল্টলেকের একটি বহুতলে তল্লাশি চালায় কলকাতা পুলিস। সেখানে থেকে একাধিক সার্ভার ও ব্য়াঙ্কের পাসবই উদ্ধার হয়। পাশাপাশি হাজার তিনেক এটিএম কার্ড ও ৪৮৩টি ব্য়াঙ্কের কিট। পুলিস সূত্রে খবর, সার্ভারগুলি দেখতে অনেকটা সিমবক্সের মতো। একটি একটি সিমবক্স রয়েছে ২ হাজারেরও বেশি সিমকার্ড। প্রত্যেকটি সিমকার্ডই আবার ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত! নেপথ্য়ে কারা? তদন্তকারীদের অনুমান, বিদেশ থেকে ওই সার্ভারগুলি ব্যবহার করা হত।

ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহ দুয়েক আগে। গত ১১ সেপ্টেম্বর গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়ি থেকে নগদ ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে সোনার গয়না ও নথিপত্র। কোথায় থেকে এল এত টাকা? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছিলেন ব্যবসায়ী নিসার খানের ছেলে আমির। নাম, ই-নাগেটস। শুধু তাই নয়, ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে সেই অ্যাপে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগও করা হয়েছিল। কেন? ই-ওয়ালেটে টাকা রাখলে কমিশনের টোপ দেওয়া হয়েছিল। বস্তুত, প্রথমদিকে কমিশনের টাকা দিয়ে দেওয়া হত ই-ওয়ালেটে। এরপর হঠাৎ করেই ওই অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মুছে ফেলা হয় যাবতীয় তথ্য। এমনকী, ভুয়ো অ্যাকাউন্টে রাতারাতি গায়েব হয়ে যায় কোটি কোটি টাকা!

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.