ঐত্রী মৃত্যুকাণ্ড : স্বাস্থ্য কমিশনে আজ দ্বিতীয় দফার শুনানি
গত ১৭ জানুয়ারি মুকুন্দপুর আমরিতে মৃত্যু হয় আড়াই বছরের ওই শিশুর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মৃত্যু হয় ঐত্রীর। পরিবারের অভিযোগ, চিকিত্সার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে ঐত্রীর।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মুকুন্দপুর আমরিতে ঐত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ স্বাস্থ্য কমিশনে দ্বিতীয় দফার শুনানি। শুনানিতে হাসপাতালের চিকিত্সক, নার্স, আরএমও-সহ কর্তৃপক্ষকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। একই ভাবে ঐত্রীদের পরিবারকেও হলফনামা পেশ করে নিজেদের অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।
গত ১৭ জানুয়ারি মুকুন্দপুর আমরিতে মৃত্যু হয় আড়াই বছরের ওই শিশুর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মৃত্যু হয় ঐত্রীর। পরিবারের অভিযোগ, চিকিত্সার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে ঐত্রীর। এরপর সামনে আসে ময়না তদন্তের রিপোর্ট।
আরও পড়ুন- ঐত্রীর মৃত্যু অস্বাভাবিক, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ফাঁস আমরির চূড়ান্ত গাফিলতি
ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও হাসপাতালে চিকিত্সার যাবতীয় নথি পরীক্ষা করে ঐত্রীর পরিবারকে লিখিত রিপোর্ট দিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অজয় কুমার গুপ্ত। সেই রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে যা লেখা হয়েছে, তাতে ভুল চিকিত্সার কারণেই মৃত্যুর ইঙ্গিত মিলেছে।
কী বলা হয়েছে রিপোর্টে?
*রিপোর্টের ৫ নম্বর পাতায় চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে পরেই ২ বছর ৫ মাসের ঐত্রীকে দিনে ৪০০ মিলিগ্রাম পাওয়ারের ৩টি অগমেন্টাইন ইন্ট্রা ভেনাস ইনজেকশন দেওয়া হয়। অথচ ওরাল প্রিপারেশন, সাসপেনশন, সিরাপ দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের জরুরি চিকিত্সা শুরু করা যেত।
*রিপোর্টের পঞ্চম পাতার পঞ্চম অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইনট্রাভেনাস অগমেন্টাইন ইনজেকশন দেওয়ার কারণে ছোট্ট শিশুর শরীরে বিভিন্ন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। যেমন হেপাটিক এবং রেনাল ডিসফাংশন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়তী সেনগুপ্ত টেলিফোনে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরামর্শ দেন। অথচ ট্রিটমেন্টের নথিতে কোথাও জয়তী সেনগুপ্তর নাম নেই।
*রিপোর্টের ষষ্ঠ পাতার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ছোট্ট শিশুকে ৪০০ পাওয়ারের অগমেন্টাইন ইনজেকশন দেওয়ার পর কী প্রতিক্রিয়া হল, তা পর্যবেক্ষণের জন্য কোনও ব্যবস্থাই রাখা হয়নি।
আরও পড়ুন- 'মস্তানি' গায়েব, কমিশনে হাজিরা কাঁচুমাচু জয়ন্তীর
চিকিত্সার চরম গাফিলতিতেই যে আড়াই বছরের ঐত্রীর মৃত্যু, মেডিক্যাল রিপোর্ট তুলে ধরে দাবি করেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। ১৫ জানুয়ারি আমরির ল্যাবে হওয়া ঐত্রীর আইজিই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে রেজাল্ট ১৬৪। অথচ তার সর্বোচ্চ সীমা ৬০-এর মধ্যে থাকার কথা। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের দাবি, ইনজেকশন নেওয়ার পরে হুহু করে বেড়ে গিয়েছিল ঐত্রীর আইজিই লেবেল। এমন অস্বাভাবিক রিপোর্টের পরেও ঐত্রীকে বাঁচাতে কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।