'কৈলাস ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং-ই ফাঁসিয়েছে', এজলাসে CID তদন্তের দাবি পামেলার
রাকেশ সিং-এর অবশ্য দাবি, তিনি এসবের সাতে-পাঁচে নেই। কিছুই জানেন না তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভোটের মুখে যুবনেত্রীর গ্রেফতারিতে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি। অথচ পামেলা গোস্বামীর অভিযোগের আঙুল দলের একাংশের দিকেই। কোকেন-সহ গ্রেফতারির পর কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা রাকেশ সিংকে কাঠগড়ায় তুললেন পামেলা। রাকেশের অবশ্য দাবি, তিনি এসবের সাতে-পাঁচে নেই। কিছুই জানেন না তিনি।
ভোটের মুখে এমন ঘটনায় কার্যত বিড়ম্বনায় পড়েছে বিজেপি। গতকাল কলকাতা থেকে কোকেন-সহ গ্রেফতার হন বিজেপি যুব মোর্চার নেত্রী পামেলা, সঙ্গে ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। শুক্রবার নিউ আলিপুরের এনআর অ্যাভিনিউ থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃতের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম কোকেন পাওয়া গিয়েছে। পুলিসের দাবি মূল্য আনুমানিক কয়েক লক্ষ টাকা। তবে পামেলার গ্রেফতারির পিছনে পুলিস-প্রশাসনের চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: লক্ষ লক্ষ টাকার কোকেন-সহ গ্রেফতার BJP যুব নেত্রী, কে এই পামেলা গোস্বামী?
অথচ পামেলার গলাতেই উল্টো সুর। শনিবার পামেলা, তাঁর গাড়ির চালক এবং প্রবীরকে আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা দেখে আদালত চত্বরেই কার্যত চিত্কার জুড়ে দিলেন ধৃত বিজেপি নেত্রী। তাঁর গ্রেফতারির জন্য কাঠগড়ায় তোলেন বিজেপিরই এক নেতা রাকেশ সিংকে।
এ দিন গলা চড়িয়েই পামেলা বলেন, 'আমি চাই সিআইডি তদন্ত হোক। বিজেপির রাকেশ সিং যেন গ্রেফতার হয়। এটা ওর চক্রান্ত। কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং যেন অ্যারেস্ট হয়। এটা ওর চক্রান্ত ছিল। পরে এজলাসে তোলার সময়েও পামেলার মুখে রাকেশের নাম শোনা তিনি বলেছেন, রাকেশ সিং ইচ্ছে করে ওই ছেলেটাকে পাঠিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত কাজের জন্য পাঠিয়েছিলেন। আমি চাই সিআইডি, সিবিআই সবাই তদন্ত করুক।
আরও পড়ুন: 'মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না BJP', মহিলা ভোটে চোখ অভিষেকের
কে এই রাকেশ সিং, বন্দর এলাকায় ডাকাবুকো নেতা হিসেবে পরিচিত রাকেশ। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ঠিক আগে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। রাজ্য বিজেপির বস্তি উন্নয়ন শাখার আহ্বায়কের পদ পান। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও ছিল। গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ কলকাতায় শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে মিছিল করার কথা ছিল, তা আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন বন্দর এলাকার নেতা রাকেশ। পাশাপাশি রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত রাকেশ। তবে পামেলার সঙ্গে রাকেশের দ্বন্দ্ব কোথায় তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
উল্লেখ্য, ১০ মাস আগে পামেলার বাবা কৌশিক গোস্বামী পুলিসে অভিযোগ জানান, প্রবীরই পামেলাকে মাদকের নেশা ধরিয়েছেন। গত বছর ৮ এপ্রিল পুলিস কমিশনার, যুগ্ম কমিশনার অপরাধ এবং যাদবপুর থানার অফিসার ইন চার্জের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন পামেলার বাবা।
আরও পড়ুন: 'চক্রান্ত করে ফাঁসানো হলে আন্দোলনে নামব' কোকেন-সহ BJP নেত্রীর গ্রেফতারে মন্তব্য Dilipএর
অভিযোগপত্রে তিনি জানান, ব্যবসার সূত্রেই প্রবীর কুমার দে-র সঙ্গে পামেলার বন্ধুত্ব। দুজনে একটি ইন্টেরিয়ার ডেকোরেশনের ব্যবসায় পার্টনার ছিলেন। কৌশিক গোস্বামীর অভিযোগ, আস্তে আস্তে দু-জনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। প্রবীরই পামেলাকে মাদকের নেশা ধরায়। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের অনুরোধ করেন তিনি। লালবাজার সূত্রে খবর, এই অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পামেলাকে ট্র্যাক করতে শুরু করে পুলিস। তবে দোষী কে এখনও তা স্পষ্ট নয়। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিস।