পঞ্চায়েতে বিজেপিকে রুখতে উন্নয়ন অস্ত্র তৃণমূলের
বিজেপিই পয়লা শত্রু। গেরুয়া শিবিরকে ঠেকাতে উন্নয়নই হাতিয়ার তৃণমূলের।
কমলিকা সেনগুপ্ত
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। হাতে আর মাত্র এক মাস। তবে পঞ্চায়েতের রণনীতি ইতিমধ্যেই সাজিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুর বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখেই ভোটে লড়াই করবে তৃণমূল।
রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী পরিসর দখলের চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। তারাই এখন তৃণমূলের পয়লা নম্বর দুশমন। ফলে, বিজেপির মোকাবিলায় উন্নয়নকেই অস্ত্র করছে তৃণমূল। সঙ্গে রয়েছে তৃণমূলের শক্তিশালী সংগঠন। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তাই সেই ফাটল মেরামত করতে নেমে পড়েছে তৃণমূল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে দলের সর্বোচ্চা নেতৃত্বের তরফে। পাশাপাশি বিক্ষুব্ধদের অভিযোগগুলিকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, ভাল কাজ করেও টিকিট না পাওয়া নেতা-নেত্রীদের নাম দলনেত্রীকে দেওয়া হবে। তাঁদের জন্য আগামী গিনে অন্য ব্যবস্থা করবে তৃণমূল। তবে, টিকিট বণ্টন বা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে ক্ষোভ থাকলে জেলার পর্যবেক্ষককে জানালেই হবে। এ জন্য রাজ্য অফিসে আসার দরকার নেই বলে বার্তা দেওয়া হয়েছে ঘঁসফুলের তরফে।
ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ফাঁকেই পঞ্চায়েতের প্রস্তুতি দেখে এসেছেন তিনি। প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন। বিভিন্ন জেলার পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের। প্রতি জেলার বিধায়কদের নিয়ে গঠিত হয়েছে স্টিয়ারিং কমিটি। শনিবার রাতের মধ্যেই রাজ্যের স্টিয়ারিং কমিটির কাছে জেলা পরিষদের প্রার্থীদের তালিকা জমা দেবে সংশ্লিষ্ট জেলার স্টিয়ারিং কমিটিগুলি ও পর্যবেক্ষকরা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যের স্টিয়ারিং কমিটি। এভাবেই মঙ্গলবারের মধ্যে ত্রিস্তরের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে খবর।
প্রচার
দলনেত্রীই তৃণমূলের মুখ। তাঁকে সামনে রেখেই একের পর এক ভোটে জয়লাভ করছে রাজ্যের শাসক দল। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। রাজ্যের শীর্ষ নেতারা যাবেন প্রচারে। সেই তালিকায় রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস, ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
উন্নয়নে জোর
প্রচারে জোর দেওয়া হবে সরকারের উন্নয়নে। গ্রামীণ বাংলায় কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরতে বই ছাপানো হবে। সাম্প্রদায়িক প্রচার ও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, ''বিরোধীদের কোনও কাজ নেই। ধর্ম নিয়ে মানুষকে উস্কানি দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের মোকাবিলা করতে ব্যর্থ তারা। তাই নির্বাচনে ভয় পাচ্ছে ওরা।''
আরও পড়ুন- ১লা এপ্রিল থেকে বাড়ছে জাতীয় সড়কে টোল, মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা