ক্রমশই জটিল হচ্ছে পার্ক স্ট্রিট জোড়া খুনের রহস্য
পার্ক স্ট্রিট জোড়া খুন কাণ্ডে রহস্য আরও ঘনীভূত। ভুয়ো ভোটার কার্ড ব্যবহার করে ঘর ভাড়া নিয়েছিল আততায়ী। আসল শম্ভুকুমার গুপ্তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিস। তাহলে পার্ক স্ট্রিটের এম্পায়ার
হোটেলে খুন হওয়া দুজন কারা? হত্যাকারীই বা কে? আরও অন্ধকারে পড়ে গেল পুলিস। ভোটার কার্ডের ঠিকানা ধরেই গোয়েন্দারা পৌছে গিয়েছিলেন বিহারের নালন্দায়। সেখানে তাঁরা কথা বলেন শম্ভুকুমার গুপ্তার
সঙ্গে। নিহত তরুণী এবং বালিকার ছবি দেখেও চিনতে পারেননি শম্ভুকুমার এবং তাঁর প্রতিবেশীরা। পুলিস নিশ্চিত হয়ে যায়, ওই সময় কলকাতায় আসেননি শম্ভু। অর্থাত্ পরিচয় গোপন করতেই ভুয়ো আইকার্ড
ব্যবহার করে আততায়ী।
পুলিস জানতে পেরেছে, গত সোমবার রফি আহমেদের কিদওয়াই রোডের হোটেল ম্যাজিস্টিকে আগে গিয়েছিলেন ওই তিনজন। ঘর পছন্দ হয়নি। হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা দালাল ধরেই তাঁরা চলে আসেন
হোটেল এম্পায়ারে। ওই দালালই জানিয়েছে, তিনজন ট্যাক্সি করে আসেন। ম্যাজেস্টিক হোটেলের সিসিটিভিতে সন্দেহভাজন আততায়ীর যে ছবি ধরা পড়েছে, তার সঙ্গে মিল নেই ভোটার কার্ডের ছবির। সিসিটিভিতে
ধরা পড়েনি ট্যাক্সির নম্বরও। তদন্তকারীদের মতে, ট্যাক্সিটিকে চিহ্নিত করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, কোথা থেকে ওই তিনজন ওঠেন। তরুণী ও বালিকার চেহারা-সাজ-পোশাক দেখে পুলিসের সন্দেহ, তাঁরা বিহার বা
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। শিয়ালদহ-হাওড়ায় উনত্রিশে জুন সকালে বিহার বা ঝাড়খণ্ড থেকে কোন কোন ট্রেন আসে, তা জানার পরই প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখবে পুলিস। তদন্তকারীদের অনুমান, ফুটেজে
তিনজনকে দেখা গেলে, তাঁরা কোথা থেকে এসেছিলেন, সে ব্যাপারে জট খুললেও খুলতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে দুজনের মৃত্যু হয়। তড়িদাহত বা অতিরিক্ত ঘুমের
ওষুধে মৃত্যু, এ দু ক্ষেত্রেই এমনটা হতে পারে। হোটেল এম্পায়ারের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া গ্লাসের অবশিষ্টাংশ পরীক্ষা করে পুলিস জানতে পেরেছে, জলে ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়। তড়িদাহতও যে করা হয়েছিল,
তরুণী ও বালিকার কব্জির কালো দাগ থেকেও তা পরিষ্কার। পুলিসের সন্দেহ, ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর দুজনকে তড়িদাহত করা হয়।