ফের যাত্রী হয়রানির অভিযোগ বেসরকারি বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে
স্পাইস জেটের পর এবার জেট এয়ারওয়েজ। ফের প্রকাশ্যে এল বেসরকারি বিমান সংস্থার অমানবিক মুখ। স্নায়ু রোগে আক্রান্ত অঞ্জলি আগরওয়ালকে হুইল চেয়ার দিতে অস্বীকার করল জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ।
স্পাইস জেটের পর এবার জেট এয়ারওয়েজ। ফের প্রকাশ্যে এল বেসরকারি বিমান সংস্থার অমানবিক মুখ। স্নায়ু রোগে আক্রান্ত অঞ্জলি আগরওয়ালকে হুইল চেয়ার দিতে অস্বীকার করল জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ। লিম্ব গার্ডেল মাসকিউলার ডিসট্রোফিতে আক্রান্ত অঞ্জলি আগরওয়ালের চলত্শক্তি নেই বললেই চলে। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও বিমান অবতরণের সময় তাঁকে হুইলচেয়ার দিতে চায়নি বিমান সংস্থা।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রয়ারি, পাইলটের আপত্তিতে কলকাতা থেকে গুয়াহাটিগামী স্পাইস জেট সংস্থার বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত জিজা ঘোষকে। এরপর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সেরিব্রাল পলসির শিক্ষিকা জিজার অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থার তরফে পাইলেটর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়। স্পাইস জেট কর্তৃপক্ষের তরফে ক্ষমা চাওয়া হলেও কেন একজন যাত্রীকে এই হয়রানির শিকার হতে হল, তার কোনও সদুত্তর কিন্তু মেলেনি। এগুলো তো নজিরবিহীন অমানবিকতার দুটি পৃথক নজির।
বেসরকারি একটি সংগঠনের সমীক্ষা অনুযায়ী সামগ্রিক চিত্রটা আরও ভয়ঙ্কর। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘরোয়া বিমানে যাত্রী হয়রানির অভিযোগের সংখ্যা মোট ১২৩৬টি। যাত্রী পরিষেবা আক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা প্রতি ১০,০০০ যাত্রী পিছু ২.৩। বেসরকারি সংস্থার অভিযোগের খতিয়ানের তালিকাও দীর্ঘ। প্রতি ১০,০০০ যাত্রী পিছু জেট এয়ারলাইন্সের অভিযোগের সংখ্যা ১.৪। কিংফিশারেরও একই। স্পাইস জেটে অভিযোগের সংখ্যা প্রতি ১০,০০০ যাত্রী পিছু ১.৫ জন। এছাড়া জেট এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া (ঘরোয়া), ইন্ডিগো ও গো এয়ার-এর যাত্রী হয়রানির অভিযোগের সংখ্যা যথাক্রমে, ১.৬, ১.৭, ৩.৩ ও ৯ জন।
সূত্রে খবর, বিভিন্ন বিমানসংস্থার বিরুদ্ধে প্রতি মাসে অনুমানিক ২০ থেকে ৩০টি যাত্রী পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয় এনসিএই অথবা ন্যাশনাল কনজিউমার হেল্পলাইনে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে যাত্রী অভিযোগ থাকলেও ঘরোয়া বেসরকারি বিমান সংস্থার অনুপাতে তা অনেকটাই কম বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে মূল অভিযোগের খতিয়ানে দেখা গিয়েছে, ১৩.১১ শতাংশ টিকিট ফেরত দেওয়া হয় না। জিনিস হারায় ১৮.০৩ শতাংশ যাত্রীর। ৪.৯২ শতাংশ যাত্রীর ক্ষেত্রে টিকিট ফেরতে দেরি হয়। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগ ৬৩.৯৩ শতাংশ।
সাম্প্রতিককালে একের পর এক অমানবিকতার নজিরের জেরে এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে বেসরকারি বিমানে যাত্রীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, কর্তব্যে চূড়ান্ত গাফিলতির প্রশ্নও উঠছে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। বিভিন্ন বেসরকারি বিমান সংস্থা বহুল অর্থের বিনিময়ে ত্রুটিবিহীন যাত্রী পরিষেবা ও সুরক্ষার আশ্বাস দিলেও আদতে কতটা কার্যকরী হয় সেই প্রতিশ্রুতি, প্রশ্ন উঠছে তাই নিয়েও।