কলকাতা মেডিক্যালের হেল্পলাইনের দৌলতে মর্গে থাকা রোগীও 'বেঁচে' রইলেন টানা ৬ দিন
পরিবারের লোকজনের দাবি, ফোন করলেই বলা হতো, রোগী ভালো আছেন, খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন। এভাবেই চলছিল
তন্ময় প্রামাণিক
বাড়ির লোকজন নিয়ম ভেঙে পাঁচতলায় রোগীর বেডে না পৌঁছালে জানতেই পারতেন না অনেক আগেই মারা গিয়েছেন তাঁদের আত্মীয়। মর্গে ঠাঁই হয়েছে কয়েক দিন আগেই। অথচ কলকাতা মেডিক্যালের রোগী পরিষেবার হেল্পলাইন নম্বরের দৌলতে ৬ দিন বেঁচে রইলেন হাওড়ার সলপের এক বৃদ্ধ।
আরও পড়ুন-মৃত্যুর দিনও মাবুদ নামে একজনকে একাধিকবার ফোন করেন হেমতাবাদের বিধায়ক, কে এই ব্যক্তি!
গত বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় হাওড়ার সলপের বাসিন্দা অজয় মান্নাকে(৬৮)। তার পর থেকেই হাসপাতালের হেল্পলাইনে ফোন করে রোজই অজয়ের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর করতে থাকেন বাড়ির লোকজন। পরিবারের লোকজনের দাবি, ফোন করলেই বলা হতো, রোগী ভালো আছেন, খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন। এভাবেই চলছিল। মঙ্গলবার অজয়বাবুকে একটি ফোন দেওয়ার জন্য জোর করেন তাঁর ছেলে ও পরিবারের লোকজন। নিয়ম ভেঙে তাঁরা উঠে যান হাসপাতালের গ্রিন বিল্ডিংয়ের পাঁচতলার ৪০৪ নম্বর বেডে। সেখানে গিয়ে দেখেন রোগী নেই। তার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় খোঁজ খবর।
মেডিক্যালের বিভিন্ন অফিস ঘুরে অজয়বাবুর পরিবারের লোকজন পৌঁছে যান পুলিস ফাঁড়িতে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ভর্তির দিন অর্থাত্ বৃহস্পতিবারই মৃত্যু হয়েছে অজয়বাবুর। কিন্তু হেল্পলাইন থেকে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।
অজয়বাবুর ছেলে বলেন, বাবা ক্যান্সার আক্রান্ত। অস্ত্রোপচার করার জন্য গত বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে আমরা নিয়ে যাই। শরীরে সামান্য জ্বর থাকার কারণে সেখানে চিকিৎসকরা এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল ট্রান্সফার করেন। বেড নেই বলে সেখান থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। দুপুর ১টা নাগাদ সেখানে বাবাকে ভর্তি করি। আমাদের একটি ফোন নাম্বার দেওয়া হয়। বলা হয় ওই নম্বরে ফোন করে বাবার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে এবং সুপারের অফিসে এসে রোগীর খোঁজ নিতে ।
আরও পড়ুন-১৭ জুলাই প্রকাশিত হবে উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল, কোন ওয়েবসাইটে দেখবেন জেনে নিন
হাসপাতালের কথা মতো বৃহস্পতিবার থেকে খোঁজ নিচ্ছিলাম বলে জানিয়েছেন অজয় মান্নার ছেলে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকবারই ফোনে এবং দেখা করার পর বলা হয় রোগী ভালো আছেন। আজ একটি ফোন দেব বলে আমরা জোর করি। একটু জোর করেই বেডে পৌঁছে দেখি বাবা নেই। এরপর খোঁজখবর শুরু করি। এখানকার বিভিন্ন অফিসে ঘোরাঘুরি করে এই দুপুর বেলায় আড়াইটার সময় আমরা জানতে পারি, গত বৃহস্পতিবার দিন ভর্তির পরই বাবার মৃত্যু হয়েছে । আর এই কদিন ফোনে এবং চিকিৎসকরা দেখা করার পর বলে গেলেন রোগী ভালো আছেন।