শহরে সাইকো কাণ্ড- রহস্যের জাল গুটিয়ে এনেছে পুলিস, রহস্যের মূলে রয়েছে পারিবারিক অশান্তি, চিরকুট পর পর সাজিয়ে পুলিস পৌছে যাচ্ছে কঙ্কাল রহস্যের গোড়ায়
দেবযানী-পার্থদের লেখা অসংখ্য চিরকুট পর পর সাজিয়ে পুলিস পৌছে যাচ্ছে কঙ্কাল রহস্যের গোড়ায়।
ওয়েব ডেস্ক: রহস্যের জাল গুটিয়ে এনেছে পুলিস। গোয়েন্দাদের কাছে এখন অনেকটাই স্পষ্ট সাইকো রহস্য। দেবযানী-পার্থদের লেখা অসংখ্য চিরকুট পর পর সাজিয়ে পুলিস পৌছে যাচ্ছে কঙ্কাল রহস্যের গোড়ায়।
যোগ সাধনায় মগ্ন ছিলেন দেবযানী। বাবা -ভাইয়ের সঙ্গে কথা হত চিরকুটে। সেই চিরকুটই এখন হাতিয়ার পুলিসের।
১. চিরকুট
দে পরিবারের চিরকুটগুলি পরপর সাজিয়েই ঘটনা অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে পুলিসের কাছে।
চিরকুট থেকে জানা গিয়েছে- যোগানন্দ পরমহংসের পথে ক্রিয়া যোগের অভ্যাস করতেন দেবযানী।
জল ছাড়া কিছু খেতেন না।
উপোস করেই যে দেবযানী মারা গিয়েছিলেন সে বিষয়টিতেও নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিস।
পার্থ দাবি করেছিলেন গত ২৯ডিসেম্বর মৃত্যু হয় দেবযানীর। পুলিসও মনে করছে পার্থর দাবি অনেকটা ঠিক। কারণ
চিরকুটে তারিখ দিতেন দেবযানী।
ডিসেম্বর মাসের পর আর কোনও চিরকুট পাওয়া যায়নি।
চিরকুট থেকে যখন রহস্যের কিনারা করতে চাইছেন পুলিস। তখনই পাভলভ হাসপাতালে সোমবার চিকিত্সকদের সামনে অনেকটা মুখ খুলেছেন পার্থ। প্রায় একঘণ্টা তিনি কথা বলেন ডাক্তারদের সঙ্গে
ডাক্তারদের কাছে তাঁর দাবি, তিন দিন পর মেয়ের মৃত্যুর খবর জেনেছিলেন অবরবিন্দ। না খেয়ে ধ্যান করছিলেন দেবযানী। অনেক চেষ্টা করেও সে বা অরবিন্দ তাঁকে খাওয়াতে পারেননি। দেবযানীর প্রবল ইচ্ছাশক্তির কাছে সে দিন হার মেনেছিলেন তাঁরা। অপুষ্টিতেই মৃত্যু হয় দেবযানীর।
কিন্তু মৃতদেহ রেখে দিয়েছিলেন কেন?
পার্থর উত্তর, পোষ্যরাই ছিল প্রিয় বন্ধু । দিদিও খুব ক্লোজ ছিল। তাই ওসব গন্ধ-টন্ধ আমার কিছু মনে হত না। রাতে একবার জানলা খুলতাম।
গন্ধ রহস্যের সমাধান করতে গিয়ে শহরের এক নামী ইলেকট্রনিক দোকানের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিস। কিছু দিন আগে দে বাড়িতে টিভি লাগান ওই দোকানের কর্মী। তাঁরাও কোনও গন্ধ পাননি পুলিসকে জানিয়েছেন। পুলিস জানতে পেরেছে অরবিন্দ দে নিয়মিত মদ্যপান করতেন। আত্মহত্যার রাতেও মদ্যপান করেছিলেন তিনি।
২. সম্পত্তি রহস্য
সোমবার রবিনসন স্ট্রিটের বাড়ি থেকে অরবিন্দ দের খসড়া উইল উদ্ধার হয়েছে। কাকা অরুণ দে পুলিসকে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে অরবিন্দ দে সম্পর্ক রাখুক চাইতেন না পার্থ। পার্থও মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে কাকার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন।
বাবা খুব ভাল মানুষ ছিল। বাড়ির কাছে কাফেতে বাবা ও কাকা সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা করত। পরে সে সব ভেস্তে যায়। বাবা খুব হতাশ হয়ে পড়ে। তার পরেই আত্মহত্যা করল।
চিরকুট , খসড়া উইল ছাড়াও রবিনসন স্ট্রিটের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ওষুধ ও ডায়েরি। যা সবই পরীক্ষা করছে পুলিস। এই রহস্যের মূলে যে রয়েছে পারিবারিক অশান্তি তা নিয়ে এক রকম নিশ্চিত পুলিস। দেবযানীর মৃত্যুর জন্য পুলিস দায়ী করছে তার ক্রিয়াযোগ সাধনাকেই। রহস্যের জাল গুটিয়ে এসেছে। ফরেন্সিক, ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পেলেই শেষ দাড়ি টানবে পুলিস।