সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিস! রাজভবন থেকে গোপন রিপোর্ট গেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে

সোমবার সকালে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে ফোন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ফোনে উষ্মাপ্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জানান নজর রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

Updated By: Feb 4, 2019, 03:24 PM IST
সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিস! রাজভবন থেকে গোপন রিপোর্ট গেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে

নিজস্ব প্রতিবেদন : পুলিস কমিশনার রাজীব কুমরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে কলকাতা পুলিসের হাতে সিবিআই আধিকারিকদের চরম হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা পুলিস বনাম সিবিআই লড়াইয়ে তোলপাড় রাজ্যস্তর থেকে জাতীয় রাজনীতি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে কি ৩৫৬ ধারা বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে চলেছে? রাজনৈতিক মহল থেকে শহরের অলিগলিতে এখন ঘুরছে এই একটাই প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে রাজভবন থেকে গোপন রিপোর্ট গেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।

সূত্রের খবর, রাভবন থেকে ইমেল মারফত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে সেই গোপন রিপোর্ট। খুব স্বাভাবিকবাবেই রিপোর্টে কী লেখা আছে, তা জানা যায়নি। গতকালকের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপালের কাছে। খানিক আগেই রাজভবন থেকে সেই রিপোর্ট মেল করা হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।

আরও পড়ুন, সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টরকে পালটা প্রতারণা মামলায় নোটিস কলকাতা পুলিসের

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে ফোন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ফোনে কালকের ঘটনায় রাজ্যপালের কাছে উষ্মাপ্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, তাদের আটক করা, ঘেরাও করার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এই ঘটনাকে 'অভূতপূর্ব ও অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক' বলে রাজ্যপালকে ফোনে উল্লেখ করেন রাজনাথ সিং।  জানান, কলকাতার সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

রাজনাথ সিংয়ের ফোনের পরই তত্পর হয়ে ওঠেন রাজ্যপাল। সেন্ট্রাল আইবি-র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। পাশাপাশি সূত্রে খবর, রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে দিল্লিতেও ডেকে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত কালকের ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিবিআই। সূত্রে খবর, রিপোর্টে কলকাতা পুলিসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে সিবিআই। কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে, কলকাতায়  সিবিআই অফিসারদের নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে, তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের ৩ আইপিএস কর্তার বিরুদ্ধেও রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

আরও পড়ুন, "সিবিআই-পুলিস মুখোমুখি! দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন", সংসদে বিস্ফোরক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রসঙ্গত, ডিএসপি তথাগত বর্ধনের নেতৃত্বে সিবিআই অফিসারদের ৪০ জনের দল রবিবার সন্ধ্যায় চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যায়। সিপির বাসভবনে ঢোকার মুখেই তাদের আটকায় কলকাতা পুলিস। রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েন সিবিআই অফিসাররা। রাস্তার উপরই দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। কলকাতা পুলিস কর্তাদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতি বেঁধে যায় সিবিআই আধিকারিকদের।

এরপর তথাগত বর্ধন সহ সিবিআই অফিসারদের আটক করে টেনে হিঁচড়ে শেক্সপীয়ার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি, সিজিও কমপ্লেক্স, নিজাম প্যালেস ঘেরাও করে কলকাতা পুলিস। জয়েন্ট ডিরেক্ট পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকেও ঘরবন্দি করে ফেলা হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয় সিবিআই। রাতেই সিজিও কমপ্লেক্স , নিজাম প্যালেসের সামনে নামে আধাসেনা। এরপর থানা থেকে অনেক রাতে ছাড়া হয় সিবিআই অফিসারদের।

.