রাজ্যপালকে সাধারণ মানুষ নির্বাচিত করেননি, রাজ্যের দায়িত্ব সরকারের: ঋতব্রত
প্রশাসনিক বৈঠক ঘিরে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে মুখ খুললেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, রাজ্যপালকে মানুষ নির্বাচিত করেননি। কিন্তু রাজ্য সরকারকে করেছে।
মঙ্গলবার ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন,''সংবাদমাধ্যমে দেখেছি রাজ্যপাল প্রশাসনিক আধিকারিকদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি বৈঠক করতে চান। কিন্তু প্রশাসনের কর্তারা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে রয়েছেন তাঁরা বৈঠকে থাকতে পারবেন না। রাজ্য চালাবার দায়িত্ব মানুষের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের। রাজ্যপালকে মানুষ নির্বাচিত করেনি।''
রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের সংঘাত মঙ্গলবার নিয়েছে নয়া মোড়। রাজ্যপাল প্রশাসনিক বৈঠক ডাকার পরও ভেস্তে গিয়েছে। কোনও প্রশাসনিক কর্তাই হাজির হননি। আর তারপরই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না তোপ দেগেছেন, "সবাই জানে ১১ তারিখ (পড়ুন কার্নিভাল) কার পাবলিসিটি হয়েছিল ৪ ঘণ্টা ধরে।"
ঘটনার সূত্রপাত, সজনেখালি ও ধামাখালিতে মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন জগদীপ ধনখড়। কিন্তু ওই বৈঠকে আমন্ত্রিত জেলাশাসক, পুলিস সুপার ও জেলা সভাধিপতিদের কেউই হাজির হননি। রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া বৈঠকে যাওয়ার সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক। অসুস্থতার কারণে বৈঠকে আসেননি তিনিও। আরে এতে চটে যান রাজ্যপাল। প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যপাল কি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ? রাজ্যপাল বৈঠক করতে চাইলে সরকারের অনুমতি কেন লাগবে?
প্রসঙ্গত, বলে রাখি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে আটকে পড়া বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধারে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তখন থেকে শুরু সংঘাত। তখন রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য সরকার। জিয়াগঞ্জে খুনের ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল। বলেছিলেন,''তদন্তের গতিপ্রকৃতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট হচ্ছে।'' এরপর দুর্গাপুজোর কার্নিভালে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে দু'দিন পর অভিযোগ করেন ধনখড়। এবার প্রশাসনিক বৈঠকে নিয়ে সংঘাত উঠল চরমে।
এনিয়ে রাজ্য সরকারকে দুষেছে বিজেপি। রাহুল সিনহা আমলাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যপালের বৈঠকে যাননি আমলারা। আমলারা যেন মনে রাখেন, মুখ্যমন্ত্রী চিরকাল থাকবেন না। কিন্তু, সরকার থাকবে। রাজ্যপাল রাজ্যের কল্যাণে জন্য বৈঠক ডেকে ছিলেন। এতে গেলে কোন ক্ষতি হতো না। সংবিধানের অবমাননার অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর কথায়, ''রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তার সঙ্গে রাজ্য সরকার যে ব্যবহার করছে, তাঁকে যেভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে, তা সংবিধানকে অপমান করার সমান।'' মুকুল আরও বলেন,''এরাজ্যে আইনের শাসন নেই। গণতন্ত্র নেই। এটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।''
আরও পড়ুন- নিরুদ্দেশ শোভন-বৈশাখী, কোথায় গিয়েছেন তাঁরা? কর্মীদের প্রশ্নের মুখে নেতৃত্ব