অর্নবাংশু নিয়োগী: অনিয়মের কারণ মন্ত্রীর মেয়ের স্কুলের চাকরি গিয়েছিল। সেই চাকরি পেয়েও তা শেষপর্য়ন্ত হারাতে হল শিলিগুড়ির ববিতা সরকারকে। অথচ ঠিক এক বছর আগেই ওই রায়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে ববিতা সরকারের। এখন তাঁকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। রায় শোনার পরই হাইকোর্টের বারান্দার দাঁড়িয়ে চোখ মুছছিলেন ববিতা। বলছিলেন যে কারণে চাকরি গিয়েছে তার পেছনে তাঁর কোনও হাত নেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-এগরায় বাজি কারখানার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২ মহিলাও


ববিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অ্য়াকাডেমিক স্কোরের ক্ষেত্রে ভুল তথ্য দিয়েছেন তিনি। সেই কারণেই তিনি ২ নম্বর বেশি পেয়েছিলেন। তার ফলেই তিনি মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে পেছনে ফেলে স্কুলে চাকরি পান। এখন সেই ২ নম্বর কমিয়ে দিতেই তাঁর স্কোর চলে এসেছে তাঁর নীচে থাকা প্রার্থী অনামিকা রায়ের পরে। তাতেই চাকরি গিয়েছে ববিতার। নতুন করে নিয়োগ পাচ্ছেন অনমিকা।


এদিন, রায় দিতে গিয়ে ববিতাকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বহু অভিযোগ থাকার পরও আপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারত। আদালতকে এইটুকু ক্রেডিট দিন। এই কদিন যে বেতন পেয়েছেন তা ফেরত নেওয়া হচ্ছে না। এটুকু সান্তনা নিয়ে আদালত থেকে যান। পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিন।  আপনি রেজিস্টারকে ১৫ লাখ টাকা জমা দেবেন। 


বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। সেই একই বিচারপতির নির্দেশেই চাকরি চলে গেল তাঁর। এনিয়ে ববিতা বলেন, যা সত্য়ি তা হয়েছে। আমি আগেই বলেছিলাম আদালতের রায় নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। এখন এটাই মেনে নিতে হবে। তবে আমরাও কিছু বক্তব্য রয়েছে। সেই বক্তব্য রাখার জন্য আমি পরবর্তীতে আইনি সাহায্য নেব। গত এক বছর ধরে আইন লাড়াই লড়েছি। চাকরি করেছি। পারিপার্শ্বিক অনেক কিছুর সঙ্গেই লড়াই করেছি। আজ চাকরিটা চলে গেল। আমরা ভুল নাকি কমিশনের ভুল জানি না। এতবার ভেরিফিকেশন হয়েছে। কেন তারা আমাকে আগে বলল না! এক বছর চাকরি করার পর চাকরি কেড়ে নেওয়া মোটেও কাম্য নয়।


পাশাপাশি এদিন রায় বের হওয়ার পর ববিতা বলেন, বেশি দিয়েছিল। অনেকে এতদিন চাকরি করেছেন। তারা কেউ কারও নম্বর জানে না। আমরা শুধু একটি তালিকা পেয়েছিলাম। সেই লিস্ট অনুযায়ী আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমার কেসেই বলা হয় কে কত নম্বর পেয়েছে তা প্রকাশ করা হোক। যদি নাইন টেনের বিষয়টি দেখেন তাহলে আমার নম্বর ঠিকিই রয়েছে। আর যদি ইনেভশ্রেন ও টুয়েলভ দেখি তাহলে আমার ২ নম্বর বেশি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমি আমার আইনজীবীকে জানাই। কেন এটা কমিশন করেছে তা বুঝতে পারছি না। ওই ২ নম্বর কম হলে আমরা র্যাঙ্ক পিছিয়ে যায়। আমার লড়াইয়ের আর বাস্তবতা থাকে না।  আমি লড়াই করেছিলাম এসএসসিতে অনিময়মের বিরুদ্ধে। চাকরির দাবি আমি করিনি।


আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়ে কী বললেন অনামিকা রায়? ন্যায়ের জয় হয়ই। কোনও না কোনও সময় ন্যায়বিচার পাব এমনটাই আশাবাদী ছিলাম। ববিতা সরকার যখন চাকরিতে যোগ দেন তখন আমি জানতাম না ওই অ্য়্াকাডেমিক স্কোরে ভুল রয়েছে। ডিসেম্বর মাসে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ববিতা সরকারের অ্য়াকাডেমিক স্কোরে ভুল আছে। তাঁর স্কোর থেকে ২ নম্বর কমে গেল তাঁর র্যাঙ্ক অনেকটাই কমে যায়। 


ববিতা নন, চাকরির প্রকৃত দাবিদার তিনিই। এই দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন অনামিকা রায়। অনামিকার দাবি, ফর্ম পূরণের সময় ববিতা লিখেছিলেন যে তিনি স্নাতক স্তরে  ৮০০ র মধ্যে ৪৪০ পেয়েছেন, এবং শতাংশের হিসাবে ৬০ শতাংশ পেয়েছেন। যদি হিসাব করে দেখা যাচ্ছে যে শতাংশের হিসাবে এটি ৬০ শতাংশের কম। অনামিকার আরও দাবি, কেউ যদি ৬০ শতাংশ বা তার বেশি পান তাহলে তিনি ৮ নম্বর পাবেন। আর কেউ যদি ৪৫ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পান তাহলে তিনি ৬ নম্বর পাবেন। তাহলে হিসাব অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রের ববিতার প্রাপ্য নম্বর ৩৩ এর পরিবর্তে ৩১ হওয়া উচিত।  মোট নম্বরও ৭৭ এর পরিবর্তে ৭৫ হওয়া উচিত।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)