রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা, খুলল এসএসকেএম-র ইমার্জেন্সি, বেরিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী
"রাজ্যজুড়ে জুনিয়র ডাক্তাদের আন্দোলন যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। মুখ্যমন্ত্রী জোর করতে গেলে ফল ভয়ানক হবে।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : দুপুর ২টো পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারমধ্যেই খুলল এসএসকেএম-এর ইমার্জেন্সি। শুরু হল রোগী ভর্তি। চালু হল জরুরি বিভাগের পরিষেবা। আর ইমার্জেন্সি বিভাগ চালু হওয়ার পরই এসএসকেএম ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে, চিকিতসক নিগ্রহ ইস্যুতে এবার রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের দাবি করল ডাক্তাররা। এই ঘটনায় রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির হস্তক্ষেপ চেয়ে রাজভবন যাচ্ছে ডাক্তারদের একটি সংগঠন। দুপুর আড়াইটেয় রাজভবন যাচ্ছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স ওয়েস্ট বেঙ্গল।
মুখ্যমন্ত্রীর কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশের পরেও বিক্ষোভে অনড় ছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। সুবিচার চেয়ে বার বার স্লোগান দিতে থাকেন। শেষমেশ অরূপ বিশ্বাস নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ইমার্জেন্সি খোলান। শতরঞ্জি তুলে দেয় পুলিস। শুরু হয় রোগী ভর্তি। কিন্তু, ইমার্জেন্সি বা ওপিডি সবটাই এখন সামলাবেন সিনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, "রাজ্যজুড়ে জুনিয়র ডাক্তাদের আন্দোলন যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। মুখ্যমন্ত্রী জোর করতে গেলে ফল ভয়ানক হবে।"
আরও পড়ুন, 'কেন মারপিট করল? কেন মারা গেল?' NRS ইস্যুতে দু' তরফেই তদন্তের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলতে এদিন আসরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরএস কাণ্ডে ৫ জনকে গ্রেফতারের পরেও ধর্মঘট কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ায় জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে তোপ দাগেন তিনি। এসএসকেএম-এ দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "৪ দিন ধরে রোগী পড়ে আছে। কয়েকজন মিলে তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমার মন্ত্রী গিয়েছেন, পুলিস কমিশনার গিয়েছেন। যাঁরা নাটক করছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যাবস্থা নেব।" মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, "যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা কেউ জুনিয়র ডাক্তার নয়। তাঁরা আউটসাইডার। বিজেপি-সিপিআইএম উসকানি দিচ্ছে। শুধু হিন্দু-মুসলাম করা হচ্ছে।" হাসপাতালে রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এরপরই এসএসকেএম চত্বরে দাঁড়িয়ে রাজ্যের সমস্ত জায়গায় কর্মবিরতি তুলে ৪ ঘণ্টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। হুঁশিয়ারি দেন, "৪ ঘণ্টার মধ্যে যাঁরা কাজে যোগ দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব। সরকার তাঁদের আর কোনও সাহায্য করবে না।" কিন্তু হুঁশিয়ারিকে পাত্তা না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। গলায় আই-কার্ড ঝুলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর 'ওরা কেউ জুনিয়র ডাক্তার নয়, আউটসাইডার' মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান জুনিয়র ডাক্তাররা। মুহুর্মুহু স্লোগান ওঠে, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস।'