তৃণমূল বনাম বিজেপি- রাজ্যে কুস্তি, কেন্দ্রে দোস্তি

Updated By: Jul 24, 2014, 07:39 PM IST
তৃণমূল বনাম বিজেপি- রাজ্যে কুস্তি, কেন্দ্রে দোস্তি

শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি। রাজ্যে যুযুধান দুই দল। কেন্দ্রীয় স্তরে কিন্তু উলটপুরাণ। সেখানে ক্ষমতাসীন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা আনতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার বার্তা দিচ্ছে কেন্দ্র সরকারও। ভোটের ফল বেরনোর দু-মাস পর দু-দলের অবস্থান দেখে রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, রাজ্যে কুস্তি আর কেন্দ্রে দোস্তি।   

লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির উত্থান দেখে চিন্তিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিচুতলার রাজনৈতিক কর্মীরা যে ভাবে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তা দেখে মুখ্যমন্ত্রীর কপালের ভাঁজ বেড়েছে। ভোটের ফলে চাঙ্গা গেরুয়া শিবিরও। দু-হাজার ষোলোর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছেন রাহুল সিনহারা। রাজ্যে সংগঠন বাড়াতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের সংঘাত অনিবার্য। আর, বাস্তবে তা হচ্ছেও। দলীয় কর্মী খুনের ঘটনায় সন্দেশখালি ও ইলামবাজার ঘুরে গেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তৃণমূল ও বিজেপির রাজ্য নেতারা রোজই জড়িয়ে পড়ছেন বাকযুদ্ধে। কিন্তু, যদি রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দিল্লির দিকচক্রবালে চোখ রাখা যায় তাহলে ধরা পড়বে অন্য ছবি। লোকসভা ভোটের সময় নরেন্দ্র মোদীকে বারবার ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মোদী যখন প্রধানমন্ত্রীর গদিতে তখন একুশে জুলাইয়ের সভায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পদে মোদীর পছন্দের লোককে নিয়ে আসার বাধা সরাতে ট্রাই সংশোধনী বিলে সমর্থন দিয়েছে তৃণমূল। বার্তা আসছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকেও। এমসিআই আপত্তি করলেও কেন্দ্রের মধ্যস্থতায় এমবিবিএসের বাতিল হওয়া সব আসন ফেরত পেয়েছে রাজ্য।

বিপিএল তালিকার জন্যই শুধু নয়, দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকা পরিবারগুলির জন্যও বাড়তি চাল বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। মাওবাদী এলাকায় রাস্তাঘাটের উন্নয়নেও এসেছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ। রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গেছেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, পীযূষ গোয়েল ও ধর্মেন্দ্র প্রধান। নতুন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর নিয়োগ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন রাজনাথ সিং।

শপথ গ্রহণের পর নতুন রাজ্যপালের গলায় শোনা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা। তেসরা অগাস্ট দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। অরুণ জেটলির সঙ্গে আগেই দেখা করেছেন অমিত মিত্র। শোনা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীও এ বার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। বৈঠক হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও। বিরোধীদের অভিযোগ, সিবিআই সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করার পর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি নরম মনোভাব নিতে বাধ্য হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাধ্যবাধকতা আছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও। রাজ্যসভায় এখনও বিজেপি সংখ্যালঘু। তাই, বিভিন্ন বিল পাশে বিরোধীদের সমর্থন লাগবেই। ফলে, চলছে দেওয়া-নেওয়া। রাজ্যে কুস্তি চললেও দিল্লিতে দোস্তির বার্তা।

 

.