ওয়েব ডেস্ক : কলকাতার ট্রাফিক সিগন্যালে এখন বৃহন্নলাদেরদের দাপাদাপি। চড়া মেকাপে গাড়িতে টোকা। কাচ নামালেই ভিতরে ঢুকে আসছে হাত। অর্থাত্ টাকা দিন। বৃহন্নলাদের টাকা রোজগারের নতুন ট্রেন্ড। গৃহস্থের বাড়ি বা ট্রেন ছেড়ে তারা এখন রাস্তায় কেন? চব্বিশ ঘণ্টার অন্তর্তদন্ত।
কলকাতার সব ট্রাফিক সিগন্যালেই এই দৃশ্য এখন খুব কমন। আগে কোনও বাড়িতে বাচ্চা হলেই কোথা থেকে যেন ঠিক খবর পৌছে যেত ওদের কাছে। ব্যস, সেই বাড়িতে ঢুঁ। পাঁচশো-হাজারে মন ভরে না। পাঁচ, দশ বা পনেরো হাজার পর্যন্ত ওঠে তাদের দর। দরদস্তুর করে যা পেত, বাচ্চাকে আশীর্বাদ করে পকেটে পুরত টাকা। লোকাল বা দূরপাল্লার ট্রেনেও তাদের দেখা মেলে অহরহ। হাততালি শুনলেই শিরদাঁড়া সোজা হয়ে বসেন যাত্রীরা। কিন্তু সেই বৃহন্নলারা এখন নেমে এসেছে রাস্তায়। ট্রাফিক সিগন্যালে চলছে বাড়াবাড়ি। ভিনরাজ্যের হিজড়েরা এসে শহরের সিগন্যাল দাপাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী অনেকেই বৃহন্নলা সেজে টাকা তুলছে বলেও অভিযোগ উঠছে। ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মীরা অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। পেটের টানেই ভিক্ষাবৃত্তি করতে হচ্ছে তাদের।
২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট এদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু সমাজের সবস্তরের মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠেনি সচেতনতা। ফলে সমাজ স্বীকৃতি দেয়নি এদের। এই প্রয়োজনীয়তা থেকেই রাজ্যে তৈরি হয় ট্রান্সজেন্ডার বোর্ড। নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের অধীনে কাজ করে এই বোর্ড। সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও বৃহন্নলাদের স্বার্থে আরও অনেক কাজ করতে হবে জানাচ্ছেন সমাজকর্মীরা। অবশ্য পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে যে একটা বড় সমস্যা রয়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন এই সমাজকর্মীরা। হাত পেতে টাকা রোজগারের ধান্দা ছেড়ে দিতেই অনীহা অনেকের মধ্যে।
তবে ট্রান্সজেন্ডারদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে এবং ট্র্যাফিক সিগন্যালে দাপাদাপি রুখতে নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ। এদের চিকত্সার জন্য আর জি করে একটি স্পেশালাইজড ক্লিনিক তৈরির চিন্তাভাবনা চলছে। ইকো পার্কে তারা যাতে গাইডের কাজ করতে পারে, তা নিয়ে প্রান্ত কথা নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করছে হিডকো। একটি বেসরকারি সংস্থা কথাবার্তা চালাচ্ছে উবেরের সঙ্গে। উবের চালকের কাজ যাতে এরা করতে পারে, তা নিয়েই এই আলোচনা।
বাচ্চার বাড়ি, ট্রেন ছেড়ে এখন ট্রাফিক সিগন্যালে টাকার জুলুম কেন?