Saltlake: ফ্ল্যাটের খোলা জানলা দিয়ে ভনভনিয়ে ঢুকছে মাছি, দরজা ভাঙতেই মিলল যুবকের পচাগলা দেহ!
ডেলিভারি বয়েরা এসে উপরেই খাবার পৌঁছে দিত। ফ্ল্যাটের কোলাপসিবল গেটের ভিতর থেকেই সেই খাবার সংগ্রহ করে নিতেন শুভেন্দু।
দেবারতি ঘোষ: সল্টলেকের বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ। গন্ধ পেয়ে পুলিসে খবর দেন প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে পুলিস এসে সৌরভ আবাসন নামে ওই বহুতলের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিস। মৃতের নাম শুভেন্দু ভট্টাচার্য। বয়স ৪৩ বছর। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিস।
সল্টলেকের অত্যন্ত অভিজাত একটি আবাসন সৌরভ আবাসন। সেখানেই এই ঘটনা। এই আবাসনে মূলত সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত যাঁরা, তাঁরাই থাকেন। মায়ের সঙ্গে এই ফ্ল্যাটেই থাকতেন শুভেন্দু ভট্টাচার্য। বছর দুয়েক আগে প্রয়াত হন মা। তারপর থেকে শুভেন্দু একাই এই ফ্ল্যাটে থাকতেন। মাঝে মাঝে এক আত্মীয়ের বাড়িও চলে যেতেন। কিন্তু পাড়া প্রতিবেশী বা স্থানীয়দের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। এমনকি কোনও কথা জিজ্ঞাসা করলেও মিলত না উত্তর। পাশাপাশি, তাঁর গ্যারেজ ভাড়া নিয়েছিলেন একজন। তাঁর কথায়, তিনি টাকা দিতে গেলেও শুভেন্দু কোনও কথার উত্তর দিতেন না। ডাকলে সাড়া পাওয়া যেত না।
ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, শুভেন্দুর লিভারে সমস্যা ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই সেই সমস্যা ছিল। যে কারণে বছরখানেক আগে তাঁকে সল্টলেকেরই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে দীর্ঘদিন তিনি চিকিৎসা করান। তারপর তিনি ফিরে আসেন। গত ২০-২৫ দিন আগে তাঁর কোনও এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফ্ল্যাটে ফেরেন তিনি। কিন্তু গত ২০-২৫ ধরে তিনি আর ফ্ল্যাট থেকে বের হননি। বাজার করতে বেরতেন না। কোনও কাজেও বেরতেন না। ডেলিভারি বয়েরা এসে উপরেই খাবার পৌঁছে দিত। ফ্ল্যাটের কোলাপসিবল গেটের ভিতর থেকেই সেই খাবার সংগ্রহ করে নিতেন শুভেন্দু।
এরপরই সোমবার সকালে ফ্ল্যাটের নিরাপত্তারক্ষীরা দুগর্ন্ধ পান। খোঁজ করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ফ্ল্যাটের খোলা জানলা দিয়ে মাছি ভনভনিয়ে ঢুকছে, বের হচ্ছে। যা দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। এমনকি শুভেন্দুর ফ্ল্যাটে অনেক পোষ্য বিড়াল ছিল। প্রাথমিকভাবে কোনও বিড়ালের মৃত্যু হয়েছে ভাবলেও, দরজা ভাঙতেই আসল ঘটনা সামনে আসে। পুলিস প্রাথমিকভাবে মনে করছে, ৩-৪ দিন আগেই মৃত্যু হয় শুভেন্দুর। শৌচালয়ের সামনে রক্ত ও বমির চিহ্ন মিলেছে বলেও পুলিস সূত্রে খবর।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, কাঁকুরগাছিতে এক দাদা থাকেন শুভেন্দুর। যিনি আজ খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে আসেন। যদিও তাঁর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল শুভেন্দুর। মোটেই সুসম্পর্ক ছিল না দাদার সঙ্গে। ভাইজ্যাগে বড় কোম্পানিতে চাকরি করতেন শুভেন্দু। কিন্তু মায়ের মৃত্যুর আগেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। মূলত মায়ের দেখাশোনার জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর আর কোথাও যোগ দেননি। এদিকে মায়ের মৃত্যুর পর থেকে মানসিক অবসাদ তো ছিলই, সঙ্গে ছিল শারীরিক অসুস্থতাও।