আলো
রীনা নানো
রোজকার মত ওরা দুজন 'নাইট স্কুল' ক্লাস শেষে অন্ধকার গলিটা ধরে বাড়ি ফিরছিলোl গত চার বছরের অভ্যাস। সামনের বস্তির ঘরগুলোতে টিমটিম আলো ম্রিয়মাণ।
ছেলেটি জানতো এটা শুধুই বন্ধুত্ব নয়। সে বলে ওঠে: "আমি চাই আমরা বাকি জীবনটা এভাবেই এই পথ ধরেই চলবো। আমি তোমায় বেশি কিছু হয়তো দিতে পারবো না..." তার কথা শেষ হওয়ার আগেই মেয়েটির গলার স্বর ভেসে আসে: "আমাদের বস্তি আর এই রাস্তাটা যবে থেকে দেখেছি অন্ধকারে ভরা। তুমি কি আমার জীবন শুধু একটু আলোয় ভরাতে পারো?" বাতাসে ঘোরপাক খেতে থাকা এই শব্দগুলোকে ছেড়ে মেয়েটি সেদিন চলে যায়। বাকরোধ দাঁড়িয়ে থাকে ছেলেটি, একা।
পরের দিন মেয়েটি একাই ফিরছিলো। ছেলেটি সেদিন ক্লাসে আসেনি। সচারচর যা হয়না। তখনই গলিটার প্রায় শেষে ছেলেটিকে সে দেখতে পেলো। কাছে যেতেই ছেলেটি বলে উঠলো :"একটু দাড়াও। একবার চোখ বন্ধ করো"। মেয়েটি তাই করলো। সে অনুভব করলো যে ছেলেটি তার তালুতে নরম নড়তে থাকা কিছু রাখলো। "মেলে ধরো নয়ন তোমার "ভেসে এলো ছেলেটির স্বর...
চোখের পাতা খুলতেই নয়ন দেখলো জোনাকিদের চমক... আলোয় ভরা তার দুই তালু! তারা মেয়েটিকে ঘিরে উড়তে থাকে আর কানে আসে ছেলেটির কথা: "তুমি মোর জীবন আলো হয়েও তবেই পারবো ভরতে তোমার জীবন আলোয় মোর প্রিয়"। উজ্জ্বল জোনাকি মতো মেয়েটির চোখের মনি আর শান্ত হাসির রেখা তাদের জীবনের বাকি গল্পটা লিখেছিলো! (আরও পড়ুন- দ্বিজা )