নিজেই নিজের অবসাদ কাটিয়ে ঝলমলে হয়ে উঠুন
মন খারাপ? অবসাদে ভুগছেন? জীবনে বেঁচে থাকার আর কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করার আগেই নিজেই নিজের অবসাদ কাটানোর চেষ্টা করুন এই পাঁচটা উপায়ে--
পার্থ প্রতিম চন্দ্র
মন খারাপ? অবসাদে ভুগছেন? জীবনে বেঁচে থাকার আর কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করার আগেই নিজেই নিজের অবসাদ কাটানোর চেষ্টা করুন এই পাঁচটা উপায়ে--
৫) নিজের সঙ্গে কথা বলে অবসাদের আসল কারণটা জেনে নিন--নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন। পজেটিভ মন দিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন এমন অবসাদের আসল কারণটা ঠিক কী। আসলে আমরা বেশিরভাগ সময়ই অবসাদের আসল কারণটা খুঁজে পাই না। অবসাদের আসল কারণটা জানে আমাদের অবচেতন মন। কেউ আপনাকে ছেড়ে চলে গেল, আপনার খুব মন খারাপ। কিন্তু আপনার মন খারাপের আসল কারণ হয়তো ওটা নয়। হতে পারে আপনার আগের কোনও ব্যর্থতা আসলে আপনাকে খোঁচা দিচ্ছে। যেটা ব্রেকআপটা এসে আসলে সেই খোঁচাটায় আরও একটু আঘাত দিল। তাই অবসাদ কাটাতে হলে আপনাকে আসল কারণটা জানতে হবে। আর সেটা আপনি করতে পারবেন নিজেকে অনেক প্রশ্ন করে।
৪) নিজের জীবনের ভাল দিনগুলোর কথা চিন্তা করুন-- অলিম্পিক ম্যারাথনে সোনাজয়ী এক অ্যাথলিট একবার বলেছিলেন, দৌড়ের সময় তিনি অনেকটা সময় পিছিয়ে ছিলেন, একটা সময় ভেবেছিলেন পদক তো দূরে থাক তিনি আর ম্যারাথনটাই শেষ করতে পারবেন না। সেইসময় তিনি তাঁর ভাল সময়ের কথা চিন্তা করতে শুরু করেন। তিনি ভাবতে থাকেন তাঁর গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে প্যারিসের রাতের রাস্তায় হাঁটছেন, তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। দৌড়তে দৌড়তে ভাবছিলেন এসব ভাল ভাল কথা। শেষ অবধি সেই দৌড়বিদ অলিম্পিক ম্যারাথনে সোনা জেতেন। আপনাকে এই গল্পটা এই জন্যই বললাম কারণ জীবনটা ম্যারথনের মত। মাঝেমাঝে আমরা অনেকটা পিছনে পড়ে পদক জেতার আশা ছেড়ে দিই। তখন কিছুক্ষণের জন্য চোখটা বন্ধ করতে হয়। ভাবতে হয়তো জীবনের সেরা দিনগুলোর কথা। দেখবেন অনেকটা কাজে দেবে। মনে রাখবেন খারাপ থেকে ভাল সময় আসতে লাগে মাত্র একটা মুহূর্ত। আপনি মাত্র একটা মুহূর্তের দূরে দাঁড়িয়ে আছেন।
৩) বারবার ব্যর্থতা বা হতাশার কথা না ভেবে আগামী দিনের পরিকল্পনা তৈরি করুন-- আপনি নিজেকে নিয়ে ঠিক যা ভাববেন, আপনার সঙ্গে ঠিক সেটাই ঘটবে। এক বিখ্যাত দার্শনিকের কথা এটি। যদি আপনি বারবার হতাশার কথা ভাবেন, মনে করেন এটাই শেষ, সব শেষ, আর কোনও পথ নেই। তাহলে সেটাই ঘটবে আপনার সঙ্গে। আচ্ছা, একটা কাজ করুন। একটু কেঁদে নিন, নিন একটু মন খারাপ করে নিন। তারপর একটু ঘুমিয়ে নিন। তারপর উঠে চিন্তা করুন এবার আপনি কী করবেন। আগামী দিনের পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলুন। একটা ভাল পরিকল্পনাই আপনাকে ভাল দিকে নিয়ে যেতে পারে।
২) নিজেকে এবার দাম দিতে শিখুন-- নিজেকে ফেলনা ভাববেন না। কেউ প্রত্যাখান করল মানে আপনি খারাপ হয়ে গেল না, হতে পারে যে বা যারা প্রত্যাখান করল তারা আপনার মত একটা মানুষকে হারাল। আগে নিজেকে দাম দিতে শিখুন, তাহলে অন্যরা আপনাকে দাম দেবে। ভাবুন না ফুটপাথে হকাররা আগে নিজেদের জিনিসের দাম অনেকটা বাড়িয়ে রাখে। তারপর আমরা অনেক দরদাম করে সেটা কমাই। তাই নিজেকে দামী ভাবুন। লোকেও দাম দেবে।
১) নিজের প্রিয় লোকগুলোর সঙ্গে মিশুন, গান শুনুন, নিজেকে খুব ব্যস্ত রাখুন--নিজের পরিধি বাড়ান। যাদের সঙ্গে মিশতে ভাল লাগে তাদের সঙ্গে সময় কাটান। অবসাদের সময় কখনই একা থাকবেন না। ভাল গান শুনুন। গান মানুষের মুড, সময় বদলে দিতে পারে। ভাল সিনেমা, ভাল বইও পারে। সেগুলো করুন। নিজেকে খুব ব্যস্ত রাখুন।