ওয়েব ডেস্ক: একবিংশ শতাব্দীতে নরেন্দ্র মোদীই হবেন ভারতের সুপ্রিম লিডার। গুজরাতের এক চা-বিক্রেতার ঘরে জন্ম নেবেন তিনি। ৩টি টার্মে গুজরাতের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। ষোড়শ শতকেই অবিশ্বাস্য এই ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন ফরাসি জ্যোতিষী নস্ত্রাদামুস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গুজরাতের ভদনগর স্টেশনে চা বিক্রি করতেন বাবা। হাত লাগাত ছোট্ট ছেলেটা। সেই চাওয়ালার সেই ছোট্ট ছেলেটাই এখন রাষ্ট্রনায়ক। সুপ্রিম লিডার। চাওয়ালার সেই ছোট্ট ছেলে থেকে হঠাত্‍ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হননি তিনি। দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস। ঘাম ঝরানোর ইতিহাস। নিজেকে অসীম উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। মাত্র ৮ বছর বয়সেই আরএসএসে যোগদান। স্কুলের পড়া শেষ করেই বাড়ি ছাড়ে ছেলেটি। ২ বছর গোটা ভারতে ঘুরে বেড়ায়। ১৯৭০-এ ফিরে আসেন গুজরাতে। ১৯৭১-এ আরএসএসের ফুলটাইম কর্মী। ১৯৭৫-এ জরুরি অবস্থার সময় লুকিয়ে বেড়াতে হয়। ১৯৮৫-তে বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী। একটু একটু করে দক্ষ সংগঠক হয়ে ওঠেন। ২০০১-এ সেই সন্ধিক্ষণ। কেরিয়ারের মোড় ঘোরানো সময়। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তারপর হঠাত্‍ই বদলে যায় রাজনীতির গতিপথ। ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গা তাঁর গায়ে লাগিয়ে দেয় কলঙ্কের ছিটে। তবুও লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তিনি। ২০০৭-এ দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী তিনিই। গুজরাতে তো বিজেপির মুখ ছিলেনই। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে শুরু করলেন। ২০১২-য় আবার। গুজরাত বাঘের হ্যাটট্রিক। অল্পদূরেই লোকসভা ভোট। মোদীর গর্জন তখন সবরমতী পেরিয়ে রাজধানীর অলিন্দে ঘোরাফেরা করছে। ২০১৪-য় লোকসভা ভোট। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের ঘড়া তখন প্রায় কানায় কানায় পূর্ণ। ঠিক এই সময়েই নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাল বিজেপি। গোটা দেশে প্রচারে পদ্মের মুখ গুজরাতের সেই চাওয়ালার ছেলেই। দেশজুড়ে মোদী ঝড়। ভোটবাক্সে সুনামি হয়ে আছড়ে পড়ল সেই ঝড়ই। নয়া প্রজন্ম আমোদিত। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত, সবাই মোদীতে বুঁদ। কংগ্রেসকে ধূলিসাত্‍ করে দীর্ঘদিন পর ফের ক্ষমতায় বিজেপি। দেশজোড়া মোদী ম্যাজিক।মাঝে ঝড় কিছুটা ফিকে হলেও ফের ২০১৭-য় ফিরে এল সেই ঝড়। সুনামির আকারে। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ধুয়েমুছে সাফ কংগ্রেস-সপা জোট। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্মশিবির। মোদী-রথে গতি বেড়েছে। আরও চওড়া হয়েছে ৫৬ ইঞ্চির ছাতি। এই ঝড়কে সামনে রেখেই ২০১৯-এও ক্ষমতা দখলে বদ্ধপরিকর বিজেপি। যে মানুষটার জন্য দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে গেরুয়া-রথ, সেই মানুষটার নাম নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। বিশ্বের সর্ববৃহত্‍ গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী।



তিনিই সুপ্রিম লিডার। ধারেকাছে কোনও মুখ নেই। সেকেন্ড পজিশনে অনেক নাম। বড় নাম। তবে, ফার্স্ট পজিশনে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। একমেবাদ্বিতীয়ম। কেউ কি ভেবেছিল কখনও? চাওয়ালার এই ছেলেটি হয়ত ভেবেছিল। তবে ভেবেছিলেন আরেকজন। প্রায় ৫ শতক আগে। ষোড়শ শতকের দুনিয়াকাঁপানো ফরাসি জ্যোতিষী নস্ত্রাদামুস। তিনি ভাবেননি। ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন সেই কবে।



সম্প্রতি নস্ত্রাদামুসের লেখা কিছু ভবিষ্যদ্বাণী অনুবাদ করেন বিখ্যাত ঐতিহাসিক তথা সাংবাদিক ফ্রাসোয়াঁ গতিয়েঁ। সেখান থেকেই এই তথ্য উঠে এসেছে। পুরনো ফরাসি ও লাতিন ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছে এই তথ্য।



নস্ত্রাদামুস ষোড়শ শতকেই অনুমান করেছিলেন যে ভারতের ""সুপ্রিম লিডার'' জন্ম নেবেন গুজরাতের এক চা-বিক্রেতার ঘরে। যাঁর নাম হবে ""নরেন্দাস''। তিনি আরও বলেছিলেন, ৩টি টার্মে গুজরাতের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। আর এই সময়েই সেরাজ্যের বাণিজ্যবৃদ্ধি হবে।



শুধু মোদী নয়, বিজেপির সমৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করে গিয়েছিলেন নস্ত্রাদামুস। বিজেপিকে ""হিন্দু রাজনৈতিক সংগঠন'' বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে ভারতে বিজেপিই আধিপত্য বিস্তার করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও অনুমান করেছিলেন, ২০১৪ সাল থেকেই ভারতে হিন্দুদের আধিপত্য বাড়বে। হিন্দুত্বের শক্তিই ভারতের জন্য শুভ বলেও উল্লেখ করেন ফরাসি জ্যোতিষী।



নস্ত্রাদামুস আরও ভবিষ্যদ্বাণী করে যান, একজন সাদা চামড়ার মহিলা মোদীর আগে ভারতকে শাসন করবে। আর তাঁর আমলে দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তিনিও আরও সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, যদি হিন্দুদের সঙ্গে মোদী বিশ্বাসঘাতকতা করেন, তাহলে তিনিও ক্ষমতাচ্যুত হবেন।



নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণী তো হুবহু মিলে যাচ্ছে। হিন্দুদের সঙ্গে মোদী বিন্দুমাত্র বিশ্বাসঘাতকতাও করছেন না। উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো তো তারই প্রমাণ। অর্থাত্‍, নস্ত্রাদামুসের ভবিষ্যদ্বাণী মেনেই এগোচ্ছেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। (আরও পড়ুন- শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়ে প্রোটোকল ভাঙলেন মোদী)