ঘুষখোরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ, চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট!
ছোট থেকে জৈন ধর্মের সারসত্য বিশ্বাস রেখেছিলেন তিনি। তাই এই দুনিয়ার অন্ধকার দিকের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছিলেন না কদম।
নিজস্ব প্রতিনিধি : তাঁর বার্ষিক বেতন ছিল ৬ লাখ টাকারও বেশি। আর তাঁর বাবা হীরে ব্যবসায়ী প্রভু যোশির হীরের ব্যবসায় বার্ষিক টার্নওভার দেড় কোটি টাকা। ফলে বুঝতেই পারছেন, আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছন্দ্য জীবন। কিন্তু এমন জীবনে তিনি অভ্যস্ত হতে চাইলেন না। বলা ভাল, এত নিশ্চিন্ত জীবনও তাঁর পছন্দ হল না। গুজরাটের সুরাট শহরের জৈন ধর্মাবলম্বী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কদম দোশি তাই এবার চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসের পথে।
আরও পড়ুন- মহাকাশ থেকে কেমন দেখায় কুম্ভ মেলাকে, দেখুন ছবিতে
উচ্চমাধ্যমিকে প্রায় ৯০% নম্বর নিয়ে পাস করেছিলেন কদম। এর পর ২০১৪ সালে সিএ কোর্স শেষ করেন। এতক্ষণে হয়তো ভাবছেন, এতো একজন সাধারণ মানুষের কথা! তাঁকে নিয়ে এত ভণিতা কেন! আসলে কদম চাকরিটা ছেড়ে সন্ন্যাস নিচ্ছেন এক অদ্ভুত কারণে। তিনি এদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঘুষখোরদের অত্যাচারে অতিষ্ট। কদম বলছিলেন, ''একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতাম। আমাকে শহরে বিভিন্ন সরকারি অফিসগুলোয় যেতে হত প্রয়োজনীয় ফাইল পাস করাতে। সেখানে কর্মকর্তারা প্রতিবার প্রতিটা ফাইল পাস করানোর জন্য টাকা চাইত। ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হত প্রতিবার। একেকবার তো পাঁচ-ছয়জন কর্মকর্তাকেও একসঙ্গে ঘুষ দিতে হত। আমার মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছিল। ভাবছিলাম, এত কষ্ট করে তবে পড়াশোনা শিখলাম কেন! যদি যে কোনও কাজ ঘুষ দিলেই হয়ে যায় তাহলে শিক্ষার আর মূল্য কী!''
আরও পড়ুন- সত্যিই ভোটে লড়ছেন করিনা? কী বললেন নবাব-ঘরণী?
ছোট থেকে জৈন ধর্মের সারসত্য বিশ্বাস রেখেছিলেন তিনি। তাই এই দুনিয়ার অন্ধকার দিকের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছিলেন না কদম। আফসোস করে তিনি বলছিলেন, ''পরিশ্রম করে লেখাপড়া শিখেছিলাম। ভেবেছিলাম, সমাজের সেবা করব। সিস্টেম বদলানোর চেষ্টা করব। এক প্রাইভেট ফার্মে সিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট) হিসেবে যোগ দিলাম। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই বুঝলাম, একদিন হয়তো আমাকেও অসত্ হতে হবে। তখন নিজের মূল্যবোধ হারাব। নিজের কাছে ছোট হয়ে যাব। তাই জৈন ভিক্ষুক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। মুক্তির পথে বেছে নিলাম। আসলে শান্তির খোঁজে বেরোলাম।''