পদ হারাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন! কে হবেন ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী?
বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য বিজেপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, ইসি ২৫ অগস্ট রাজ্যের গভর্নর রমেশ বাইসের কাছে তাদের সিদ্ধান্ত পাঠায়। যদিও ইসির সিদ্ধান্ত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। গুঞ্জন রয়েছে যে প্যানেল হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের সুপারিশ করেছে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দলাচলের মধ্যেই ফের সমস্যায় তিনি। সোমবারই নির্বাচন কমিশন বিধায়ক হিসাবে তাঁর অযোগ্যতার বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছ যে শীর্ষ নির্বাচন সংস্থা ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের জমা দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন নিজে একটি খনির লিজ নেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে সমস্যা। এর ফলে নির্বাচনী নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই কারণেই বিধায়ক হিসাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে তাঁকে। এই মামলার অভিযোগকারী বিজেপি জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-র ৯(এ) ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। এর পরেই হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি করা হয়েছে। এই ধারা সরকারী চুক্তির জন্য অযোগ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিধায়ক কেনা বেচার অভিযোগ
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। তাঁদের দাবি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সদস্যপদ নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে ইচ্ছাকৃতভাবে করছেন তিনি। আর এর ফলে সুযোগ তৈরি হচ্ছে ঘড়া কেনা-বেচার। একাধিক বৈঠকের পর, জোটের অংশীদার জেএমএম, কংগ্রেস এবং আরজেডি একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ বাইসকে গত চার দিন ধরে রাজ্যে চলতে থাকা বিভ্রান্তি দূর করার আহ্বান জানিয়েছে।
জেএমএমের সিনিয়র বিধায়ক এবং মন্ত্রী চম্পাই সোরেন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘যদি ইসি থেকে কোনও রিপোর্ট আসে, রাজ্যপালের উচিত তা প্রকাশ করা এবং তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা। এই বিভ্রান্তির কারণে উন্নয়নমূলক কাজগুলি ব্যাহত হচ্ছে’।
ক্ষমতাসীন জোট যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেণ কংগ্রেস নেতা এবং মন্ত্রী বান্না গুপ্ত। তিনিও বিভ্রান্তি দূর করার জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ করেন। পরে, একটি যৌথ বিবৃতিতে, ইউপিএ বিধায়করা বলেন, ‘রাজভবন কি সময় নষ্ট করে ঘোড়া কেনা-বেচায় ইন্ধন দিতে চায়? ... তিনি কোন আইনি পরামর্শ নিতে পারছেন না? এটা গণতন্ত্র ও জনগণের অপমান’।
রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে যে বাইস সোমবার এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা সন্দেহ করছে যে বিজেপি ‘মহারাষ্ট্রের মতো’ এখানেও সরকারের পতনের জন্য জেএমএম এবং কংগ্রেস থেকে বিধায়কদের নিজেদের দলে ভেড়ানোর প্রচেষ্টা চালাতে পারে।
সোরেনের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য বিজেপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, ইসি ২৫ অগস্ট রাজ্যের গভর্নর রমেশ বাইসের কাছে তাদের সিদ্ধান্ত পাঠায়। যদিও ইসির সিদ্ধান্ত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। গুঞ্জন রয়েছে যে প্যানেল হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের সুপারিশ করেছে।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-র ৯(এ) ধারা লঙ্ঘনের জন্য বিজেপি সোরেনের পদ খারিজের দাবি তুলেছে। এই ধারাইয় বলা হয় যে ‘কোন ব্যক্তিকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে যদি, এবং যতক্ষণ পর্যন্ত, তার বাণিজ্য অথবা ব্যবসা চলাকালীন সময়ে সেই সরকারের কোনও কাজে পণ্য সরবরাহের জন্য বা কার্যকর করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত থাকে’।
আরও পড়ুন: Vinayak Damodar Savarkar: 'প্রতিদিন বুলবুল পাখির পিঠে চেপে আন্দামান থেকে মাতৃভূমিতে আসতেন সাভারকর'
ইস্যুটি প্রথমে রাজ্যপালের কাছে উল্লেখ করা হয়। এরপরে তিনি ইসির কাছে ঘটনার কথা জানান। সংবিধানের ১৯২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে একজন বিধায়কের অযোগ্যতার বিষয়ে রায়ের বিষয়ে, প্রশ্নটি রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে যিনি 'নির্বাচন কমিশনের মতামত পাবেন এবং সেই মত অনুযায়ী কাজ করবেণ’।
রাজ্যের বৃহত্তম দল জেএমএম-এর ৩০ জন বিধায়ক রয়েছে। কংগ্রেসের ১৮ জন বিধায়ক এবং আরজেডির একজন রয়েছে বিধানসভায়। প্রধান বিরোধী বিজেপির ২৬ জন বিধায়ক রয়েছে।