Cowin App: বাংলায় ২ দফা টিকা পেয়েছেন মাত্র ৩.৩ শতাংশ মানুষ
শুধুমাত্র একটি টিকা নিয়েছেন মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৮ শতাংশ। এই অংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হলে পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন- প্রায় চার মাস হল দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। এখনও অবধি রাজ্যের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.৩ শতাংশেরই সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে। অর্থাৎ, দু দফায় টিকা নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ৩.৩ শতাংশ। গোটা রাজ্যজুড়ে যখন টিকার জোগানে ঘাটতি নিয়ে প্রচুর অভিযোগ, সেই সময়ে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে বাংলায় টিকাকরণ কেন্দ্র করে এমন ছবি ধরা পড়ল, যা যথেষ্ট উদ্বেগের। পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের মোট জনসংখ্যা যেখানে প্রায় ১০ কোটি, সেখানে এখনও অবধি বাংলার মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.৩ শতাংশের সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে। অর্থাৎ, সংখ্যাটা মাত্র ৩৩ লাখ। এখন অবধি রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার ৩১.৩ শতাংশ। তবে আশার কথা, শুধুমাত্র একটি টিকা নিয়েছেন মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৮ শতাংশ। এই অংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হলে পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধর্মগুরুর শেষকৃত্যে হাজার হাজার ভক্ত! আরও সংক্রমণের আশঙ্কা যোগীরাজ্যে
দেশে রাজ্যগুলির মধ্যে টিকাকরণের কাজ কোথায় কতদূর এগিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কোউইন অ্যাপেই তার হিসেব রয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হওয়ার পর আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত বাংলায় মোট ১ কোটি ২১ লক্ষ ৯ হাজার ৯৯২ জনের টিকাকরণ হয়েছে। ভারত বায়োটেক এবং আইসিএমআর-এর তৈরি কোভ্যাক্সিন এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড- এই দুধরণের ভ্যাকসিন ব্যবহার করেই টিকাকরণ চলছে গোটা দেশে। করোনা প্রতিরোধে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের ব্যবধানে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের দু’টি টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বাংলার ৩২ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৩৮ জনকেই দু’টি টিকা দেওয়া গিয়েছে। শুধুমাত্র একটি টিকা পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৮৮ লক্ষ ৪৫ হাজার ১৫৪।
আরও পড়ুন: Oxygen সরবরাহে ৫ মিনিটের গোলযোগ, মৃত্যু হল ১১ জনের
রাজ্যে টিকাকরণের শুরুর দিকে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ও প্রবীণদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। মনে করা হয়েছিল, তাঁদেরই ঝুঁকি সবথেকে বেশি, তাই তাঁদের টিকাকরণ জরুরি। বয়সের নিরিখে টিকাকরণের যে হিসেব দেওয়া রয়েছে, তাতে রাজ্যে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৫০। ৪৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে বয়স এমন ৩৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৮৮৭ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি ৮ লক্ষ ১০ হাজার ৭৪২ জন ভ্যাকসিন পেয়েছেন। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সির সংখ্যা সবথেকে কম, ২ লক্ষ ৮১ হাজার ১২০। কোউইন অ্যাপের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে কোভ্যাক্সিনের চেয়ে কোভিশিল্ডই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। যেখানে কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন ১২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫২৩ জন, সেখানে ১ কোটি ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৬৯ জন কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন।
সবথেকে বেশি টিকাকরণ হয়েছে কলকাতায়। বাকি জেলার সংখ্যা অনেকটা এইরকম।
উত্তর ২৪ পরগনায় একটি টিকা নিয়েছেন সব মিলিয়ে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ২৭২ জন। ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৬৮ মানুষকে দু’টি টিকাই দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি টিকা পেয়েছেন ৭ লক্ষ ৩০ হাজার ২১৫ জন। ২ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৭৩ জনকে দু’টি টিকা দেওয়া গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরে ৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৪৪ জনকে একটি টিকা দেওয়া হয়েছে। দু’টি টিকা পেয়েছেন ২ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৩৮ জন।
হাওড়ায় ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ০৩৩ জন একটি টিকা পেয়েছেন। দু’টি টিকা পেয়েছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৪৩ জন।
পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি টিকা পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ২৪৭ জন। দ্বিতীয় টিকা পেয়েছেন ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬২২ জন।