দিল্লি ধর্ষণ কাণ্ডে ঐতিহাসিক রায়, ৪ জনের ফাঁসির আদেশ আদালতের

ন-মাস পর বিচার পেলেন নির্ভয়া। বিরলতম অপরাধে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ৪ জনকে ফাঁসির আদেশই দিল আদালত। অভিযুক্ত অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা, মুকেশ সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক যোগেশ খান্না। শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাদের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে অ্যাডিশনাল সেসনস জজ যোগেশ খান্না।

Updated By: Sep 13, 2013, 04:43 PM IST

ন-মাস পর বিচার পেলেন নির্ভয়া। বিরলতম অপরাধে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ৪ জনকে ফাঁসির আদেশই দিল আদালত। অভিযুক্ত অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা, মুকেশ সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক যোগেশ খান্না।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাদের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে অ্যাডিশনাল সেসনস জজ যোগেশ খান্না। তিনি বলেন, "বাকি অপরাধ আলোচনার পাশাপাশি আমি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (খুন) দৃষ্টিপাত করতে চাই। এটা অভিযুক্তদের অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। যেই গুরুতর অপরাধ তারা করেছে তা কখনই সহ্য করা যায় না। সকলকেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। যখন দেশে মহিলাদের ওপর অত্যাচার এরকম মারাত্মক আকার নিয়েছে তখন এরকম জঘন্য অপরাধকে কখনই এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কোনও সহানুভূতি নয়। বিরলতম এই অপরাধ মৃত্যুদণ্ডেরই যোগ্য।"
সাজা ঘোষণার পরই অক্ষয় ঠাকুর বাদে বাকি ৩ অপরাধী বিচারকের সামনে কেঁদে ফেলে। অভিযুক্তদের আইনজীবীর দাবি তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে নয়। রাজনৈতিক চাপে পড়েই রায় ঘোষণা করেছে আদালত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলেছেন। উচ্চ আদালতে আবেদনের কথাও জানিয়েছেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী এ পি সিং।
মঙ্গলবার আদালতে দিল্লি ধর্ষণ কাণ্ডকে বিরলতম ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, শুধু ধর্ষণ নয়, নির্ভয়া ও তার বন্ধুকে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছিল। লোহার রড দিয়ে নির্ভয়ার পেট চিড়ে ফেলে ভিতরের অঙ্গ বের করে আনা হয়েছিল। ক্ষিপ্র গতিতে চলা বাস থেকে তাঁদের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, নির্ভয়া ও তাঁর সঙ্গীর ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় করা হয়েছিল। অর্ধনগ্ন, গুরুতর জখম, রক্তাক্ত অবস্থায় হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় রাস্তায় পড়েছিলেন নির্ভয়া।
গত ১০ সেপ্টেম্বর বিচারক মূকেশ সিং (২৬), বিনয় শর্মা (২০), পবন গুপ্তা (১৯) ও অক্ষয় ঠাকুরকে (২৮) দোষী সব্যস্ত করে জানান, ৪ জনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণ ও ঠান্ডা মাথায় খুন করার জোরালো প্রমাণ রয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তকে গত ৩১ অগাস্ট জুভেনাইল বোর্ড দোষী সব্যস্ত করার পর ৩ বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রাম সিং গত ১১ মার্চ তিহার জেলে আত্মহত্যা করে। সরকার পক্ষের বিশেষ উকিল দয়ান কৃষ্ণণ ৫ অপরাধীর জন্যই ফাঁসির আদেশ দাবি করেছেন। এই ধরণের অপরাধীদের সংশোধনের কোনও সুযোগই নেই। যদি সকলকে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়া হয়, সাধারণ মানুষ দেশের আইনের ওপর আস্থা হারাবে। সমাজ মনে করবে কোনও মহিলার জীবন সুরক্ষিত নয়। সকলকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়ে আদালেতর মানুষের সেই ধারণা বদলে দেওয়া উচিত।
আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন নির্ভয়ার মা, বাবা। আদালতের রায়ে খুশি দেশের আম জনতা। বেশিরভাগ মানুষই মনে করছেন এমন নির্মম অপরাধের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড উপযুক্ত সাজা। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কামদুনিও।

.