আহমেদাবাদে রঙেও বিভেদ! হিন্দু পড়ুয়াদের জন্য গেরুয়া, মুসলিমদের জন্য সবুজ ইউনিফর্ম
আহমেদাবাদে মিউনিসিপ্যালিটি স্কুলগুলির মধ্যে শাহপুর পাবলিক স্কুল দানি লিমডা পাবলিক স্কুল একটু অভিনব। মিউনিসিপ্যালিটি স্কুলগুলির মধ্যে শুধু এই দুটিতেই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হয়। তবে, 'অভিনবত্ব' শুধু এখানেই এসে খতম হচ্ছে না।
ওয়েব ডেস্ক: আহমেদাবাদে মিউনিসিপ্যালিটি স্কুলগুলির মধ্যে শাহপুর পাবলিক স্কুল দানি লিমডা পাবলিক স্কুল একটু অভিনব। মিউনিসিপ্যালিটি স্কুলগুলির মধ্যে শুধু এই দুটিতেই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হয়। তবে, 'অভিনবত্ব' শুধু এখানেই এসে খতম হচ্ছে না।
শাহপুর স্কুলটির বেশিরভাগ পড়ুয়াই হিন্দু। তাদের ইউনিফর্মের রঙ গেরুয়া। অন্যদিকে, দানি লামডা স্কুলের প্রায় সব পড়ুয়াই মুসলিম পরিবার থেকে আসে। তাদের ইউনিফর্মের রঙ সবুজ।
আহমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বাদ বাকি ৪৫৪টি স্কুল গুলিতে স্থানীয় ভাষাতেই পড়াশোনা হয়। সেই সবকটি স্কুলেই ইউনিফর্ম একই রঙের, নীল-সাদা।
এই রঙ নির্বাচনের সঙ্গে পড়ুয়াদের ধর্মের কি কোনও সম্পর্ক আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে, এএমসি স্কুল বোর্ড চেয়ারম্যান জগদীশ ভাভসর অবশ্য জানিয়েছেন, ''দানি লিমডা স্কুলের ইউনিফর্মের রঙ নির্বাচনের সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। এই সিদ্ধান্ত একেবারেই র্যান্ডম। আমাদের অনান্য অপশনও ছিল। পছন্দের লিস্টে ছিল গোলাপী, নীল রঙও। কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে সবুজটাই ওই স্কুলের পড়ুয়াদের বেশি মানাবে। তাই বেছে নেওয়া হয়েছে ওই রঙ।''
অন্যদিকে, তাঁর দাবি শাহপুর স্কুলেও ইউনিফর্মের রঙ গেরুয়া বাছার পিছনে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের 'সংস্কার' বা পছন্দ'-কে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি।
দানি লিমডা স্কুলের ৯৮%-এরও বেশি ছাত্রছাত্রী মুসলিম। অন্যদিকে, শাহপুর পাবলিক স্কুলের ৯৮% পড়ুয়া হিন্দু পরিবার থেকেই আসে।
স্থানীয় ভাষার পরিবর্তে সমাজের নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিতেও বাড়ছে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চাহিদা। মিউনিসিপ্যাল স্কুলগুলিতে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। বাড়াতে হবে পড়ুয়া সংখ্যা। সেই লক্ষ্যেই এএমসি ২০১৩ সালের জুনে শাহপুর স্কুল ও গতবছর দানি লিমডায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুল দুটি খোলে।
'ঘটনাচক্রে' শাহপুর স্কুলের ইউনিফর্ম স্পনসর করেছে একটি ''সামাজিক সংগঠন''। নাম শাহপুর সেবা সঙ্ঘ। ভাভসর নিজেও এই সংগঠনটির সদস্য। এই সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট আবার শাহপুর ওয়ার্ডে বিজেপির কাউন্সিলর ছিলেন।
জগদীশ ভাভসরের দাবি এই সঙ্ঘটি শিক্ষা ও বিবিধ সামাজিক বিষয়গুলি নিয়েই নাকি কাজকরে।
দানি লিমডা স্কুলের পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম জোগাড় হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে সংগৃহীত অর্থ থেকেই। স্কুল চালু হওয়ার ৬ মাস পর্যন্ত পড়ুয়াদের কপালে কোনও ইউনিফর্মই জোটেনি। গত বছর ডিসেম্বর থেকে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সবুজ ইউনিফর্ম চালু হয়।
দানি লিমডা স্কুলটি এএমসি-এর অধীনস্থ হলেও এখনও স্কুলটির নিজস্ব ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন জোটেনি। ফলে কোনও সরকারি অনুদান বা স্কলারশিপ থেকে এখনও স্কুলটি বঞ্চিত। ফলে ইউনিফর্মের মত বিষয়গুলির জন্যও স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুদানের উপর নির্ভরশীল।