বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণ: প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজ

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়ে দিলেন বুদ্ধগয়ার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে নীতিশ জানান ''বিহারে এই ধরনের নাশকতার ঘটনা প্রথম হল। এই ঘটনার সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তদন্ত হবে। এনআইএ  তাদের তদন্ত শেষ করলেই দুষ্কৃতীরা কড়া শাস্তি পাবে।''   

Updated By: Jul 8, 2013, 09:39 AM IST

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়ে দিলেন বুদ্ধগয়ার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে নীতিশ জানান ''বিহারে এই ধরনের নাশকতার ঘটনা প্রথম হল। এই ঘটনার সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তদন্ত হবে। এনআইএ  তাদের তদন্ত শেষ করলেই দুষ্কৃতীরা কড়া শাস্তি পাবে।''
বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করলেন গোয়েন্দারা। ফুটেজে বিস্ফোরণের ছবি মিলেছে। তবে সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা যায়নি বলে সূত্রের খবর। সন্দেহভাজনের খোঁজে তল্লাসি শুরু করেছে পুলিস। বিনোদ মিস্ত্রি নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সূত্র পেতে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে বিনোদ মিস্ত্রির পরিচয়পত্র উদ্ধার করে পুলিস। গতকাল সন্ধ্যায় ঘটনার তদন্তে বুদ্ধগয়ায় পৌঁছয় এনআইএ দল। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তাঁরা। তবে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের পর বৃষ্টি হওয়ায় অনেক তথ্যপ্রমাণই ধুয়ে গিয়েছে। বুদ্ধগয়ায় নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত ব্যক্তির নাম আনওয়ার হুসেন মল্লিক। গতকালই বিবাদী বাগ থেকে ধরা হয় আনওয়ারকে। ধৃতের কাছ থেকে ১.৯ লক্ষ নকল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযোগ এই আনওয়ারই ২০১০-এ জার্মান বেকারি বিস্ফোরণের বিস্ফোরক সরবরহ করেছিল। গতকালের বিস্ফোরণের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে পুলিসের পক্ষ থেকে।
আজ লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডি ও বিহার কংগ্রেস নীতিশ কুমার সরকারের বিরোধিতা করে মগধে বন্ধ ডেকেছে।
পুণের জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণের সময়েই বৌদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল। তখনই বৌদ্ধগয়ার রেকি সেরে রেখেছিল জঙ্গিরা। দুহাজার বারো সালে, দিল্লিতে গ্রেফতার তিন ইন্ডিয়ান মুজাহিদির জঙ্গিকে জেরা করে একথা জানতে পারেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তখনই সতর্ক করা হয়েছিল বিহার সরকারকেও। যদিও তারপরেও রোখা যায়নি নাশকতা। বৌদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণ যে জঙ্গি নাশকতা তা নিয়ে সন্দেহ নেই কোনও পক্ষেরই। যদিও এই নাশকতার কারণ কী তা নিয়ে এখনও ধন্ধে গোয়েন্দারা। একটি সূত্রে খবর, মায়ানমারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই বেছে নেওয়া হয়েছে বৌদ্ধগয়ার মহাবোধী মন্দিরকে।
গোয়েন্দাদের আরেক অংশের যুক্তি, নেহাতই ত্রাস সৃষ্টি করতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে মহাবোধী মন্দিরে। কারণ যে সময়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, তখন মন্দিরে সবচেয়ে কম ভক্ত সমাগম হয়। যদিও, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিগোষ্ঠীই এই এই নাশকতার পিছনে তা নিয়ে একরকম নিশ্চিত তদন্তকারীরা। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নিশানায় যে মহাবোধী মন্দির রয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তা নিয়ে বহু আগেই সতর্ক করেছিলেন। মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রী আবু জুন্দালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দুহাজার বারো সালে দিল্লি থেকে তিন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিস।
তাদের নাম, আসাদ খান, আমরান খান এবং সৈয়দ ফিরোজ। ধৃতদের জেরা করেই সামনে আসে মহাবোধী মন্দিরে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনার কথা। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিরা বৌদ্ধগয়ায় রেকি করে গিয়েছিল বলেও জেরায় জানতে পারেন গোয়েন্দারা। পুণের জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণের সময়েই বৌদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল। গোয়েন্দাসূত্রে খবর, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন প্রধান রিয়াজ ভাটকল নিজেই করাচিতে বসে এই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করে। ভারতে সেই পরিকল্পনা কার্যকর করার দায়িত্ব দেওয়া হয় তার ভাই ইয়াসিন ভাটকলকে। তবে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নাম ঘোষণা করতে চাইছেন না তদন্তকারীরা। বিহারে বিস্ফোরণ হওয়ায় মাওবাদীদেরও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। 
 

.