পতনের রেকর্ড ভেঙেই চলেছে টাকা

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদক্ষেপ সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে টাকার বিপর্যয় অব্যাহত। মঙ্গলবার বাজার বন্ধের সময় ডলার পিছু টাকার দাম দাঁড়িয়েছিল ৫৫ টাকা ৪৭ পয়সায়। এদিন বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা আরও নেমে দাঁড়াল ৫৫ টাকা ৮২ পয়সায়।

Updated By: May 22, 2012, 03:59 PM IST

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদক্ষেপ সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে টাকার বিপর্যয় অব্যাহত। মঙ্গলবার বাজার বন্ধের সময় ডলার পিছু টাকার দাম দাঁড়িয়েছিল ৫৫ টাকা ৪৭ পয়সায়। এদিন বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে ৫৬ টাকার গণ্ডী পেরিয়ে গেল। পতনের এই প্রবণতা চলতে থাকলে আর্থিক বৃদ্ধির পথে অন্তরায় তৈরি হবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সোমবারই বাজার বন্ধের সময় প্রতি ডলারের নিরিখে টাকা দাম দাঁড়ায় ৫৫টাকা ৩ পয়সায়। সোমবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই মুম্বইয়ে ইন্টার ব্যাঙ্ক ফরেন এক্সচেঞ্জ বা আন্তর্ব্যাঙ্ক বিদেশি মুদ্রা বিনিময়ের বাজারে টাকার দাম এক ঝটকায় পড়ে যায়। তখন টাকার দাম ছিল ডলার পিছু ৫৪ টাকা ৭০ পয়সা। মঙ্গলবার বাজার বন্ধের সময় তা দাঁড়ায় ৫৫ টাকা ৪৭ পয়সায়। বুধবার বাজার খোলার এক ঘণ্টার মধ্যেই ডলার পিছু ৫৫ টাকা ৮৭ পয়সায় নেমে আসে টাকার দাম। পরে তা দাঁড়ায় ৫৬ টাকা ১৯ পয়সায়।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল আমদানিকারী সংস্থাগুলির কাছে ডলারের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়াই টাকার পতনের মূল কারণ। কারণ, একই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রা বিনিময়কারী ব্যাঙ্কগুলির কাছেও ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। বিদেশি মুদ্রা বিনিময়কারী ব্যাঙ্কগুলিই তেল আমদানিকারী সংস্থাগুলিকে টাকার বিনিময়ে ডলার দিয়ে থাকে। এই পরিস্থিতিতে ডলারের প্রবল চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না বিনিময় বাজার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে পতন হয়েছে ইয়েন ও ইউরো'র। তাই টাকার দামের অধোগতি অব্যাহত। টাকার দাম ব্যাপক পড়ে যাওয়ায় দেশে মুদ্রাস্ফীতি অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার এবং দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা ও ব্যাঙ্ক। টাকার মূল্যের ক্রমাগত পতনে দেশে পেট্রলের দাম বাড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এভাবে টাকার দাম পড়তে থাকলে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি পেট্রলের দাম বাড়াতে বাধ্য হবে বলে গতকালই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রী জয়পাল রেড্ডি।
সোমবারই টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক `পজিশন লিমিট` ১০ কোটি মার্কিন ডলারে বেঁধে দেয়। আগামী জুনের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ আনতে বলে আরবিআই। কিন্তু এই পদক্ষেপে যে কাজের কাজ তেমন হয়নি তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। আন্তর্জাতিক বাজারে আর্থিক সঙ্কটের প্রভাবেই টাকার দাম ক্রমাগত পড়ছে বলে আগেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। এমতাবস্থায় টাকার পতনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বুধবার হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে দালাল স্ট্রিটের শেয়ার সূচকও। আজ সকালে বাজার খোলার পরই সেনসেক্স নেমে আসে ১৬,০০০ পয়েন্টের নীচে।

.