বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হেনস্থার মুখে স্বামী অগ্নিবেশ
পুলিসের ঘেরাটোপে থাকাকালীনও উত্তেজিত গেরুয়া বসনধারীদের স্বামী অগ্নিবেশকে ধাওয়া করতে দেখা যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গেরুয়া বাহিনীর একাংশের হাতে নিগৃহীত হলেন স্বামী অগ্নিবেশ। শুক্রবার দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি-র সদর দফতরে বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই আক্রমণের মুখে পড়েন ৭৯ বছর বয়সী সমাজকর্মী স্বামী অগ্নিবেশ। জুলাই মাসেও বিজেপি কর্মী হাতে তাঁকে নিগৃহীত হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গেরুয়া বসনধারী কয়েকজন হঠাত্ করেই স্বামী অগ্নিবেশকে 'বিশ্বাসঘাতক' বলতে বলতে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁর পাগড়ি ধরে টানা হয় এবং এক মহিলাকে চটি হাতে মারমুখী ভঙ্গিতে তেড়ে আসতেও দেখা যায়। তত্ক্ষণাত্ পুলিস চলে আসে এবং স্বামী অগ্নিবেশকে গাড়িতে করে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিসের ঘেরাটোপে থাকাকালীনও উত্তেজিত গেরুয়া বসনধারীদের স্বামী অগ্নিবেশকে ধাওয়া করতে দেখা যায়।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্বামী অগ্নিবেশ জানান, "আমি বাজপেয়ীজি-কে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে গিয়েছিলাম। যেহেতু গোটা এলাকায় পুলিস পিকেট রয়েছে, তাই আমাকে গাড়ি থেকে খানিকটা আগেই নেমে যেতে হয়েছিল...হেঁটেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাত্ এক দল লোক এসে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা আমায় মারধর করে এবং অকথ্য ভাষায় বলে"। আরও পড়ুন- আমি প্রস্তাব দিলে কখনও 'না' বলতেন না : আডবাণী
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৬ অগস্ট (বৃহস্পতিবার) দিল্লির এইমস-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অটল বিহারী বাজপেয়ী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। কেন্দ্রের তরফে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার অর্ধ দিবস ছুটিও ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। শুক্রবার রাতেই ৬ নম্বর কৃষ্ণাণমার্গের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বাজপেয়ীর মরদেহ। রাত থেকেই সেই বাড়ির দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ করে দিতে। শুক্রবার দলীয় নেতাকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য তাঁর দেহ শায়িত রাখা হয় বিজেপির বর্তমান সদর দফতরে। সেখানেই শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় স্বামী অগ্নিবেশকে। নিঃসন্দেহে এমন ঘটনা গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। তবে এখন দলের তরফে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই ঝাড়খণ্ডেও নিগ্রহের শিকার হন স্বামী অগ্নিবেশ। অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে বিজেপি-র যুমোর্চার সদস্যরাও ছিল। অগ্নিবেশ না কি ধর্মান্তকরণ করতে মদত দিচ্ছেন, এমনটাই দাবি হামলাকারীদের। জুলাইয়ে সেই হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।