পাল্টালো না পাকিস্তান! কূলভূষণের সাক্ষাতে ভারতের সঙ্গে কথার খেলাপ ইমরানের
ভারতীয় কনসুলার আধিকারিকরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে কূটনৈতিক সহযোগীতা অর্থহীন হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেইমানি করল পাকিস্তান। নিঃশর্তে কোনও পাকিস্তানি আধিকারিকের উপস্থিতি ছাড়া কূলভূষণ যাদবকে কূটনৈতিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিল ভারত। সেই মতো ১৬ জুলাই সাক্ষাৎকারের আয়োজন করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সাক্ষাৎকারের সময় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানি আধিকারিক। এমনকী আগে থেকেই সমস্ত কথোপকথন রেকর্ড করার জন্য বসিয়ে রাখা হয়েছিল ক্যামেরা। বিবৃতি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্র।
২০১৬ থেকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানি হেফাজতে ভারতীয় নাগরিক কূলভূষণ যাদব। পাকিস্তান কূলভূষণ যাদবের নামে মৃত্যুদণ্ডের সাজাও শুনিয়েছিল। যা আন্তর্জাতিক আদালতের হস্তক্ষেপে এখন পুনর্বিবেচনাধীন।
ভারত বিগত বছরগুলিতে প্রায় ১২ বার অবাধ ও নিঃশর্ত ভাবে কূলভূষণকে কূটনৈতিক সাহায্য দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর দ্বিতীয়বার ১৬ জুলাই ভারতের কূলভূষণকে কূটনৈতিক সাহায্য দেওয়ার কথা মেনে নেয় পাকিস্তান। যেহেতু সাক্ষাতের পর কূলভূষণকে পাকিস্তানি হেফাজতেই থাকতে হবে তাই মুক্তভাবে কূলভূষণের সঙ্গে কথা বলার স্বার্থে সেখানে পাকিস্তানি আধিকারিক না রাখার কথা বলে ভারত। এছাড়াও গোপনীয়তার স্বার্থে সেই সময় ওই স্থানে কোনও ক্যামেরা না রাখার দাবি জানায় ভারত।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে সচিন পাইলট, মামলা লড়বেন বিজেপি আমলের অ্যাটর্নি জেনারেল
আলোচনার পর পাকিস্তান কূলভূষণকে দ্বিতীয়বার কূটনৈতিক সাহায্য দিতে রাজি হয়। পাকিস্তানি বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এ-ও আশ্বাস মেলে যে কূলভূষণের সঙ্গে সাক্ষাতকার নিঃশর্ত ও অবাধ হবে। কিন্তু আদপে তা হলো না। আইনি বিষয়ে কূলভূষণের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়ার সময় অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তানি আধিকারিকরা। ভারতের কূটনীতিবিদদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও সরে যাননি তাঁরা। এমনকী একটি ক্যামেরা দিয়েও রেকর্ডিং চলছিল। যা চোখে পড়েছে ভারতীয় আধিকারিকদের। যে বিষয়ে ভারতীয় আধিকারিকরা কূলভূষণের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন, সেই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি অবাধ কথোপকথনের অনুকূল না হওয়ায় বেরিয়ে আসেন ভারতীয় আধিকারিকরা।
এমতা অবস্থায় ভারতীয় কনসুলার আধিকারিকরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে কূটনৈতিক সহযোগীতা অর্থহীন হয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক এ বিষয়ে কূলভূষণের পরিবারকে জানিয়েছেন। ভারতের পক্ষ থেকে কূলভূষণকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে এই ঘটনা মাথায় রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। প্রসঙ্গত এর আগেও যখন কূলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রী দেখা করতে গিয়েছিলেন তখনও অবাধে কথা বলতে পারেননি তাঁরা। মাতৃভাষায় তাঁদের কথা বলতে দেওয়া হয়েছিল না। এছাড়াও বারবার কথার মাঝখানে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। পোশাক পরিবর্তন করে ও অলঙ্কার খুলিয়ে ধর্ম ও সংস্কৃতির আবেগে আঘাত হানা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।