করোনা এভাবেও প্রাণ নেয়! ২০০ কিলোমিটার হেঁটেও আর কোনও দিন বাড়ি ফেরা হল না রণবীরের
দিল্লি থেকে মধ্য়প্রদেশ। দূরত্ব ৩২৬ কিলোমিটার। মধ্য প্রদেশের মোরেনা জেলায় তাঁর গ্রাম। প্রায় ২৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ফেলেছিলেন পেশায় ডেলিভারি এজেন্ট বছর আটত্রিশের রণবীর সিং
নিজস্ব প্রতিবেদন: কতটা পথ পেরোলে তবে ঘরে যাওয়া যায়? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দিল্লি-উত্তর প্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের মনে। লকডাউন গোটা দেশ। বন্ধ সব গণপরিবহণ ব্য়বস্থা। এরই মাঝে ২০০ কিলোমিটার পথ উজিয়ে যেতে গিয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির।
দিল্লি থেকে মধ্য়প্রদেশ। দূরত্ব ৩২৬ কিলোমিটার। মধ্য প্রদেশের মোরেনা জেলায় তাঁর গ্রাম। প্রায় ২৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ফেলেছিলেন পেশায় ডেলিভারি এজেন্ট বছর আটত্রিশের রণবীর সিং। দিল্লিতেই কর্মরত। লকডাউনের জেরে বেকার হয়ে পড়েছিলেন তিনি। জমানো টাকা ফুরিয়ে আসছিল। বাঁচতে গেলে তাঁকে ফিরতেই হত বাড়ি। কিন্তু কে জানত, পথই কেড়ে নেবে তাঁর প্রাণ!
আরও পড়ুন- শ্রীনগরের হাসপাতালে তাণ্ডব রোগীর আত্মীয়দের, সুযোগ বুঝে পালাল ২৬ করোনা সন্দেহভাজন
ট্রেন এবং আন্তঃরাজ্য বাস পরিবহণ পরিষেবা বন্ধ থাকায় আর পাঁচটা মানুষের সঙ্গে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন রণবীর। পকেটে যত্সামান্য সঞ্চয়ের টাকা, পেটে ভরপুর খিদে আর দু'চোখে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন নিয়ে হাঁটা লাগান। ২৪০ কিলোমিটার হাঁটার পর আগ্রার জাতীয় সড়কে এক চায়ের দোকানে বিশ্রাম নেন। সেখানে চা-বিস্কুট খান তিনি। কিন্তু হঠাত্ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রণবীরের।
রণবীরের মতো কয়েক হাজার মানুষ ঘরে ফেরার আশায় ক্রোশের পর ক্রোশ পথ হেঁটে চলেছেন। করোনা আতঙ্কের আবহে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছেন দিল্লির আনন্দ বিহার বাস স্টেশনে। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেও তাঁদের মনে বেশি ভিড় করছে বাড়ি না ফেরার উদ্বেগ। রণবীর হয়ত যুদ্ধটা জয় করেই ফেলেছিলেন। বাকি ছিল আর মাত্র ৮০ কিলোমিটার পথ! কিন্তু এভাবেও করোনা প্রাণ নিতে পারে কে জানতো!