কেন বন্দী সলমন? কবে মুক্তি পাবে কেরালার এই ছাত্র? সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জুড়ে এখন প্রশ্ন একটাই

চলতি মাসের ২০ তারিখ তিরুবন্তপুরমের এক ছাত্র সলমন জলমনের বাড়িতে হঠাৎই হানা দেয় স্থানীয় পুলিস। স্পষ্ট কোনও কারণ ব্যাখা না করেই পেরুকাড়াতে সলমনের বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। সলমনের 'অপরাধ', একটি সিনেমা হলে যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হচ্ছিল তখন উঠে দাঁড়াননি তিনি। পরে ফেস বুকে জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে সলমনের রাজনৈতিক ও দার্শনিক কমেন্টকে জাতীয়তাবাদ বিরোধী তকমা দিয়ে সেই কমেন্টগুলিকেই সলমনের গ্রেফতারের কারণ হিসেবে দর্শানো হয়।  

Updated By: Aug 23, 2014, 05:18 PM IST
কেন বন্দী সলমন? কবে মুক্তি পাবে কেরালার এই ছাত্র? সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জুড়ে এখন প্রশ্ন একটাই

তিরুবন্তপুরম: চলতি মাসের ২০ তারিখ তিরুবন্তপুরমের এক ছাত্র সলমন জলমনের বাড়িতে হঠাৎই হানা দেয় স্থানীয় পুলিস। স্পষ্ট কোনও কারণ ব্যাখা না করেই পেরুকাড়াতে সলমনের বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। সলমনের 'অপরাধ', একটি সিনেমা হলে যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হচ্ছিল তখন উঠে দাঁড়াননি তিনি। পরে ফেস বুকে জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে সলমনের রাজনৈতিক ও দার্শনিক কমেন্টকে জাতীয়তাবাদ বিরোধী তকমা দিয়ে সেই কমেন্টগুলিকেই সলমনের গ্রেফতারের কারণ হিসেবে দর্শানো হয়।  

যে ভাবে মধ্যরাতে সলমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতার অভিযোগ আনা হয়েছে সলমনের পরিবার ও পরিচিতদের পক্ষ থেকে। অভিযোগ, তাঁর গ্রেফতারের সময় কোনও রকম আইনি নিয়ম পালন করা হয়নি পুলিসের তরফ থেকে। সলমনকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে বিষয়েও প্রথম থেকেই অস্পষ্টতা দেখা গেছে পুলিসের কাজে। প্রাথমিকভাবে জানানো হয় থামপানুর পুলিস স্টেশনে সলমনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে পুলিস তা অস্বীকার করে।  সলমনের কোনও হদিশই স্পষ্ট ভাবে পাওয়া যায়নি পুলিসের তরফ থেকে। সূত্রে খবর, কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীদের মত এক জেল থেকে অন্য জেলে নিয়ে যাওয়া হয় সলমনকে। সলমনের আইনজীবী এমনকি তাঁর বাবা-মাকেও তাঁর সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতেই অস্বীকার করে পুলিস।

২১ তারিখ রাতে অবশেষে পুলিস জানায় সলমনের বিরুদ্ধে ভারতীয় পিনাল কোডের ১২৪এ ও ৬৬এ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আপত্তিকর মন্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দায়ের করা হয়েছে কেরালার এই ছাত্রের বিরুদ্ধে। যদিও সলমনের কোন মন্তব্যের ফলে কেন তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে সেই বিষয়ে সঠিক কিছুই জানায়নি পুলিস প্রশাসন।

সলমনের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে কেরালা সহ সারা দেশেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দাবি উঠেছে সলমনের দ্রুত মুক্তির। সলমনের গ্রেফতারির পিছনে ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠেছে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের সমালোচনা কী 'রাষ্ট্রদ্রোহিতার' সমার্থক? প্রশ্ন উঠছে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও।  

অন্যদিকে, বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ফেসবুক জুড়ে সলমনের বিরোধীতা করে ঘৃণ্য প্রচার চালাচ্ছে। অভিযোগ সলমনের সমর্থনে কোনও মহিলা মতামত প্রকাশ করলে তাঁদের ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

সমস্ত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত লকআপে সলমন জলমন। সলমনের গ্রেফতারি সত্যিই এদেশের গণতন্ত্রের প্রকৃতরূপের উপর আরও একবার প্রশ্নচিহ্ন খাড়া করে দিল।

 

 

.