বিচ্ছেদের পরও স্বামীর সম্পত্তি পেতে পারেন স্ত্রী
বিচ্ছেদের পর স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার সংক্রান্ত বিলে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সম্পত্তিতে কত শতাংশ অধিকার থাকবে তা যদিও স্থির করবে আদালত। এতদিন পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের পর কেবলমাত্র খোরপোষ পেতেন স্ত্রী। বিচ্ছেদ হলে নিজের সন্তানের পাশাপাশি দত্তক সন্তানের ক্ষেত্রেও পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকারের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার সংক্রান্ত বিলে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। নতুন এই আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ারও সরলীকরণ করা হয়েছে। বিচ্ছেদের জন্য যৌথভাবে আর্জির ক্ষেত্রে আগের 'ওয়েটিং পিরিয়ড' আর থাকছে না। শুক্রবারই এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সংশোধনীতে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা।
হিন্দু বিবাহ আইনে কিছু পরিবর্তন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১০ সালে হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৫ ও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৯৫৪, এই দুটি বিবাহ আইনে কিছু সংশোধনী পেশ করা হয় রাজ্যসভায়। পরে বিলটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠানো হয়। জয়ন্তী নটরাজন নেতৃত্বাধীন সংসদীয় প্যানেলের প্রস্তাব অনুযায়ী কিছু সুপারিশ দেয় স্ট্যান্ডিং কমিটি।
তার মধ্যে অন্যতম হল,
১) বিচ্ছেদের পর শুধু খোরপোশ নয়, স্বামীর স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার থাকবে। কর্মরত স্ত্রীরাও এবার এই আইনের আওতায় আসবেন। তবে সম্পত্তিতে স্ত্রীর কত শতাংশ অধিকার থাকবে তা অবশ্য প্রতিটি মামলার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে স্থির করবে আদালত। স্বামী যদি সম্পত্তির মালিকানা না ছাড়তে চান, সেক্ষেত্রে সম্পত্তির বিনিময়ে সম পরিমাণ টাকা দিতে হবে স্ত্রীকে। সেই অর্থমূল্যও ধার্য করবে আদালত।
২) বিচ্ছেদের পরে নিজের সন্তানের পাশাপাশি দত্তক সন্তানের ক্ষেত্রেও পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকারের বিষয়টিতেও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
৩) সংশোধনীতে আইন অনুযায়ী বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ার সরলীকরণের জন্য এবার নয়া একটি ধারা চালু করা হবে। যদি কোনও দম্পতি মনে করেন তাঁদের পক্ষে বিবাহ কোনরকমেই টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়, তবে তাঁরা 'ইরিট্রিভেবল ব্রেকডাউন অফ ম্যারজ' ধারায় মামলা রুজু করতে পারেন।
৪) নতুন এই আইন অনুযায়ী 'ইরিট্রিভেবল ব্রেকডাউন অফ ম্যারজ' ধারায় সহজ করা হচ্ছে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়াও। আগে যৌথ আর্জির ছয় থেকে দেড় বছর পরেই শুরু হত বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া। নতুন ধারায় সেই ওয়েটিং পিরিয়ড কমানো বা নাকচ করে দেওয়া যেতে পারে।
৫) সংশোধীত আইন অনুসারে 'ইরিট্রিভেবল ব্রেকডাউন অফ ম্যারজ' ধারায় স্বামীর আনা বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় আপত্তি জানাতে পারেন স্ত্রী। কিন্তু এই ধারায় বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্বামী কোনও আপত্তি জানাতে পারবেন না।
এই মর্মে একটি খসড়া বিল পেশ করা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি পাস হয়েছে।