দলীয় নিয়ম মেনে তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যসভায় যাবেন না জানিয়েও তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য ইয়েচুরির
ইতি হতে চলেছে সীতারাম ইয়েচুরির সাংসদ জীবন। তৃতীয় বারের জন্য তিনি আর রাজ্যসভার সদস্য হবেন না, বলে জানিয়ে দিলেন স্বয়ং সীতারামই। এই সিদ্ধান্তের পিছনে কারণ হিসাবে 'দলীয় নিয়ম'কেই ঢাল করেছেন সিপিআইএমের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ইয়েচুরি বলেছেন, "আমাদের দলের নিয়ম অনুসারে, রাজ্যসভায় সদস্য হিসাবে তৃতীয়বারের জন্য (সর্বাধিক দুই বার) কেউই যেতে পারবেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলীয় নিয়ম মেনে চলাই আমার দায়িত্ব। যতদিন এই নিয়ম দলে থাকবে, আমি ততদিনই তা মেনে চলব"। এরপরই আরও একধাপ এগিয়ে ইয়েচুরি জানিয়েদেন যে, দলের এই নিয়ম মূলত নবীন কমরেডদের সামনের সারিতে এগিয়ে দেওয়ার জন্যই তৈরি হয়েছে।
ওয়েব ডেস্ক: ইতি হতে চলেছে সীতারাম ইয়েচুরির সাংসদ জীবন। তৃতীয় বারের জন্য তিনি আর রাজ্যসভার সদস্য হবেন না, বলে জানিয়ে দিলেন স্বয়ং সীতারামই। এই সিদ্ধান্তের পিছনে কারণ হিসাবে 'দলীয় নিয়ম'কেই ঢাল করেছেন সিপিআইএমের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ইয়েচুরি বলেছেন, "আমাদের দলের নিয়ম অনুসারে, রাজ্যসভায় সদস্য হিসাবে তৃতীয়বারের জন্য (সর্বাধিক দুই বার) কেউই যেতে পারবেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দলীয় নিয়ম মেনে চলাই আমার দায়িত্ব। যতদিন এই নিয়ম দলে থাকবে, আমি ততদিনই তা মেনে চলব"। এরপরই আরও একধাপ এগিয়ে ইয়েচুরি জানিয়েদেন যে, দলের এই নিয়ম মূলত নবীন কমরেডদের সামনের সারিতে এগিয়ে দেওয়ার জন্যই তৈরি হয়েছে।
Norm in our party has been, in RS no one should be allowed to move towards 3rd term, as GS, it's my duty to implement that: Sitaram Yechury pic.twitter.com/nvUoNd51ge
— ANI (@ANI_news) April 30, 2017
উল্লেখ্য, এই অগস্টেই রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে শেষ হচ্ছে সীতারাম ইয়েচুরিসহ পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত মোট ছয় সাংসদের মেয়াদ। সীতারাম ইয়েচুরি ছাড়া, বাকি পাঁচ সাংসদই তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত। এদিকে এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় ক্ষমতার সমীকরণ অনুসারে তৃণমূলের দাপট প্রশ্নাতীত। ফলে দল প্রর্থীদের পরিবর্তন করতে না চাইলে ঘাঁসফুলের বিদায়ী সাংসদদের ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পুনরায় প্রবেশ করা কেবলই সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বামেদের যা বিধায়ক সংখ্যা, তাতে এককভাবে নিজেদের প্রার্থীকে জিতিয়ে নিয়ে আসা অত্যন্ত কঠিন। তাই লাল পার্টির এক্ষেত্রে প্রয়োজন কংগ্রেসের সমর্থন। কংগ্রেস আবার বলে রেখেছে যে 'সংসদে সুবক্তা হিসাবে পরিচিত' ও 'কেন্দ্রীয় সরকারকে অপ্রিয় প্রশ্নের সম্মুখীন করতে অভিজ্ঞ' সীতারাম ইয়েচুরি প্রার্থী হলে তবেই কেবল সমর্থন দেওয়া হবে। ফলে সীতারামের এই ঘোষণার পর অনিশ্চিত হয়ে গেল কংগ্রেসের সমর্থনও।
অন্যদিকে, সিপিএমের ঘরোয়া রাজনীতিতে ইয়েচুরির বিরোধী হিসাবে পরিচিত প্রকাশ কারাট শিবির আবার একই ব্যক্তির হাতে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ও সাংসদ পদ রাখার প্রবল বিরোধী। এক্ষেত্রে সিপিএমের 'বাংলা ব্রিগেড' অবশ্য বর্তমান সাধারণ সম্পাদককে পুনর্বার সাংসদে পাঠানোর পক্ষেই বলে খবর দলীয় সূত্রে। ফলে দড়ি টানাটানি চলছিলই ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরে। কিন্তু দলীয় নিয়মের কথা উল্লেখ করে সরাসরি নিজে মুখেই সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে সেই দড়ি টানাটানি বন্ধ করলেন সীতারাম ইয়েচুরি, এমনটাই বলছে দলের একাংশ। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, সত্যিই কী বন্ধ হল এই 'লড়াই'? কারণ, ইয়েচুরির করা একটি মন্তব্য, তৃতীয়বারের জন্য সাংসদ না হওয়ার বিষয়ে দলের নিয়মের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, "যতদিন এই নিয়ম দলে থাকবে, আমি ততদিনই তা মেনে চলব"- এই মন্তব্যকেই তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাহলে কী কৌশলে দলীয় নিয়ম পরিবর্তন করার সম্ভবনার দিকেই ইঙ্গিত দিলেন সাধারণ সম্পাদক? প্রশ্ন আছে, কিন্তু আপাতত কোনও উত্তর নেই 'শৃঙ্খলাবদ্ধ' সিপিএমে।
আরও পড়ুন- দলের অন্দরে প্রশ্নের মুখে সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের 'লাইফস্টাইল'