স্ত্রী-সন্তান থাকতেও মন্দিরে লুকিয়ে বিয়ে, ৯ মাস পর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন শিক্ষক স্বামীর
নিজস্ব প্রতিবেদন : স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে সংসার রয়েছে, তারপরেও এক মহিলাকে মন্দিরে বিয়ে করে তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মৃতার নাম আইভি হাজরা। বয়স ৩৭ বছর। অভিযুক্ত স্বামীর নাম বিক্রম রায়। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাজোড়া গ্রামের হাজরা পাড়ায়। এই ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
অভিযোগ, স্ত্রী ও এক ছেলে থাকা সত্ত্বেও আইভি হাজরার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ান বিক্রম রায়। তারপর মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন আইভি হাজরাকে। বিয়ের পর থেকে আইভি বাপের বাড়িতেই থাকতেন। মঙ্গলবার বিকালে সেখানেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে খুন করেন স্বামী বিক্রম। অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে খুনের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইভি হাজরাকে কোপান বিক্রম রায়। তারপর প্রমাণ লোপাট করতে আগুন ধরিয়ে দেন দেহে।
জানা গিয়েছে, উখড়া গ্রামের সুভাষ পাড়ার বাসিন্দা বিক্রম খাঁন্দরার সরকারি প্রতিবন্ধী কেন্দ্রে শিক্ষকতা করেন। সেখানেই বিবাহিত বিক্রম বাবুর সঙ্গে আইভি দেবীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পর শেষে ৯ মাস আগে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে আইভি হাজরাকে বিয়ে করেন বিক্রম রায়। যদিও দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তিনি গোপন করে যান প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে। বিক্রমবাবু প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান উখরাতেই থাকেন। সেখানেই স্থানীয় একটি হাইস্কুলে পার্টটাইম শিক্ষকতা করেন বিক্রম বাবুর স্ত্রী।
এখন বিয়ের পর থেকে আইভি দেবী কাজোড়ায় বাপের বাড়িতে থাকতেন । বিক্রম বাবু প্রায়ই সেখানে আসা-যাওয়া করতেন । অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবার দুপুরেও বিক্রম বাবু কাজোড়ায় আইভি দেবীর বাড়ি যান। সেইসময় আইভি দেবী ছাড়াও বাড়িতে ছিলেন তাঁর ঠাকুমা মায়ারানি হাজরা। অভিযোগ, তখনই বিক্রম বাবু আইভি দেবীকে খুন করেন। বীভৎস এই হত্যালীলা দেখে নাতনিকে বাঁচাতে ছুটে যান আইভি হাজরার বৃদ্ধা ঠাকুমা। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতেই তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন বিক্রম রায়। তাতে গুরুতর চোট পান মায়ারানি দেবী।
এরপরই ধোঁয়া এবং পোড়া গন্ধ পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার মানুষ। খবর দেওয়া হয় অন্ডাল থানায়। খবর পেয়ে পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঠাকুমা মায়ারানি দাবির অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই উখরার বাড়ি থেকে অভিযুক্ত বিক্রম রায়কে পুলিস গ্রেফতার করে। পুলিস সূত্রে খবর, অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করেছে। যদিও স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিক্রম রায়ের প্রথম স্ত্রী। তবে অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি করেছেন মৃতার পরিবার। কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার প্রতিবেশীরাও।