Michael Madhusudan Dutt: নব্য বাংলাকাব্যের ভগীরথ 'দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন'!
অতিথিকে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা আবৃত্তি করতে বলা হত।
'অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান' বইতে নীরদ সি চৌধুরী একটা দারুণ অ্যানেকডোট তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর ছেলেবেলার কিশোরগঞ্জের স্মৃতিকথা প্রসঙ্গে বলেছেন, তাঁদের ছোটবেলায় শিক্ষিত বাঙালি পরিবারগুলিতে অতিথি অভ্যাগতের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বুদ্ধি পরীক্ষার একটা রীতি ছিল। তাঁদের মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা আবৃত্তি করতে বলা হত। পারলে সেই সংশ্লিষ্ট অতিথি সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে যেতেন।
1/6
শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বুদ্ধি পরীক্ষা
'অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান' বইতে নীরদ সি চৌধুরী একটা দারুণ অ্যানেকডোট তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর ছেলেবেলার কিশোরগঞ্জের স্মৃতিকথা প্রসঙ্গে বলেছেন, তাঁদের ছোটবেলায় শিক্ষিত বাঙালি পরিবারগুলিতে অতিথি অভ্যাগতের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বুদ্ধি পরীক্ষার একটা রীতি ছিল। তাঁদের মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতা আবৃত্তি করতে বলা হত। পারলে সেই সংশ্লিষ্ট অতিথি সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে যেতেন।
2/6
নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা
এহেন মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি। উনিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি এবং নাট্যকার ও প্রহসন রচয়িতা এই মধুসূদন। তাঁকে বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়। ঐতিহ্যের অনুবর্তিতা অমান্য করে নব্যরীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে তাকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহ।
photos
TRENDING NOW
3/6
সাহিত্যজীবনের দ্বিতীয় পর্ব
কী ভাবে সম্ভব হল এই বিদ্রোহ? আসলে ছোট থেকেই পাশ্চাত্য সাহিত্যের দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল মধুর। তিনি ইংরেজি ভাষায-সাহিত্য পাঠে মনোনিবেশ করলেন, পাশাপাশি ইংরেজিতে লেখালেখিতেও মনোনিবেশ করলেন। তবে সাহিত্যজীবনের দ্বিতীয় পর্বে মধুসূদন মাতৃভাষার প্রতি মনোযোগ দেন। এই পর্বে তিনি বাংলায় নাটক, প্রহসন ও কাব্য রচনা করেন।
4/6
মধুসূদন দত্ত নাট্যকার
মূলত কবি হলেও মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই বাংলা সাহিত্যে পদার্পণ করেন। রামনারায়ণ তর্করত্ন রচিত 'রত্নাবলী' নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে তিনি বাংলা নাট্যসাহিত্যে উপযুক্ত নাটকের অভাব বোধ করেন। এই অভাব পূরণের লক্ষ্য নিয়েই তিনি নাটক লেখায় আগ্রহী হয়েছিলেন। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি রচনা করেন 'শর্মিষ্ঠা' নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ সালে তিনি রচনা করেন দুটি প্রহসন: 'একেই কি বলে সভ্যতা' , 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ' এবং একটি পূর্ণাঙ্গ নাটক 'পদ্মাবতী' নাটক। এই পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।
5/6
মধুসূদনের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দ
মধুসূদনের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য। এ ছাড়া তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হল-- 'দ্য ক্যাপটিভ লেডি', 'শর্মিষ্ঠা', 'কৃষ্ণকুমারী নাটক', 'পদ্মাবতী নাটক', 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ', 'একেই কি বলে সভ্যতা', 'তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য', 'বীরাঙ্গনা কাব্য', 'ব্রজাঙ্গনা কাব্য', 'চতুর্দশপদী কবিতাবলী', 'হেকটর বধ' ইত্যাদি।
6/6
কপর্দকহীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ
১৮৭৩ সালের ২৯ জুন আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ মহাপ্রতিভাবান মহাকবি মধুসূদনের। তাঁকে কলকাতার সার্কুলার রোডে সমাধি দেওয়া হয়। মধুসূদন দত্তের সমাধিস্মারক এক স্মরণীয় বিষয়। কবিজীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমির প্রতি তাঁর সুগভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গিয়েছেন তাঁর অবিস্মরণীয় পংক্তিমালায়। তাঁর সমাধিস্থলে এই কবিতাটি উৎকীর্ণ: 'দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব/বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধি স্থলে/ (জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি/ বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত/ দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!/ যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে/ জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি/ রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী'!
photos