Monochrome: Dev-Suraiya প্রেম, চির অমর কাহিনি, আজও ভোলে নি বলিউড

Jul 18, 2021, 15:36 PM IST
1/13

নিজস্ব প্রতিবেদন- সুরাইয়া জামাল শেখ। ৪০ এবং ৫০ দশকের ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক গায়ক-অভিনেতা। মালিকা-এ-তবস্সুম নামে তাঁকে এক বিরল সম্মান দেওয়া হয়েছিল।  পঞ্জাবের গুজরানওয়ালায় একটি ছোট ফার্নিচার দোকানের মালিকের বাড়িতে জন্ম হয় এই অবিস্মরণীয় শিল্পীর। পরবর্তীকালে তাঁর পিতা স্থানান্তরিত হন লাহোরে।

2/13

সুরাইয়াকে এই উপমহাদেশের প্রথম মেলোডি কুইন বা সুরের রানি হিসাবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীকালে তাঁকে নূরজাহান নামেও ডাকা হতো।

3/13

ভারতীয় সিনেমার অন্যতম রোম্যান্টিক নায়কের সঙ্গে সুরাইয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়। অগণিত নারীহৃদয়ে দোলা জাগানো দেব আনন্দের মনে প্রথম যিনি দাগ কাটেন, তিনি সুরাইয়া। বলিউডের প্রেম পর্বের বিয়োগান্তক কাহিনির মধ্যে অন্যতম ছিল দেব আনন্দ-সুরাইয়ার প্রেমকাহিনি।

4/13

অভিনেতা হিসাবে এমন দাগ কেটেছিলেন যে, স্বয়ং জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন, 'ভারতীয় চলচ্চিত্রের বৃহত্তম নক্ষত্র সুরাইয়া'। পর্দায় এমনই ছিল তাঁর প্রভাব।

5/13

সুরাইয়া তখন মধ্যগগনে। চল্লিশের দশকের শেষের দিকে দেব আনন্দ সবে পা দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। নায়িকা-গায়িকা সুরাইয়ার সঙ্গে কাজের সুযোগ মিলল তাঁর। তাঁকে দেখেই ভাল লেগেছিল দেবের। কোনও তারকা সুলভ অ্যাটিটিউড নেই, যেন সাধারণ মাটির মানুষ। 

6/13

কাজের সুযোগ এল ১৯৪৮ সালে। মুক্তি পায় দেব আনন্দ-সুরাইয়ার ছবি 'বিদ্যা'।শোনা যায়, এই ছবির গান 'কিনারে কিনারে চলে যায়েঙ্গে'র শুটিংয়ের সময়ে নৌকা উল্টে যায়। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও জলে ঝাঁপিয়ে সুরাইয়াকে বাঁচিয়ে তোলেন দেব আনন্দ।

7/13

পরে এক স্মৃতিকথায় সুরাইয়া জানান, এই ঘটনার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে দেব আনন্দের সম্পর্কের গভীরতা শুরু হয়। গভীর প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে একবার পালানোরও চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ব্যর্থ হন। সেটা ১৯৪৯ সাল। পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন দেব-সুরাইয়া। তাঁদের সাহায্য করেছিলেন অভিনেতা দুর্গা খোটে। সেই সময়ে 'জিৎ' ছবির কাজ চলছে।  ছবির সহ পরিচালক সুরাইয়ার বাড়িতে পালানোর খবর দিলে, সুরাইয়ার দিদা এসে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

8/13

এরমধ্যেই ১৯৫০ সালে ভারতে আসেন গ্রেগরি পেক। মুম্বইয়ে এসে একদিন প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হলিউড তারকা সময় কাটান সুরাইয়ার সঙ্গে। সেই ছবি প্রকাশিত হওয়া মাত্র গ্রেগরি পেকের সঙ্গে সুরাইয়ার সম্পর্ক নিয়ে নতুন খবর তৈরি হতে থাকে। সুরাইয়া প্রকাশ্যে বলেন যে, 'সেই রাত্রে আমি ঘুমোতে পারি নি'। প্রায় দু মাস ধরে এই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে।

9/13

ঠিক এমন সময় থেকেই দেব আনন্দ ও গ্রেগরি পেকের সঙ্গে একটা তুলনা শুরু হয়ে যায়। তাকে মান্যতা দিয়ে যান স্বয়ং গ্রেগরি পেক। তিনি বলেন, তাঁর ও দেবের অভিনয়ের স্কুলিংটাও প্রায় একই। সেই থেকেই দেবকে 'গ্রেগরি পেক অফ ইন্ডিয়া' বলা হতে থাকে। এই যোগসূত্রের মূলে কিন্তু ছিলেন সুরাইয়া। দেবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দুবছর গোপনে রাখার চেষ্টা করেছিলেন সুরাইয়া। যতবারই সম্পর্কের বাঁধনে যুক্ত হতে চেয়েছেন, ধর্মের কারণে তা হতে পারেনি সুরাইয়ার বাড়ির অমতে।

10/13

এদিকে পরপর ছবি রিলিজ হয়ে চলেছে। ১৯৫০ সালে বের হল 'নীলি'। অভিনয়ে আবরও দেব-সুরাইয়া। সোনা যায়, সেই সেটেও সুরাইয়াকে আরও একবার বিয়ের প্রস্তাব দেন দেব। সামাজিকতার বাঁধনে পড়ে তাতে রাজি হন নি সুরাইয়া। শোনা যায়, সর্বসমক্ষে তাঁকে চড় মারেন দেব আনন্দ। বলেন, সুরাইয়া ভীতু। পরে অবশ্য অনুতপ্ত দেব আনন্দ বারবার ক্ষমা চান সুরাইয়ার কাছে।

11/13

পরের বছর সুরাইয়ার অনামিকায় একটি হীরের আংটি পরিয়ে দেন দেব আনন্দ। সুরাইয়াও ভালোবেসে সেই আংটি পরেছিলেন। আবারও মাঝে এসে জাঁড়ান সুরাইয়া দিদিমা। তিনি নাতনি হাত থেকে দামি হীরের আংটি খুলে ছুড়ে ফেলে দেন আরব সাগরে।

12/13

এরপর দুজনের দেখা সাক্ষাৎও বন্ধ হয়ে যায়। টেলিফোনেও কথা বলতে পারতেন না তাঁরা। দেব আনন্দ-সুরাইয়ার একসঙ্গে আর ছবিতেও সই করেন নি। ১৯৫১ সালে দেব-সুরাইয়া অভিনীত শেষ ছবি 'সনম' মুক্তি পায়।

13/13

দেব আনন্দের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সুরাইয়াও সিনেমায় অভিনয় কমিয়ে দেন। ১৯৬৩ সালে তাঁর শেষ ছবি 'রুস্তম সোহরাব' মুক্তি পায়। এরপর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করেন নি সুরাইয়া। দেব আনন্দ বিয়ে করলেও, সুরাইয়া বাকি জীবনটা একাই কাটিয়ে দেন। জীবনের চার বছরের প্রেমের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি অবলম্বন করেই কাটিয়ে দেন জীবন। ২০০৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয়ে সুরাইয়ার।