নতুন `দত্তা`য় বিজয়া ঋতুপর্ণা, দেখুন ছবির শ্যুটিং সেটের নানান মুহূর্ত...
১৯৫১ সালে প্রথমবার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'দত্তা'র চলচ্চিত্রায়ন হয়। পরবর্তীকালে ১৯৭৬এ। ৫১য় সুনন্দা বন্দ্যোপাধ্যায় পরে পরিচালক অজয় করের 'দত্তা'য় বিজয়া হয়ে ওঠেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন।
ফের একবার নির্মল চক্রবর্তীর পরিচালনায় পর্দায় উঠে আসতে চলেছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'দত্তা'।
২০২০ সালের এই চলচ্চিত্রায়নে বিজয়ার ভূমিকায় ধরা দেবেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
বেলগাছিয়া রাজবাড়ি সেজে উঠেছে ১০০ বছরের পুরনো সেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্য়ায়ের 'দত্তা'র প্রেক্ষাপটে। যেখানে নতুন করে সাজানো হচ্ছে বিজয়া নরেন ও বিলাসের সেই ত্রিকোণ প্রেমের গল্প।
এই ছবিতে বিলাস হচ্ছেন সাহেব চট্টোপাধ্যায়। যে চরিত্রে এর আগে দেখা গিয়েছিল শমিত ভঞ্জকে।
নরেনের ভূমিকায় দেখা যাবে জয় সেনগুপ্তকে। ১৯৭৬-এর দত্তায় যে চরিত্রে ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
দত্তায় বিলাসের বাবা রাসবিহারির চরিত্রে দেখা যাবে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীকে। অজয় করের 'দত্তা'য় যে চরিত্রে দেখা গিয়েছিল উৎপল দত্তের মতো অভিনেতাকে।
'দত্তা' নিয়ে Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, ''অনেক বছর পর ফের দত্তা হচ্ছে। এটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সাহিত্য সবসময় আমাদের সমৃদ্ধ করে। এর জন্য নির্মলদাকে ধন্যবাদ। আর বিজয়া চরিত্রে কাজ করতে পেরে আমি খুব খুশি''
১৯১৮ সালে লেখা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস 'দত্তা' অবলম্বনেই কি ছবিটি তৈরি হচ্ছে, নাকি চিত্রনাট্যে কোথাও কোনও বদল ঘটেছে?
এবিষয়ে পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর সঙ্গে Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কম-এর তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ''না, কোনও বদল হয়নি, এক্কেবারেই উপন্যাস মেনেই নতুন করে ছবিটি করছি। ছবির শ্যুটিং হয়েছে বোলপুরের বেশকিছু এলাকায়, বেলগাছিয়া রাজবাড়িতেও ছবির অনেকটা অংশের শ্যুটিং হয়েছে। তবে কিছুটা শ্যুটিং বাকি রয়েছে, যেটি কিছুটা বেলগাছিয়া রাজবাড়িতে আর কিছুটা বানতলায় হবে।''
১৯৭৬-এ অজয় করের মতো পরিচালক 'দত্তা' বানিয়েছিলেন, আর ২০২০-তে আপনি ফের বানাচ্ছেন, অনেকেই হয়ত সুচিত্রা সেন অভিনীত ছবির সঙ্গে এই 'দত্তা' তুলনা টানবেন, সেবিষয়ে কী বলবেন?
দেখো, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ যা লিখে গিয়েছেন তা চিরন্তন? তাঁদের লেখা নিয়ে আগেও ছবি হয়েছে, এখনও হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। এনিয়ে তুলনার কিছু নেই। হ্যাঁ, অজয় কর একজন বিখ্যাত পরিচালক। আর আমার এটা প্রথম ছবি। তবে উনি ওনার মত করে 'দত্তা' বানিয়েছিলেন, আমি আমার মত করে গল্পটি তুলে ধরার চেষ্টা করব। অজয় করের 'দত্তা'য় সুচিত্রা সেন অভিনয় করেছিলেন। তবে এখন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছাড়া বিজয়া চরিত্রটিতে আর কাউকে আমি ভাবতে পারি না।
পরিচালক নির্মল চক্রবর্তী বলেন, আর ১৯৭৬-এ যখন দত্তা হয়েছিল সেটা ছিল শরৎচন্দ্রের জন্ম শতবর্ষ। আর ২০১৯-এ আমি যখন 'দত্তা'র কাজ শুরু করলাম সেটা ছিল উপন্যাসের ১০০ বছর। ওই বছরই ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তবে সম্ভব হল না।
আচ্ছা, এর আগে বিলাসের চরিত্রে ফিরদৌস অভিনয় করছেন বলে শুনেছিলাম, ফিরদৌসের অংশগুলি তাহলে নতুন করে শ্যুট করতে হচ্ছে?
হ্যাঁ, তা তো হচ্ছেই। ফিরদৌসের তো আর এখন এদেশে এসে শ্যুটিং করা সম্ভব নয়। তবুও আমি ওর জন্য ৬ মাস শ্যুটিং পিছিয়ে ছিলাম। বেশকিছু অংশের শ্যুটিং ফিরদৌস করেও ফেলেছিল। পরে সাহেবকে নিয়ে শ্যুটিং শুরু করতে আরও ৪ মাস লেগে গেল। ফিরদৌস বিলাসের ৪-৫দৃশ্য শ্যুট করেছিলাম। তার ৩টি দৃশ্য আবার নতুন করে সাহেবকে দিয়ে শ্যুট করানো হয়েছে।
যেহেতু ছবিটি দত্তা, তাই এই ছবিতে কস্টিউম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, শুনেছি সাবর্ণী দাস আপনার ছবির কস্টিউম করছেন?
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছ। ঋতুপর্ণাই আমাকে প্রথমে বলেছিল কস্টিউমে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সাবর্ণীদির সঙ্গে কথা বলো। আমি বললাম, উনি রাজিও হয়ে গেলেন। আমি তো ভাবিই নি যে ওনাকে পাব। সাবর্ণী দাস এখন অপর্ণা সেন, সৃজিতের ছবির কস্টিউম করেন, আর আমার এটা প্রথম ছবি। সাবর্ণীদি এক্কেবারে ছবির প্রথম থেকে খুব সাহায্য করেছেন।
সাংবাদিকতা থেকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহযোগী, তারপর পরিচালনা, কেমন লাগছে?
আসলে ঋতুপর্ণা আমার পারিবারিক বন্ধু। অনেকদিন ধরেই ছবি বানানোর কথা ভেবেছিলাম। এখন অনেক থ্রিলার নিয়ে ছবি হচ্ছে। তবে এধরনের ছবি সেভাবে হচ্ছে না। শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে মানুষের উৎসাহ সবসময়ের। সেকথা মাথায় রেখেই 'দত্তা' করার কথা ভাবি। আর বিজয়ার জন্য ঋতু তো পারফেক্ট ছিলই।