Tarun Majumdar Death: বাংলা সিনেমার মণিমুক্তো যে ছয় তরুণ-ছবি

এই মুহূর্তে যাঁরা তরুণ মজুমদারের ছবি নতুন করে দেখতে চাইবেন, তাঁর ষাট বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারের বিপুল কাজের মধ্যে থেকে কোনগুলি দেখবেন-- এ নিয়ে যদি ধন্দে পড়েন, তা হলে তাঁদের আমরা একটা সূত্র ধরিয়ে দেওয়ার অক্ষম প্রয়াস মাত্র করতে পারি।

| Jul 04, 2022, 20:08 PM IST

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:  তরুণ মজুমদারের প্রথম ছবি ধরতে হবে 'আলোর পিপাসা' (১৯৬৫)। ১৯৬৫ সাল থেকেই আসলে 'যাত্রিক' থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীন ভাবে কাজ শুরু করেন তিনি। তবে তরুণ মজুমদারের প্রথম ছবি হিসেবে মানুষ উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত 'চাওয়া পাওয়া' (১৯৫৯)-কেও ধরেন। কেননা 'যাত্রিক'-এর মুখ ছিলেন তরুণ মজুমদার।। 'যাত্রিকে'র ব্যানারেই তাঁর প্রথম জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি, ছবিটি ছিল 'কাঁচের স্বর্গ' (১৯৬২)। কিন্তু সালতামামি বা ছবির সংখ্যা বা পুরস্কার দিয়ে ধরা যায় না তরুণ মজুমদারের মতো এক স্রষ্টাকে। তবুও এই মুহূর্তে যাঁরা আবার তরুণ মজুমদারের ছবি নতুন করে দেখতে চাইবেন, তাঁর ষাট বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারের বিপুল কাজের মধ্যে থেকে কোনগুলি দেখবেন, যদি ভাবেন, তা হলে তাঁদের আমরা একটা সূত্র ধরিয়ে দেওয়ার অক্ষম প্রয়াস মাত্র করতে পারি। এর মধ্যে মোটেই রেটিং করার কোনও সচেতন প্রয়াস নেই। 

আমরা এখানে তরুণ মজুমদারের ছ'টি ছবি বেছে নিচ্ছি। সেগুলি হল 'পলাতক' (১৯৬৩), 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' (১৯৭৩), 'ফুলেশ্বরী' (১৯৭৪), 'সংসার সীমান্তে' (১৯৭৫), 'গণদেবতা' (১৯৭৮), 'দাদার কীর্তি' (১৯৮০)। আমরা ছবিগুলির খুব সংক্ষিপ্ত একটা পরিচয় শুধু দিতে চেষ্টা করব এখানে।          

(Disclaimer: 'জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল' তরুণ মজুমদারের সারাজীবনের কাজ নিয়ে এখানে নিজের মতো করে কোনও রেটিং করছে না। এটি আসলে একজন কৃতী ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রকারের বিপুল কাজের মধ্য়ে থেকে কয়েকটি নিদর্শন তুলে নেওয়া।)  

1/6

'যাত্রিক' ব্যানারে শুরু

তরুণ মজুমদার 'যাত্রিক' ব্যানারে কাজ শুরু করেন। ১৯৫৯ সালের 'চাওয়া-পাওয়া' দিয়ে। স্বাধীন ভাবে, মানে, নিজের নামে কাজ শুরু করেন ১৯৬৫ সাল নাগাদ। কিন্তু 'যাত্রিক' ব্যানারে কাজ করলেও, 'পলাতক' (১৯৬৩) যেন তরুণ মজুমদারেরই ছবি। এ ছবির অঙ্গে অঙ্গে সেই ট্রেডমার্ক 'তারুণ্য'। ফলে, তরুণ মজুমদারের ছবি বাছতে বসে পলাতক-কে না বেছে পারা যায় না। এ ছবিটিতে অসাধারণ অভিনয় করে অনুপকুমার চিরদিনের জন্য বাঙালির মনের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছেন। এক ঘর-পালানো উদাসী বাউন্ডুলে তরুণের চরিত্রে অনুপের স্বতঃস্ফূরত অভিনয় আজও ভোলেনি বাঙালি। 

2/6

মিষ্টিমধুর প্রেমের কাহিনি

সারা জীবন ধরে নানা জঁরের ছবি করেছেন তরুণ মজুমদার। এর মধ্যে হাস্যরসাত্মক ছবি হিসেবে 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' (১৯৭৩) খুবই বিশিষ্ট। ছবিটি দারুণ বক্স অফিস পায়। মিষ্টিমধুর প্রেমের কাহিনি-নির্ভর এই ছবিতে ঘটনার ঘনঘটা, গল্পের মসৃণ গতি একটা অভূতপূর্ব আমেজ তৈরি করে দিয়েছিল। হলে বা দূরদর্শনে এ ছবি দেখতে দেখতে বাঙালি হেসে গড়িয়ে পড়েছে যে কতবার! 

3/6

তরুণ মজুমদারের প্রিয় ছবি

'ফুলেশ্বরী' (১৯৭৪) স্বয়ং তরুণ মজুমদারের প্রিয় ছবি। ফলে এ ছবির প্রতি দর্শকের একটা আলাদা আকর্ষণ তো থাকবেই। আছেও। গানে গানে মুগ্ধমাতাল এই ছবিটি বাঙালিকে হয়তো চিরকাল তাড়া করবে। যেমন গল্প, তেমন অভিনয়, তেমন গান-- বাংলা ছবির আসরে এক বিশিষ্ট চরিত্র নিয়ে এ ছবি অনায়াসে টলিউডের 'হল অফ ফেমে'। 

4/6

মুগ্ধ উত্তমকুমার

শোনা যায়, এ ছবি দেখে মুগ্ধ উত্তমকুমার নাকি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন। প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর 'পুলু'কে। 'সংসার সীমান্তে' (১৯৭৫) ছবিটিতে দারুণ চ্যালেঞ্জিং এক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র। তরুণ মজুমদারের ফিল্মোগ্রাফিরও খুব বিশিষ্ট এক ছবি এই 'সংসার সীমান্তে'।   

5/6

বিশিষ্ট উপন্যাস

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি বিশিষ্ট উপন্যাস 'গণদেবতা'। এ কাহিনিকে যে রুপোলি পর্দায় ধরা যায়, সেটাই হয়তো তরুণ মজুমদার না দেখালে বিশ্বাস করা যেত না। তরুণ মজুমদারের 'গণদেবতা' (১৯৭৮) বাংলা ছবির ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন। এই ছবি তাঁকে পুরস্কারও এনে দিয়েছিল। জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছিল 'বেস্ট পপুলার ফিল্ম প্রোভাইডিং হোলসাম এন্টারটেনমেন্ট' হিসেবে। 

6/6

'দাদার কীর্তি'

'দাদার কীর্তি' (১৯৮০) নানা দিক থেকেই খুব মনে রাখার মতো ছবি। একে তো সময়টা ১৯৮০ সাল। তার উপর এতদিন যে-ধরনের ছবি তরুণ মজুমদার করতেন, তার থেকে যেন একটু সরে এলেন। এ ছবিতে তাপস পালের 'ডেবিউ'। যে-তাপস পরবর্তী কালে বাংলা ছবির অন্যতম 'স্টার' হিসেবে উঠে আসবেন। 'কেদার' তাপস এই ছবিতে বাঙালির মনে চিরকালের জন্য জায়গা করে নিলেন।