সময়ের সঙ্গে লড়ে মোহালিতে সিরিজ জয় ভারতের
মোহালিতে সিরিজ জয়ের লড়াইটা একটা সময় হয়ে উঠেছিল সময়ের সঙ্গে। সেই সময়কে হারিয়ে সাময়িক অস্বস্তি কাটিয়ে মোহালি টেস্ট বের করে নিল ভারত। গোটা একদিন বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া ম্যাচে ভারত জিতল একেবারে শেষ প্রহরে। সেই সঙ্গে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেস্ট সিরিজ জিতে গেল ভারত। সেই সঙ্গে মোহালিতে মাইকেল ক্লার্কের দলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের বৃত্ত আঁকার প্রক্রিয়াটাও শেষ ল্যাপে গিয়ে পৌঁছল। সিরিজ ফল এখন ধোনিদের পক্ষে ৩-০। আগামী শুক্রবার দিল্লিতে শুরু হতে চলা সিরিজের শেষ টেস্ট জিতলে অসিদের হোয়াইটওয়াশ করে ফেলবেন ধোনিরা।
অস্ট্রেলিয়া-- ৪০৮, ২২৩
ভারত-- ৪৯৯, ১৩৬/৪
ভারত ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচের সেরা-শিখর ধাওয়ান
মোহালিতে সিরিজ জয়ের লড়াইটা একটা সময় হয়ে উঠেছিল সময়ের সঙ্গে। সেই সময়কে হারিয়ে সাময়িক অস্বস্তি কাটিয়ে মোহালি টেস্ট বের করে নিল ভারত। গোটা একদিন বৃষ্টিতে ধুয়ে যাওয়া ম্যাচে ভারত জিতল একেবারে শেষ প্রহরে। সেই সঙ্গে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেস্ট সিরিজ জিতে গেল ভারত। সেই সঙ্গে মোহালিতে মাইকেল ক্লার্কের দলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের বৃত্ত আঁকার প্রক্রিয়াটাও শেষ ল্যাপে গিয়ে পৌঁছল। সিরিজ ফল এখন ধোনিদের পক্ষে ৩-০। আগামী শুক্রবার দিল্লিতে শুরু হতে চলা সিরিজের শেষ টেস্ট জিতলে অসিদের হোয়াইটওয়াশ করে ফেলবেন ধোনিরা।
মোহালিতে ক্লার্করা চতুর্থ দিনেই কার্যত হেরে বসেছিলেন। ম্যাচের শেষদিনটা ধোনিদের লড়তে হল ঘড়ির সঙ্গে। দিনের শুরুটা দারুণ করেও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করতে কিছুটা দেরি হয়ে গেছিল। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৩৩ রান। হাতে দশটা উইকেট। সঙ্গে সময়ও ছিল। অস্বস্তিতে বলতে চোটের কারণে শিখর ধাওয়ানের ওপেনে না নামাটা। কিন্তু শেষ অবধি হঠাত্ই ওয়ান ডে ম্যাচের মতো হয়ে গেল আবহটা। চাপের সচিন তেন্ডুলকরের রান আউটটা হঠাত্ একরাশ প্রশ্ন নিয়ে এসেছিল। কিন্তু সেই মিস্টার কুল ধোনি সব আশঙ্কাকে দূরে সরিয়ে প্রত্যাশিত জয়টা এনে দিলেন।
পরপর তিন বলে তিনটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রাজকীয় কায়দায় ম্যাচ ও সিরিজ জেতালেন মাহি। সেই সঙ্গে বার্তা দিয়ে রাখলেন হোয়াইটওয়াশ করতে তাঁরা এখন বদ্ধপরিকর। অন্যদিকে শেষ দশটা টেস্টে আটটাতে হেরে অজিরা তাঁদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সঙ্কটে পড়ার সেরা উদাহরণ দিয়ে রাখল। প্রতিভার আকাল, বিতর্ক বিদ্ধ অজিদের পেয়ে ধোনিরা এখন বাঘ। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোয়াইটওয়াশের প্রতিশোধের খুব কাছে চলে গেল ভারত।
এদিন শুরু থেকেই স্পিনের সামনে ফের আত্মসমর্পণ শুরু হয় অজি ব্যাটসম্যানদের। এবং এদিনও রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হল ক্লার্ক। এই নিয়ে পাঁচ বার ক্লার্ককে আউট করলেন জাদেজা। দিনের শুরুতেই আউট হন নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামা লিয়ঁ। হিউজেস ও হ্যাডিন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন। পরের দিকে মিচেল স্টার্কও সামান্য লড়াই চালান। কিন্তু ২২৩ রানে দাঁড়ি পড়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে। তিনটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুটি করে উইকেট গিয়েছে ওঝা ও অশ্বিনের ঝুলিতে।
রথম ইনিংসে বিস্ময় সৃষ্টিকারী স্টার্ক এই ইনিংসেও কিছুটা প্রতিরোধ তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর সৌজন্যেই ১৪৩ রানে আটটি উইকেট খুইয়েও ২০০ রানের চৌকাঠ পেড়িয়ে গেলেন ব্যাগিগ্রিন টুপির মালিকরা। বিশাল কোনও অঘটন না ঘটলে একক আধিপত্য বজায় রেখে অসিদের হোয়াটওয়াশ করার নিশানটা পাকাপোক্তভাবে মোহালির ২২গজে পুঁতে আসতে চলেছেন ভারতীয় দলের ১১জন ক্রিকেটিয় যোদ্ধা।
প্রথম ইনিংসের মত এই ইনিংসেও অসিদের তিনটি উইকেট তুলে নিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। তিনটি উইকেট পেয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমারও। দুটি করে উইকেট দখল করেছেন ওঝা ও অস্বিন।
গতকালই প্রথম ইনিংসে ৯১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। মোহালিতে চতুর্থ দিনের পিচে অসিদের ধাক্কা দিলেন কোনও স্পিনার নন, এক পেসার। ভূবনেশ্বর কুমার। ভূবনেশ্বরের স্বপ্নের স্পেলে অসিরা হারাল ৫৫ রানের মধ্যে হারিয়েছিল তিন উইকেট। ভূবনেশ্বরের সুইংয়ের দিশা করে উঠতে না পেরে ফিরে গেছেন ওয়ার্নার (২) , কোয়ান (৮), স্মিথ (৫)।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবোর্ড
অস্ট্রেলিয়া-৪০৮, ২২৩
ভারত-৪৯৯, ১৩৬/৪ (৩৩.৩ওভার)
প্রথম ইনিংস-
অস্ট্রেলিয়া (৪০৮- অল আউট)
এড কোয়ান- ৮৬
ডেভিড ওয়ার্নার- ৭১
স্টিভেন স্মিথ- ৯২
মিচেল স্টার্ক-৯৯
ভারত (৪৯৯- অল আউট)
মুরলি বিজয়- ১৫৩
শেখর ধাওয়ান-১৮৭
বিরাট কোহলি- ৬৭
সচিন তেন্ডুলকার- ৩৭
দ্বিতীয় ইনিংস-
অস্ট্রেলিয়া- (২২৩ অল আউট)
ফিলিপ হগস- ৬৯
মিচেল স্টার্ক- ৩৫
ব্রাট হেডিন- ৩০
ভারত (১৩৬/৪)
বিরাট কোহলি- ৩৪ রান
চেতেশ্বর পুজারা- ২৮ রান
মুরলি বিজয়- ২৬ রান
সচিন তেন্ডুলকার- ২১ রান
ম্যাচের সেরা- শেখর ধাওয়ান
সিরিজ- ৪ ম্যাচের সিরিজে ভারত এগিয়ে ৩-০